| বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 114 বার পঠিত
উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে মার্কিন শেয়ারবাজারে সূচকের ব্যাপক পতন হয়েছে। গত ২০২০ সালের পর সবচেয়ে খারাপ দিন হিসেবে ডাও একদিনেই ১,২৭৬ পয়েন্ট হারিয়েছে। নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ (এনওয়াইএসই) সাম্প্রতিক স্মৃতিতে সবচেয়ে খারাপ ক্ষতির মুখে পড়েছে।
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা তাদের শেয়ার বিক্রি করে দেয় কারণ শক্তিশালী মুদ্রাস্ফীতির ধকল তাদের পক্ষে বিনিয়োগ ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। সিএনএন
এতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনকুবেররা রাতারাতি ৯ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের সম্পদ খুইয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ধারণার চেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতির তথ্য পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেললে গত মঙ্গলবার এমন ক্ষতির মুখে পড়েন তারা। এক দিনের লোকসান হিসাবে এটি এ যাবৎকালের নবম সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি সম্পদ খুইয়েছেন আমাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেফ বেজোস। এক দিনে তার সম্পদ কমেছে ৯৮০ কোটি ডলার। টেসলার প্রতিষ্ঠাতা এলন মাস্কের সম্পদ কমেছে ৮৪০ কোটি ডলার। ৫৬০ কোটি ডলারে সম্পদ হারিয়েছেন ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ।
আরেক মার্কিন ধনকুবের ল্যারি পেজ ৫২০ কোটি ডলার খুইয়েছেন। সের্গেই ব্রিন, স্টিভ বালমার ও বার্নার্ড অরনল্ট ৪০০ কোটি ডলারের বেশি সম্পদ হারিয়েছেন। ধনকুবের ওয়ারেন বাফেট ও বিল গেটসের সম্পদ যথাক্রমে ৩৪০ কোটি ও ২৮০ কোটি ডলার হাওয়া হয়ে গেছে। একই সঙ্গে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল রিজার্ভ আরও আক্রমণাত্মকভাবে সুদহার বাড়াবে বলে শঙ্কা করছেন বিনিয়োগকারীরা।
এসঅ্যান্ডপি ৫০০এর পতন হয়েছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০২০ সালের জুনের পর সর্বোচ্চ। নাসডাক ১০০এর সূচক ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে, যা ২০২০ সালের মার্চের পর সর্বোচ্চ। ওই সময় এই পুঁজিবারের সূচকের ১২ শতাংশের বেশি পতন হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার বেড়ে গেছে। বেকারত্ব ৩ দশমিক ৫ থেকে বেড়ে এখন ৩ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। পুঁজিবাজার ও ধনকুবেরদের সম্পদের জন্য চলতি বছরের ধারাবাহিক বাজে দিনগুলোর মধ্যে এটি সর্বশেষ। শুধু জুন মাসে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের আট মিনিটের একটি বক্তৃতার পর এই ধনকুবেররা ৭ হাজার ৮০০ কোটি ডলার খুইয়েছেন।
সর্বোপরি চলতি বছরের শুরু দিকে বিশ্বের ৫০০ সবচেয়ে ধনীর যে পরিমাণ সম্পদ ছিল, এখন তা থেকে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার কম আছে। জাকারবার্গ ৬ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার খুইয়েছেন, যা তার সম্পদের ৫৪ ভাগ। বিন্যান্সের সিইও চাংপেং ঝাও ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার খুইয়েছেন, যা তার সম্পদের ৬৪ শতাংশ।
ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ (ডিজেআইএ) মঙ্গলবার ১,২৭৬.৩৭ পয়েন্ট হারিয়েছে, ৩.৯৪% কমে ৩১,১০৪.৯৭ এ দাঁড়িয়েছে। এসএন্ডপি ৫০০ এর ২০২২ সালের সবচেয়ে খারাপ দিন ছিল, ১৭৭.৭২ পয়েন্ট বা তার মানের ৪.৩২% হারিয়ে ৩,৯৩২.৬৯ এ শেষ হয়েছে। নাসডাক কম্পোজিট আরও খারাপ কাজ করেছে, ৬৩২.৮৪ পয়েন্ট কমে ১১,৬৩৩.৫৭ এ শেষ হয়েছে, বা ৫.১৬% কমেছে। শেষবার ডাও এত বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল গত ২০২০ সালে ১১ জুন। ওই সময় এটি ১,৮৬১ পয়েন্ট হারিয়েছিল।
রেকর্ড-উচ্চ মুদ্রাস্ফীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ডলারের অবমূল্যায়নে প্রভাব ফেলতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এমন একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারগুলোতে এই পতন ঘটে।
অর্থনৈতিক নীতি ইনস্টিটিউটের এপ্রিলের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে কর্পোরেট মুনাফা গত দুই বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির ৫৪% জন্য দায়ী।
Posted ৭:২৯ পিএম | বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।