শুক্রবার ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

মাঙ্কিপক্স আতঙ্ক থেকে দূরে নেই বাংলাদেশও: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

  |   শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২   |   প্রিন্ট   |   133 বার পঠিত

বিশ্বজুড়ে এখন আতঙ্কের নাম মাঙ্কিপক্স। বাংলাদেশেও ভাইরাসটি প্রবেশ করার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে সতর্ক করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে মাঙ্কিপক্স এখনো শনাক্ত করা না গেলেও সব প্রবেশপথ দিয়ে বহু দেশের নাগরিক আসছেন। এতে শঙ্কা আছে। তাই বিমানবন্দরের পাশাপাশি স্থলপথের প্রবেশপথে সতর্কতা বাড়াতে হবে যাতে সন্দেহভাজন কেউ এলে দ্রæত আইসোলেশনে নেওয়া যায়।

শনিবার (৩০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে মাঙ্কিপক্স নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, শুক্রবার ব্রাজিলে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি কোনদিকে যায় এখনই বলা যাচ্ছে না। তাই আতঙ্কিত না হয়ে এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। এ পর্যন্ত মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে গুটি বসন্তের টিকা ৮৫ ভাগ সুরক্ষা দেয়। কিন্তু ১৯৮১ সালের পর থেকে বাংলাদেশে এই টিকা দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। এখন ভাইরাসটির প্রকোপ যদি বেড়ে যায় প্রয়োজনে আবারও সেই টিকা প্রয়োগ করা হবে। একই সঙ্গে যাদের বাসায় পোষা প্রাণী আছে, তাদের একটু সচেতন হতে হবে। কারণ এটি প্রাণী থেকে প্রাণী এবং সেখান থেকে মানুষকে সংক্রমিত করে।

কয়েক বছর আগে দেখা গেছে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ৭৪ ভাগ রোগী বহুগামিতায় অভ্যস্ত জানিয়ে তিনি বলেন, এই ভাইরাসে আক্রান্তদের ৭৪ ভাগ রোগী বহুগামিতায় অভ্যস্ত। আর ২৬ ভাগ রোগীর এইচআইভি এইডস শনাক্ত হয়।বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত। জলবসন্ত বা গুটিবসন্তের প্রতিকার থাকলেও এই ভাইরাস এতই বিরল যে, এখনো পর্যন্ত এর নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসাপদ্ধতি জানা নেই চিকিৎসকদের।

মূলত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার কিছু দেশে এই ভাইরাসের খোঁজ মেলে। তবে নাম ‘মাঙ্কিপক্স’ হলেও একাধিক বন্যপ্রাণির মাধ্যমে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস। এই ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়ায় ইঁদুরের মাধ্যমে।

ভাইরাসের উপসর্গ কী কী : মাঙ্কিপক্সের উপসর্গগুলো সাধারণত ৬-১৩ দিনের মধ্যে প্রদর্শিত হয়। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেস (এনএইচএস) জানিয়েছে, এর প্রথম লক্ষণগুলো দেখা দিতে ৫-২১ দিন সময় লাগতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের শরীরে প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে আছে- জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, পিঠ ও গায়ে ব্যথার মতো লক্ষণ। এর থেকে হতে পারে কাঁপুনি ও ক্লান্তি।

এর পাশাপাশি দেহের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠে। সঙ্গে ছোট ছোট ক্ষতচিহ্ন দেখা দিতে থাকে মুখে। ধীরে ধীরে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ক্ষত। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে থাকা ব্যক্তির মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস। শ্বাসনালি, ক্ষতস্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। এমনকি আক্রান্তের ব্যবহার করা পোশাক থেকেও ছড়ায় সংক্রমণ।

স¤প্রতি মাঙ্কিপক্সের নতুন ৩ গুরুতর লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে। ত্বকে ফুসকুড়ির পাশাপাশি মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত ব্যক্তিদের যৌনাঙ্গে ঘা, মুখে ঘা ও মলদ্বারে ঘা হতে পারে। গবেষকরা দেখেছেন, প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজনের যৌনাঙ্গে ক্ষত ছিল ও ১৫ শতাংশ মানুষের পায়ুপথ অথবা মলদ্বারে ব্যথা ছিল। গেøাবাল হেলথ এজেন্সি মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের গুরুতর লক্ষণগুলোর মধ্যে সেকেন্ডারি স্কিন ইনফেকশন, নিউমোনিয়া, বিভ্রান্তি ও চোখের সমস্যার বিষয় নিশ্চিত করেছেন।

মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের ১-১০ শতাংশের মৃত্যুঝুঁকি আছে বলেও জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও) বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলো নিজে থেকেই চলে যায়।

কারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে : যাদের মাঙ্কিপক্স আছে এমন ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের (যৌন যোগাযোগসহ) মাধমে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এছাড়া ইঁদুর ও প্রাইমেটের মতো প্রাণীর মাধ্যমেও ছড়াতে পারে মাঙ্কিপক্স।

বিশেষ করে মাঙ্কিপক্স সংক্রামিত ব্যক্তি বা প্রাণীর সঙ্গে যাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে তাদের মধ্যেই বেশি ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। প্রথমে ত্বক থেকে ত্বক, মুখ থেকে মুখ বা মুখ থেকে ত্বকের যোগাযোগসহ যৌন যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করে ও সংক্রমণ ঘটায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নবজাতক ও ছোট শিশু কিংবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন ব্যক্তিদের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের ঝুঁকি বেশি। যদিও মাঙ্কিপক্স থেকে মৃত্যু বিরল, তবে লক্ষণ হতে পারে গুরুতর। এছাড়া যাদের ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি ডিজিজ আছে তাদের ক্ষেত্রেও এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। জিনগত কারণে এমন ব্যক্তিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম নিয়ে জন্মায়। তবে যারা গুটিবসন্তের টিকা দিয়েছেন তারা অন্যদের চেয়ে অনেকটাই সরক্ষিত। স্মলপক্স ভ্যাকসিনগুলো মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে বলা হয়। মাঙ্কিপক্স গুটিবসন্তের অনুরূপ ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হওয়ায় এনএইচএস জানিয়েছে, স্মলপক্সের (এমভিএ) ভ্যাকসিন মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে।

Facebook Comments Box

Posted ২:৪৪ পিএম | শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।