ডেস্ক রিপোর্ট | মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪ | প্রিন্ট | 31 বার পঠিত
মিহি সুতোয় বুনা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শাড়ির নাম ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’। সম্প্রতি হুট করেই প্রতিবেশী দেশ ভারত দাবি করে বসে এটি তাদের ঐতিহ্য। ভারত সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য বলে তুলে ধরা হয়। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এতে দু’দেশেই টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা।
দেরিতে হলেও বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ। টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি ও জি আই স্বত্ব ফিরিয়ে আনার জন্য আইনি লড়াই চালাবে ঢাকা। এজন্য আইনজীবী নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথা হাইকোর্টকে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে জিআই পণ্য ও জিআইযোগ্য পণ্যের তালিকা দাখিল করা হয়েছে হাইকোর্টে। প্রায় শতাধিক সম্ভাব্য জিআই পণ্যের তালিকা হাইকোর্টে জমা দিলো শিল্প মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৬ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে লিখিতভাবে এসব তথ্য জানানো হয়। আদালত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে এফিডেভিট আকারে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা।
ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা বলেন, বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শাড়ি জিআই পণ্য হওয়ার যোগ্যতা রাখে। সেই পণ্যটিকে ভারত তাদের পণ্য হিসেবে রেজিস্ট্রি করে প্রকাশ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি রিট করেছি। ওই রিটে রুল জারি করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের পর সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক তথ্য পাওয়া গেছে। সুপ্রিম কোর্টের কাছে একটি তালিকা পেশ করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলার শতাধিক জিআই পণ্যের তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকা ক্রমবর্ধমান হারে চলবে। আর জিআইযোগ্য পণ্যের তালিকাও দাখিল করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ভৌগোলিক শনাক্তকরণ (জিআই) পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নিবন্ধনের উপযোগী পণ্যের দুটি আলাদা তালিকা প্রস্তুত করে ১৯ মার্চের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তালিকা প্রণয়নে সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। হাইকোর্টের এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জিআই পণ্যের তালিকা তৈরি করা হয়।
আদালতে উপস্থাপন করা শিল্প মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত টাস্কফোর্স কমিটির আহ্বায়ক ও মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দিকীর সই করা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ হাইকমিশন, নয়াদিল্লী কর্তৃক ভারতের সংশ্লিষ্ট উচ্চ আদালত/রেজিস্ট্রার বরাবর বাতিল আবেদন দাখিল করার জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পূর্বেই একটি ল’ফার্ম নিয়োগ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণের জন্য জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। সর্বশেষ সভায় ল’ ফার্ম ‘ম্যাসন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’কে মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে
হাইকোর্টে দেওয়া তালিকায় দেখা গেছে, ৬৪ জেলার মধ্যে ১৫০টি পণ্য সম্ভাব্য এবং ৩৪টি পণ্য নিবন্ধিত হয়েছে। প্রতিবেদনে শিল্প মন্ত্রণালয় আরও বলেছে উল্লিখিত পণ্যসমূহ পর্যায়ক্রমে বাড়তে পারে।
ভারতের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সব জিআই পণ্যের তালিকা তৈরির নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় জিআই পণ্যের তালিকা প্রস্তুত করে হাইকোর্টের দাখিল করার নির্দেশ দেন আদালত।
Posted ৯:২০ এএম | মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।