| শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০২২ | প্রিন্ট | 116 বার পঠিত
দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘হাওয়া’র বিরুদ্ধে মামলা এবং ‘শনিবার বিকেল’ মুভির মুক্তি আটকে রাখার ঘটনায় সরব হলেন দেশের নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা। নিজেদের কাঁটাতারে বন্দি করে চাইলেন গল্প বলার স্বাধীনতা। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘গল্প বলার স্বাধীনতা চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তারা। প্রতিবাদ হিসেবে নিজেদের সামনে রাখেন কাঁটাতারের বেড়া! তাদের দাবি, সুষ্ঠু নীতিমালা ও সুন্দর পরিবেশ পেলে দেশের চলচ্চিত্রশিল্প আগামী পাঁচ বছরে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ কোটি টাকার বাজার তৈরি করতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘হাওয়া’র নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন বলেন, ‘সিনেমায় একটা অবাস্তব দৃশ্যকে বাস্তব করে দেখানোর চেষ্টা করেছি। সাময়িক সময়ের জন্য সেই পাখিটিকে খাঁচায় বন্দি করা হয়েছে, আবার সেটাকে অবমুক্ত করেছি। কিন্তু পাখিটিকে অবমুক্ত করার পর এখন দেখছি আমি নিজেই বন্দি হয়ে গেছি। নতুন সিনেমা নিয়ে যখন ভাবতে যাই, প্রথম মাথায় আসে এটা করা যাবে না, ওটা বলা যাবে না।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের সমালোচনা করে অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, ‘বন উজাড় হচ্ছে, কাঁটাবনে আমরা পশুপাখি আটকে রাখছি। সেখানে বন অধিদপ্তর কোথায়? সিনেমায় এটা দেখানো যাবে না, ওটা করা যাবে না এত শর্ত নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করা কি সম্ভব? এভাবে তো হয় না। এভাবে সিনেমা নির্মাণ করা যায় না। গল্প বলা যায় না। স্বাধীন বাংলাদেশে এত কালা-কানুন কেন?’
সভা থেকে হাওয়া নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে বন বিভাগের মামলা, শনিবার বিকেলের সেন্সর ছাড়পত্র না দেওয়াসহ পাঁচটি দাবি তোলা হয়।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফ এবং ‘হাসিনা এ ডটারস টেল’ চলচ্চিত্রের নির্মাতা পিপলু আর খান দাবিনামা তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো
১. ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
২. ‘শনিবার বিকেলে’ চলচ্চিত্র কেন সেন্সর ছাড়পত্র পেল না, তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে।
৩. বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড বাতিল করতে হবে এবং প্রস্তাবিত চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইনের ক্ষেত্রে সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে একটি আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৪. প্রস্তাবিত ওটিটি নীতিমালার ক্ষেত্রে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে একটি আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ওটিটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
৫. চলচ্চিত্র বা কনটেন্টবিষয়ক কোনো মামলা করার আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের (যেমন খসড়া ওটিটি নীতিমালায় প্ল্যাটফর্মগুলোতে আলাদা কমিশন বোর্ড তৈরির প্রস্তাব আছে, এ জাতীয় কোনো কর্র্তৃপক্ষের) সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এসব দাবিতে শিগগিরই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সেপ্টেম্বর মাসে এ বিষয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করা হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা তারিক আনাম খান, নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, অভিনেতা জাহিদ হাসান, নির্মাতা অমিতাভ রেজা, কামার আহমেদ সাইমন, অভিনেতা আফরান নিশো প্রমুখ। এছাড়া সাজু খাদেম, ইরেশ যাকের, জাকিয়া বারী মম, আফসানা মিমি, আজমেরী হক বাঁধন, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, নুরুল আলম আতিকসহ আরও অনেকে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
Posted ২:৪৯ এএম | শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০২২
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।