| শুক্রবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 138 বার পঠিত
জ্বালানির দাম বেড়ে মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফনে জীবনযাত্রার ব্যয়ের বোঝা বাড়ছে ইউরোপের মানুষের। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর অঞ্চলটির অনেক দেশই কমবেশি চাপে পড়েছে। কোথাও কোথাও এর বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছে মানুষ। তাদের ভাষ্য, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য বড় দায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর ন্যাটোর। চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে জোট দুটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে লাখো মানুষ। কিন্তু সেই প্রাগেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অঞ্চলটির অন্য দেশগুলো নিয়ে নতুন এক রাজনৈতিক মঞ্চের ভিত পোতা হচ্ছে। আগামী অক্টোবর মাসে এ লক্ষ্যে প্রাগে বৈঠকে বসবেন ৪৪টি দেশের প্রতিনিধিরা।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে গেলে নানা কঠিন শর্ত পূরণ করতে হয়। বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষা করেও ব্রাসেলস থেকে সহজে ডাক আসে না। রাজনৈতিক চাপের মুখে নীতিগতভাবে ইউক্রেনের মতো দেশকে ইইউ সদস্য করার উদ্যোগ শুরু হলেও বাস্তবে সেই পরিকল্পনা কার্যকর করা জটিল। অন্যদিকে ইইউ সদস্য থেকেও ব্রিটেন এই রাষ্ট্রজোট ত্যাগ করেছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ইইউ’র সদস্য না হয়েও কি ইউরোপীয় পরিবারের অংশ হওয়া সম্ভব? নিয়মিত সংলাপের কাঠামো কি উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক হতে পারে?
এমন জটিলতা এড়াতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত মে মাসে এক ‘ইউরোপীয় রাজনৈতিক জোট’ গড়ে তোলার যে প্রস্তাব রেখেছেন, সেটির রূপরেখা এবার স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। এমন প্রস্তাবিত জোট গড়ে তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের ওই সম্মেলনে ইউক্রেন, তুরস্ক, ব্রিটেন ও সুইজারল্যান্ডের মতো ইইউ’র কাছের দেশের পাশাপাশি সুদূর আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মতো দেশও এমন জোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। ফলে ২৭ সদস্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এসব দেশের সংলাপের নতুন মঞ্চ সৃষ্টি হবে।
‘ইউরোপিয়ান পলিটিক্যাল কমিউনিটি’ ইইউ এবং বৃহত্তর ইউরোপীয় এলাকার দেশগুলোর মধ্যে আদানপ্রদান ত্বরান্বিত করতে চায়। বলা বাহুল্য, প্রাগে প্রথম বৈঠকে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে। জ্বালানি সংকট ও বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও আলোচনা সূচিতে স্থান পাবে। এর ঠিক এক দিন পর, অর্থাৎ ৭ অক্টোবর ইইউ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি দেশ হিসেবে চেক প্রজাতন্ত্র দুটি সম্মেলনই আয়োজন করছে।
ম্যাক্রোঁর প্রস্তাব অনুযায়ী আলোচনার এমন মঞ্চের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। গত মাসে প্রাগে ইউরোপের ভবিষ্যৎসংক্রান্ত এক ভাষণে তিনি এখনো পর্যন্ত এমন সুযোগের অভাবের কথা স্বীকার করেন। তবে তার মতে, প্রস্তাবিত এই মঞ্চ ইইউ সম্প্রসারণের বিকল্প হতে পারে না। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ছয় মাস অন্তর নতুন এই রাজনৈতিক মঞ্চের শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তাব রেখেছেন।
ইইউ’র বাকি সদস্য ও বাইরের আমন্ত্রিত দেশগুলো গোটা বিষয়টি সম্পর্কে কতটা উৎসাহ দেখাবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিশেষ করে বর্তমানে তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যে যে উত্তেজনা চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সম্মেলনে তুরস্কের উপস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও দীর্ঘকাল আগেই ইইউ সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলেও তুরস্ক এখনো এই রাষ্ট্রজোটের বাইরেই রয়েছে।
Posted ৫:০২ পিএম | শুক্রবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।