নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২২ জুন ২০২৫ | প্রিন্ট | 329 বার পঠিত

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের আশা পূরণ হবে-এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, গত ১০ মাসে বাংলাদেশে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তাতে আমরা একটু সন্দিহান হয়ে পড়েছিলাম যে, শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে। যখন আমরা দেখলাম, এ আন্দোলনের প্রধান দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস একটি সভা (লন্ডন বৈঠক) করলেন; আমরা অত্যন্ত অনুপ্রাণিত হয়েছি, আশ্বস্ত হয়েছি। সভায় তারা কতগুলো বিষয়ে একমত হলেন। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের সবার সামনে একটি আশা এনে দিয়েছে। আশা রাখছি সামনের ফেব্রুয়ারি মাসে একটি নির্বাচন হবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের আশাগুলো পূরণের সুযোগ হবে।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
সুইস ব্যাংকে টাকা পড়ে আছে-গণমাধ্যমের এমন সংবাদের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, সুইস ব্যাংকে অনেক টাকা জমা হয়েছে, যা দেখে মন খারাপ হয়েছে। ফ্যাসিস্ট আমলে কী পরিমাণ টাকা তারা লুট করেছে তা প্রমাণ হয়ে গেছে। ফ্যাসিস্টরা বিগত ১৫ বছরে নির্বাচনব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় কাঠামো, আমলাতন্ত্র সব ধ্বংস করে দিয়েছে। সেগুলোকে ঠিক জায়গায় নিয়ে যেতে কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে তারা আশা জাগিয়েছেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ভালো কাজ করছে। নিঃসন্দেহে তারা ইতোমধ্যে অনেক কাজ করেছেন এবং ভালো কাজ করছেন, আমাদের পথ দেখাচ্ছেন। আমরা আশা করব, যেসব রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলাম, সবাই মিলে তাদের সহযোগিতা করব।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন সংস্কারকাজ এগিয়ে চলেছে, কতগুলো বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, কতগুলো বিষয়ে একমত হচ্ছে না। যতগুলো বিষয়ে একমত হব, সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব। আর যেগুলোতে একমত হওয়া যাচ্ছে না, সেগুলো নিয়ে নির্বাচনের পর সংসদে আলোচনা করব। শুধু কথা বা আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের এই বিশাল কাজ সম্ভব হয় না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের সংগ্রাম, জনগণের সংগ্রাম প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে। জনগণকে আমরা স্বপ্ন দেখাতে সক্ষম হয়েছি যে, বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করব। জনগণের কাছে আমাদের এটাই ছিল প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি পালনে আমরা আগামীতে কাজ করে যাব। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে। যাতে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক আমূল পরিবর্তন আনা যায়। আজ রোববার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রত্যাশা তাদের প্রতি অনেক বেশি। আমরা প্রত্যাশা করি এই তরুণরা, যারা বিগত আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন; যাদের সহকর্মীরা, কমরেডরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি তাদের নেতৃত্ব আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের বিভিন্ন আন্দোলনের প্রেক্ষাপটের কথা উল্লেখ করে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এবার অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করছে আমরা সফল হবো কিনা। ’৯০-এর গণ-আন্দোলনের পর একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। চারটি নির্বাচনকে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলা চলে। তাতে কী গুণগত পরিবর্তন হলো? আবার তো প্রাণ ও রক্ত দিতে হলো। জুলাইয়ের অভ্যুত্থান হলো। আমরা কি এবার সফল হবো। এ সময় সবাই বলেন ‘সফল হব’। তিনি বলেন, সফল হতে হলে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা ১৫ বছর লুটপাটের পরেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো কিন্তু দাঁড়িয়ে আছে। ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে যে পরিবর্তন আসবে, বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়াবে। এই অঞ্চলে যত রাষ্ট্র আছে সবাইকে আমরা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিকভাবে ছাড়িয়ে যাব।
Posted ৩:৩৩ এএম | রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।