ডিফেন্ডারের ছদ্মবেশে প্রতিপক্ষের প্লে–মেকার তকমা অনেক আগেই পেয়ে গেছেন হ্যারি ম্যাগুয়ার। একের পর এক শিশুসুলভ ভুলে ভার্চুয়াল জগতেও বনে গেছেন হাসির পাত্র। তবু কী করে যেন তিনিই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নেতৃত্বে রয়ে গেছেন!

গোলকিপিংয়ে আবার এক কাঠি সরেস দাভিদ দে হেয়া। প্রায় এক যুগ হলো ইউনাইটেডের গোলবারের নিচে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু জেতানোর চেয়ে দলকে হারানোর মতো পরিস্থিতিতেই ফেলেছেন বেশি।

সহ্য শক্তি হারানো সমর্থকদের চাপে এ মৌসুম শেষে ম্যাগুয়ার–দে হেয়াকে খুব সম্ভবত ছেড়ে দেবে ইউনাইটেড। এর আগেই ক্লাবের সর্বনাশ করে ছাড়লেন তাঁরা। দুজনের শিশুতোষ ভুলে সেভিয়ার কাছে ৩–০ ব্যবধানে উড়ে গেল রেড ডেভিলরা। দুই লেগ মিলিয়ে ৫–২ অগ্রগামিতায় সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল স্প্যানিশ ক্লাবটি।

ওল্ড ট্রাফোর্ডে গত সপ্তাহে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল ইউনাইটেড। শেষ দিকে জোড়া আত্মঘাতী গোলে ২–২ সমতা নিয়ে ফেরে সেভিয়া। আত্মঘাতী গোল দুটির শেষটি ছিল বদলি নামা ম্যাগুয়ারের।

সেদিন যেখানে শেষ করেছিলেন, সেভিয়ার মাঠ রামোন সানচেজ পিজহুয়ান স্টেডিয়ামে আজ যেন সেখান থেকেই শুরু করেছেন ম্যাগুয়ার। এত ভুলের পরও তাঁর হাতেই অধিনায়কের বাহুবন্ধনী তুলে দিয়েছিলেন এরিক টেন হাগ। ইউনাইটেড কোচের তা ছাড়া আর উপায়ও ছিল না।

নিষেধাজ্ঞার কারণে এ ম্যাচে খেলা হয়নি দলের প্রাণভোমরা ব্রুনো ফার্নান্দেজের। নাটকীয়কতায় ঠাসা সে ম্যাচেই চোটে পড়ে মৌসুমই শেষ হয়ে গেছে আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্তিনেজের। চেনা মঞ্চে তাই কিছুটা এগিয়ে থেকেই খেলতে নেমেছিল সেভিয়া। ঐতিহাসিকভাবেও তারাই তো এগিয়ে!

রিয়াল মাদ্রিদ যদি হয় চ্যাম্পিয়নস লিগের রাজা, তাহলে সেভিয়া তর্কাতীতভাবে ইউরোপা লিগের। রেকর্ড ৬বার ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের দ্বিতীয় শীর্ষ প্রতিযোগিতার ট্রফি ছুঁয়ে দেখেছে তারা। ‘লাকি নম্বর সেভেন’ থেকে এখন আর ৩ ধাপ দূরে তারা। অথচ এ মৌসুমে কোনো ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় সুবিধা করতে পারছে না সেভিয়া। লা লিগায় অবনমন এড়াতে লড়তে থাকা ক্লাবটি মাত্র ৫ মাসের ব্যবধানে ছাঁটাই করেছে দুই হাই–প্রোফাইল কোচ হুলেন লোপেতেগি ও হোর্হে সাম্পাওলিকে। অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব দিয়েছে হোসে লুইস মেন্দিলিবারকে। অখ্যাত এই কোচই টেন হাগের সব কৌশল ‘অকেজো’ করে ছাড়লেন।