| বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 112 বার পঠিত
আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল। গত কয়েক দিন ধরে সেখানে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সেনাদের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। আর্মেনিয়া জানিয়েছে, লড়াইয়ে তাদের ৪৯ জন সেনা নিহত হয়েছে। তবে আজারবাইজানের পক্ষ থেকে এখনো হতাহতের সংখ্যা জানানো হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, ওই অঞ্চলে গত দুদিনের সংঘাতেই শতাধিক প্রাণহানি হয়েছে, যা ওই অঞ্চলে নতুন করে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা তৈরি করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই নতুন করে আরেকটি যুদ্ধ শুরু হলে তা বিশ্বের জন্যও হবে ভয়াবহ। নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের ভেতরে অবস্থিত একটি ভূখণ্ড, তবে এখানকার বাসিন্দাদের অধিকাংশই জাতিগতভাবে আর্মেনীয়। আজারবাইজানের অভিযোগ, নাগোরনো-কারাবাখসহ আশপাশের বিশাল আজারবাইজানি ভূখণ্ড দখল করে রেখেছিল আর্মেনিয়া। এ অঞ্চল নিয়ে ১৯৯১ ও ২০২০ সালে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়ায় দুই দেশ। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে সীমান্ত সংঘাত থেকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। নিহত হয় প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষ। ছয় সপ্তাহের লড়াইয়ের পর রাশিয়ার মধ্যস্থতায় চুক্তির মাধ্যমে নিজ ভূখণ্ড উদ্ধার করে আজারবাইজান। তবে চুক্তিতে নাগোরনো-কারাবাখের ‘স্ট্যাটাস’ অনিষ্পন্ন ছিল। মস্কো সেখানে দুই হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে।
এর আগে সোভিয়েত পতনের পর ১৯৯১ সালের সর্বাত্মক যুদ্ধেও নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে প্রাণ যায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষের। তবে বিরোধ চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি না হওয়া ও ‘স্ট্যাটাস’ নির্ধারিত না হওয়ায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সেনাদের মধ্যে নিয়মিত বিরতিতে সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সবশেষ এ সংঘাতের জেরে দক্ষিণ ককেশাসের দেশ দুটির মধ্যে আবার পুরোদমে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবারের লড়াইয়ের পর আজারবাইজানের বিরুদ্ধে ‘আগ্রাসী আচরণের’ অভিযোগ তুলেছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান। তিনি বলেন, ‘রাতারাতি শুরু হওয়া লড়াইয়ে আজারবাইজান থেকে ভারী গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। আমাদের ৪৯ জন সেনা নিহত হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আজারবাইজানের সাম্প্রতিক আগ্রাসী আচরণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
অন্যদিকে আজারবাইজানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ইলনুর মামাদোভা বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে আমাদের সেনা চৌকিতে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে আর্মেনিয়া। গত কয়েক দিনে বেসরকারি অবকাঠামোতেও হামলা হয়েছে। মঙ্গলবার এসব হামলা মাত্রা ছাড়ালে আমরাও পাল্টা জবাব দিয়েছি। বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হচ্ছে না।’
রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত আর্মেনিয়া। মস্কো জানিয়েছে, দুই পক্ষ দ্রুত একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকরে সম্মত হয়েছে। এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নাগোরনো-কারাবাখে লড়াইয়ের ঘটনায় মস্কো ভীষণ উদ্বিগ্ন। নতুন করে যাতে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু না হয় তাই ইতিমধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। দুই পক্ষ প্রস্তাবের শর্ত মেনে চলবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে তুরস্কের মিত্র দেশ আজারবাইজান। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত সাভাসগলু বলেছেন, ‘দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেওয়া ও সহযোগিতার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় অগ্রাধিকার দেবে তুরস্ক।’
Posted ৭:০৮ পিএম | বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।