মঙ্গলবার ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

অষ্টাদশ রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয়নি

  |   বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   16 বার পঠিত

অষ্টাদশ রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয়নি

দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন, তা জানতে অপেক্ষার পালা বাড়লো। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি।

জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষমতা দেয়া হয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার দলের নেতা শেখ হাসিনার হাতে এই ক্ষমতা অর্পণের প্রস্তাব করেন। বৈঠক শেষে বের হয়ে ওবায়দুল কাদের জানান, তার এই প্রস্তাব সংসদীয় দলের সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করেছেন।

জানা যায়, বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য রাখেন।

আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের মঙ্গলবারের বৈঠক থেকে রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় মনোনয়নের বিষযে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নাও আসতে পারে, এমন ইঙ্গিত সকালেই দিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার হাতে বিষয়টি ছেড়ে দেয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেবেন। দলীয় সূত্র বলছে, ওইদিনই আওয়ামী লীগ প্রার্থী কে, তা প্রকাশ করা হবে।

সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই হবে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি, এটা নিশ্চিত।

ইতোমধ্যে অনেকের নাম বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে। তবে তাদের কেউ চূড়ান্ত নন বলে জানিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন দলের সভাপতিমন্ডলী ও উপদেষ্টা পরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য-নির্বাহী সংসদের একাধিক নেতাও বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ ফোরামে আলোচনা হয়নি। তবে তাদের নেত্রী দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে হয়ত কারও কারও কথা ভেবে থাকতে পারেন।

এখন রাষ্ট্রপতি পদে পছন্দের লোক নির্বাচন করতে দলীয় প্রধানের হাতেই ক্ষমতা দিলেন সংসদীয় দলের সদস্যরা।

দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকা মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৩ এপ্রিল। সংবিধান অনুযায়ী, দুই বারের বেশি কোন ব্যক্তির রাষ্ট্রপতি থাকার সুযোগ নেই।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজেদের মধ্যে কুশলাদি বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্য সংবাদকে বলেন, ‘বর্তমান রাষ্ট্রপতি আমাদের নেত্রীর (শেখ হাসিনা) অত্যন্ত আস্থাভাজন। পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কাকে করা যায় এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ওখানে হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী হয়ত এ বিষয়ে তার পছন্দের কথা…, রাষ্ট্রপতির মতামত… ইত্যাদি আলোচনা হয়ে থাকতে পারে।’

গত এক-দেড় মাস আগে প্রথমে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক সীমানা পেরিয়ে এই আলোচনা এখন নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের মুখে মুখে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন যেভাবে

সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা (এমপি) ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন। তবে প্রার্থী একজন হলে ভোটের প্রয়োজন হয় না। সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একবারই সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল। সে সময় বিএনপির প্রার্থী আবদুর রহমান বিশ্বাস রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হন। এর পর প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফরম নিতে একজন সংসদ সদস্য প্রস্তাব ও একজন সংসদ সদস্যকে সমর্থক হতে হয়। ফরম উত্তোলনকালে একজন সংসদ সদস্যকে নির্বাচন কমিশন ভবনে উপস্থিত থাকতে হয়। ফরম পূরণের পর একই স্থানে তা জমা দিতে হয়।

সংবিধানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে এ পদ শূন্য হলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন হবে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ। আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে তার শেষ মেয়াদ। তবে সংবিধান অনুযায়ী ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে।

নিয়ম অনুযায়ী স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা করার পর কমিশন বৈঠক করে গত ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তফসিল অনুযায়ী দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাতীয় সংসদ ভবনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সিইসি এই নির্বাচনে নির্বাচনী কর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সিইসির কার্যালয়ে অফিস চলাকালে) মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দিতে পারবেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি যাচাই-বাছাইয়ের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনসহ মোট আসন ৩৫০টি। আওয়ামী লীগের আসন ৩০২টি, জাতীয় পার্টির ২৬। বিএনপির সাতজন পদত্যাগ করায় তাদের কোন প্রতিনিধি নেই। এরমধ্যে ৬টি আসনে ১ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচন হলেও সংরক্ষিত একটি আসনে এখনও নির্বাচন হয়নি। আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, তরীকত ফেডারেশন, জেপি এবং বিকল্প ধারারও আসন রয়েছে। তারা রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী দেবে না। সংসদে বিরোধী দল গণফোরামের দুটি এবং স্বতন্ত্র তিনটি আসন আছে।

সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় পার্টি, গণফোরাম ও স্বতন্ত্রদের রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী দেয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোন প্রার্থী দেবে না বলে জানিয়েছে।

একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে আগামী বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচন সামনে রেখে এমন কোন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবে আওয়ামী লীগ যিনি পরীক্ষিত, আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যেকোন সংকট সৃষ্টি হলে সাহসিকতা, দক্ষতা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে যিনি সংকট উত্তরণে সঠিক অবস্থান নিতে পারবেন।

স্বাধীনতার পর থেকে ২১তম মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই হিসাবে নতুন অর্থাৎ ২২তম মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হবেন এই পদে অষ্টাদশ ব্যক্তি।

Facebook Comments Box

Posted ১২:০৪ এএম | বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(164 বার পঠিত)
ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।