| শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 95 বার পঠিত
ইন্টারনেটে যেসব চমকপ্রদ ঘটনাগুলো দেখা যায় তার মধ্যে একটি হলো, মাইক নামের একটি মুরগী তার মাথা ছাড়াই একবছর ৬ মাস বেঁচেছিল।
অর্থাৎ মুরগির মাথা কেটে ফেলার পরও বেঁচে ছিলো ১৮ মাস। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি সেসময় ঠাঁই পায় যুক্তরাষ্ট্রের লাইফ ম্যাগাজিনের হেডলােইনে। এছাড়াও গিনেস বুকেও জায়গা করে নেয় মাইক নামক এই মুরগি।
আজ থেকে প্রায় ৭০ বছর আগের কথা। দিনটি ছিলো ১৯৪৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখ। আমেরিকার বৃহত্তম অঙ্গরাজ্য কলোরাডোর এক শহর ফ্রুটাতে লয়েড ওলসেন এবং ক্লারা ওলসেন নামে এক কৃষক দম্পতি বাস করতেন।
ক্লারা ওলসেন রাতের খাবারের জন্য মুরগিটি ধরেছিলেন। তাদের গৃহপালিত মুরগিটির নাম ছিল মাইক। লয়েড মুরগিটি ধরে আর সব মুরগির মতোই চপিং বোর্ডে রেখে কুড়াল দিয়ে মাথা কেটে ফেলেন। কিন্তু মাথা কেটে ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই মাইক ঝট করে উঠে এলোপাথাড়ি চক্কর দিয়ে দৌড়ে চলে গেল। সাধারণত এমন হলে মুরগির বেঁচে থাকার কথা না। কিন্তু মাইক বেঁচে ছিল প্রায় দেড় বছর।
মাইকের মাথার প্রায় পুরো অংশই কেটে গিয়েছিলো। তবে অক্ষত ছিল একটি কান, গ্রীবাসংলগ্ন ধমনী ও মস্তিষ্কের মূল অংশ।
আসলে লয়েড যখন মাইকের মাথায় কোপ মারেন, তখন তার একটা কান বাদ দিয়ে চোখ, ঠোঁটসহ গোটা মাথাটাই কেটে বাদ চলে যায়। কিন্তু মুরগীদের মাথার পিছনেই থাকে মস্তিষ্কের মূল অংশটা। মাইকের ক্ষেত্রে আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যায় তার মস্তিষ্কের ৮০ শতাংশ।
মাইকের মস্তিষ্কের এই অংশটাই তার শ্বাস-প্রশ্বাস, হৃদস্পন্দন, খিদে, হজম নিয়ন্ত্রণ করত। সময় মতো মাইকের ক্ষতের কাছে রক্তও জমাট বেঁধে গিয়েছিল, ফলে সেভাবে রক্তক্ষরণও হয়নি।
লয়েডের মুরগিটির জন্য খুব মায়া হলো। তার মাথায় প্রথম চিন্তা ছিলো মাইকের খাওয়ার ব্যবস্থা করা। মাথা না থাকায় খাবার খাওয়াতে লয়েড একটি চোখের ড্রপারকেই বেছে নিলেন। ড্রপারে করে তরল খাবার ও পানি সরাসরি খাদ্য নালিতে ঢেলে দেয়া হত। সিরিঞ্জ দিয়ে খাদ্যনালীর চার দিকের ময়লা পরিষ্কার করে দিতেন লয়েড। এভাবেই সব দিব্যি চলছিল।
অবশেষে ১৯৪৭ সালের ১৭ মার্চের এক রাতে খাবার আটকে প্রাণ যায় মাইকের।
কলোরাডোর ফ্রুটা শহরে গেলে মাথাহীন মুরগির স্ট্যাচুর দেখা মেলে। মাইকের স্মৃতিতে প্রতি বছর মে মাসে পালন হয় ‘হেডলেস চিকেন ফেস্টিভ্যাল’। আর লোকমুখে ঘুরে বেড়ায় এই আশ্চর্য মুরগির গল্প।
Posted ৪:৫৮ এএম | শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।