মঙ্গলবার ১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

নিষেধাজ্ঞার লড়াইয়ে জয়ী কে? যুক্তরাষ্ট্র না রাশিয়া

  |   শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২   |   প্রিন্ট   |   103 বার পঠিত

আপনার অর্থনীতি ‘ধ্বংসাত্মক’ পরিণতির মুখোমুখি হবে; এভাবেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হুমকি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা যেভাবে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুরু করে, সেই নিষেধাজ্ঞার সূত্র ধরেই বাইডেন এমন দম্ভোক্তি করেছিলেন। হাজারো নিষেধাজ্ঞাতেও এখনো পুতিন অভিযান বন্ধ করেননি। উল্টো যুদ্ধের তিন মাসের বেশি সময় চলছে। এমন অবস্থায় এই নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধে কোন পক্ষের লাভ হচ্ছে, তা প্রশ্নের দাবিদার।রাশিয়ার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞার প্রথম ধাপ সফল হয়নি। তবে এটা সত্য যে, একাধিক নিষেধাজ্ঞার কারণে মস্কোকে তার নীতিগত জায়গায় কিছু পরিবর্তন আনতে হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার দ্বিতীয় ধাপে রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। পাশাপাশি বিদেশের মাটিতে রাশিয়ার ৬৪০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভও জব্দ করা হয়। রাশিয়ার বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় দেশটি থেকে এক হাজারের বেশি বহুজাতিক কোম্পানি তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়।

সার্বিকভাবে নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতিতে একটা চাপ সৃষ্টি হয়। ১৯৯০ সালের পর রাশিয়ার জিডিপিতে সবচেয়ে বাজে অবস্থা দেখা দেয়। অর্থনীতিবিদরা বলতে থাকেন, রাশিয়ার অর্থনীতি তলানিতে ঠেকতে যাচ্ছে এবং যুদ্ধে সমরাস্ত্রের সংকটে পড়বে মস্কো। কিন্তু মস্কো খুব জলদিই নিষেধাজ্ঞাকে প্রতিহত করতে তিনটি কৌশল নেয়: বিকল্প বাণিজ্যিক অংশীদার, নিষেধাজ্ঞা উচ্ছেদ ও দেশীয় ব্যয় কমানো। রাশিয়ার বিরুদ্ধে অনেক দেশই নিষেধাজ্ঞা দিলেও চীনের মতো কিছু দেশ রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়িয়ে দেয়। বাজারের তুলনায় তেলের দাম কম রাখায় ভারতও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনতে শুরু করে। পাশাপাশি সৌদি আরব ও আমিরাত যুক্তরাষ্ট্রের তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এই ঘটনাগুলো রাশিয়াকে ধীরে ধীরে তার নিষেধাজ্ঞাজনিত ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সাহায্য করে।

কিন্তু নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে যে দেশগুলো, তাদের অর্থনীতি প্রতিদিনই নিম্নমুখী হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় মুদ্রাস্ফীতি চলছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশগুলোকে মুদ্রাস্ফীতি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার বাড়াতে হচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলোতে তেলের মূল্য এতটাই বেড়ে গেছে যে, আগামী শীতে ইউরোপের দেশগুলোর অবস্থা কী হবে, তা নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত ইউরোপিয়ান নেতারা। যুক্তরাষ্ট্রের মদদে এশিয়ার দেশ জাপানও মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। কিন্তু এখন সেই জাপানই আবার রাশিয়া থেকে তেল কিনতে শুরু করেছে, কারণ এর বিকল্প তাদের কাছে নেই।

ফরেন পলিসির গবেষণা বলছে, রাশিয়ার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে পশ্চিমা ধনিক শ্রেণির ওপর চাপ বাড়ছে। মুদ্রাস্ফীতির চাপ চলতে থাকলে অচিরেই পশ্চিমা ধনীদের মুনাফায় টান পড়বে। করোনা মহামারীর কারণে একটা বিশাল ধাক্কা ইতিমধ্যেই বৈশ্বিক অর্থনীতিতে পড়েছে। এখন যদি পশ্চিমা অবরোধের ফলে অন্যায্যভাবে অনেক দেশকে সংকটের মুখোমুখি হতে হয়, সেক্ষেত্রে নতুন করে বৈশ্বিক ক্ষমতার ভরকেন্দ্র পাল্টে যাবে। আর এতে লাভবান হবে রাশিয়া ও তার বর্তমান মিত্ররা। এশিয়ায় চীন ও ভারত নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবেএমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Facebook Comments Box

Posted ৫:৪১ পিএম | শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।