| শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট | 39 বার পঠিত
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের মাটির নিচে রয়েছে একটি ‘গোপন’ শহর। ৭৮ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত ওই শহরের নাম ‘ডিক্সিয়া চেং’।
যেখানে বাস করে ‘র্যাট ট্রাইবাল’। মাটির তলায় বসবাস করার জন্য বেইজিংয়ের বাসিন্দাদের কাছে তারা এ নামেই পরিচিত।
মাটির ওপরে জীবনযাপন করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ না থাকার কারণেই মাটির তলায় বাস করে ওই র্যাট ট্রাইবালরা।
চীনের রাজধানী শহরের বিপুল জনসংখ্যা, সীমিত জমি এবং আবাসনের আকাশচুম্বী দামের কারণে প্রায় ১০ লাখ মানুষ এ ভূগর্ভস্থ শহরে আশ্রয় নিয়েছে।
১৯৬৯ সালে সাবেক সোভিয়েত-চীন উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, তখন এ ভূগর্ভস্থ শহর নির্মাণের নির্দেশ দেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান মাও সে তুং। খাদ্যসঞ্চয় এবং যুদ্ধের জন্য ওই শহরকে প্রস্তুত করতে বলেন মাও।
ডিক্সিয়া চেং শহরের নকশা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে শহরটিকে পরমাণু এবং জৈব রাসায়নিক হামলা থেকে রক্ষা করা যায়।
বেইজিংয়ের ওপর হামলা হলে রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং সাধারণ মানুষ যাতে ডিক্সিয়া চেংয়ে আশ্রয় নিতে পারেন, সেজন্য একাধিক প্রবেশপথও তৈরি করা হয়েছিল শহরটিতে।
চীন সরকার সে সময় দাবি করেছিল, ওই ভূগর্ভস্থ শহরে একসঙ্গে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ বসবাস করতে পারবে।
তবে যে উদ্দেশ্যে শহরটি তৈরি হয়েছিল, তার জন্য শহরের সুড়ঙ্গগুলো কখনওই ব্যবহার করা হয়নি। পরবর্তীকালে ওই শহরে বসবাস করা স্থানীয়রা সুড়ঙ্গের বাকি বাড়িগুলোকে কম টাকার হোটেল এবং অন্যান্য ব্যবসায় কাজে লাগাতে শুরু করেন।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সূর্যের আলো না পৌঁছলেও ভূগর্ভস্থ এই শহরে দোকানপাট, খেলাধুলোর জায়গা, রেস্তোরাঁ, সেলুন, থিয়েটার এবং অন্য সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে এ শহর পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের জায়গাও হয়ে উঠেছে।
শহরে যে সুড়ঙ্গপথ রয়েছে, সেগুলো তিন তলা এবং শহরের সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারি ভবনের সঙ্গে যুক্ত।
ধারণা করা হয়, ডিক্সিয়া চেংয়ে ঢোকার জন্য প্রায় ৯০টি প্রবেশপথ রয়েছে। যার অনেকটি এখনও রয়েছে লোকচক্ষুর আড়ালে।
এ শহরের বাড়ি ভাড়া খুবই নগণ্য হওয়ায় বাইরে থেকে কাজের খোঁজে আগত অনেক তরুণ-তরুণী প্রথমে ডিক্সিয়া চেংয়ে আশ্রয় নেন।
বেইজিং কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালে ভূগর্ভস্থ শহরের পারমাণবিক আশ্রয়কেন্দ্র এবং ভবনগুলোকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে।
বাড়িগুলোর নিরাপত্তাসংক্রান্ত ঝুঁকির কথাও বারবার উল্লেখ করেছে সরকার। তবে তাতে লাভ হয়নি।
Posted ৫:১৩ এএম | শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।