মঙ্গলবার ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গোৎসব

  |   বুধবার, ০৫ অক্টোবর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   128 বার পঠিত

রাজধানীসহ সারাদেশে বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ বুধবার শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ১ অক্টোবর থেকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপি পূজামন্ডপগুলোতে পূজা-অর্চণার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়।
এবার দেবী দুর্গা জগতের মঙ্গল কামনায় গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) আসেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড় বৃষ্টি হবে এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে স্বর্গে বিদায় নেন নৌকায় চড়ে। যার ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে।
বুধবার সকাল ৮ টা ৫০ মিনিটে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকের বাদ্য আর গান-বাজনা ছাড়া বিদায়ের করুণ ছায়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয় প্রতিমা। একই সময়ে তুরাগ নদীতে চলে বিসর্জন। রাজধানীর প্রায় অর্ধশত মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয় ওয়াইজঘাটে। সড়কে পুলিশের টহল ও নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।
এর আগে সকালে প্রতিমা বিসর্জনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গন থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বের হয়। দুপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বের হয় বর্ণাঢ্য এ বিজয়া শোভাযাত্রা। বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিতে দুপুর গড়িয়ে যেতেই ভক্তরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামন্ডপ থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে।
পরে শত শত ট্রাক প্রতিমা নিয়ে সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। ঢাকেশ্বরী থেকে শুরু করে প্রতিমা যাত্রাটি শহীদ মিনার, হাইকোর্ট, পুলিশ হেড কোয়ার্টার, গোলাপ শাহ মাজার, কোর্ট এলাকা হয়ে সদরঘাট পৌঁছে। রাস্তায়, বিভিন্ন ভবনে পুলিশ ছিল সতর্কাবস্থায়। রাস্তার পাশে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
অধিকাংশ মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হলেও ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমাটি রেখে দেয়া হয়। কিন্তু পূজার কাজে ব্যবহৃত দেবীর ফুল, বেলপাতা ও ঘট বিসর্জন দেয়া হয়।
প্রথা অনুযায়ী প্রতিমা বিসর্জনের পর সেখান থেকে জল এনে (শান্তিজল) মঙ্গলঘটে নিয়ে তা আবার হৃদয়ে ধারণ করা হয়। আগামী বছর আবার এ শান্তিজল হৃদয় থেকে ঘটে, ঘট থেকে প্রতিমায় রেখে পূজা করা হবে। রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যা আরতির পর মিশনের পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। এরপর ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করেন ও মিষ্টিমুখ করেন।
সারাদেশে এবছর ৩২ হাজার ১৬৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৪১টি। এসব মন্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘেœ উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রতিটি মন্ডপে মন্ডপে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করা হয়েছে মন্ডপ পাহারার জন্য।

 

Facebook Comments Box

Posted ৫:৪৮ পিএম | বুধবার, ০৫ অক্টোবর ২০২২

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।