| রবিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২২ | প্রিন্ট | 173 বার পঠিত
এশিয়ার পারমানবিকশক্তিধর দেশ পাকিস্তানে চলছে চরম অর্থনৈতিক সংকট। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, পাকিস্তান সরকারকে তাদের আমদানিতে লাগাম টানতে হচ্ছে। দেশটির স্বাধীনতার পর এমন সংকটে পড়তে হয়নি। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য অনেকদিন ধরেই ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে ধরনা দিয়ে আছে ইসলামাবাদ প্রশাসন। কিন্তু আইএমএফ এবার আগে পাকিস্তানকে ঋণ দিতে চাইছে না, কারণ তাদের আগের ঋণই এখনো পরিশোধ করা হয়নি। তারপরেও ইসলামাবাদ আশা করছে আইএমএফ তাদের এক দশমিক সাত বিলিয়ন ডলারের ঋণ দেবে বিভিন্ন মেয়াদে।
আইএমএফ ছাড়াও অন্য ঋণদাতাদের দুয়ারে যেতে শুরু করেছে পাকিস্তান। সম্প্রতি দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া গিয়েছেন সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তার এই সফরের উদ্দেশ্য হলো, দেশ দুটি থেকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা। কিন্তু তরল অর্থ সংকটে থাকা পাকিস্তানকে সৌদি বা আমিরাত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে কিনা তা নিশ্চিত নয়।
পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভা থেকে বলা হচ্ছে, আগামী মাস নাগাদ আইএমএফের পরিচালক পর্ষদের এক বৈঠকে পাকিস্তানকে এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। তবে আইএমএফ এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। ফলে গোটা ব্যাপারটি এখনো পাকিস্তানের জল্পনা-কল্পনার মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পাকিস্তান সরকার তার মিত্রদের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তার জন্য প্রতিশ্রুতি আদায় করতে চাইছে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি এখনো কেউই দেয়নি ইসলামাবাদকে।
ঋণ না পাওয়ার এমন সংকটের পেছনে আছে আইএমএফের শর্ত। সংস্থাটি বলছে, পাকিস্তানকে তারা নতুন করে ঋণ দিতে আগ্রহী, কিন্তু সেই ঋণ পেতে হলে পাকিস্তানকে তার মিত্রদের কাছ থেকে অন্তত চার বিলিয়ন ডলার সহায়তা নিতে হবে। এই চার বিলিয়ন ডলারের জন্যই বাজওয়া মূলত সৌদি ও আমিরাত সফর করছেন। এছাড়া ঋণদাতা দেশ চীনের সঙ্গেও ব্যাপক দেনদরবার করছে পাকিস্তান সরকার। পেইচিংয়ের বাণিজ্যিক অংশীদারত্বের অংশ হিসেবে ইসলামাবাদ চাচ্ছে সহজ শর্তে ঋণ। তবে এখন যেহেতু পেইচিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ কিছুটা স্থবির অবস্থায় রয়েছে, তাই চীনের পক্ষে পাকিস্তানকে নতুন করে ঋণ দেওয়া সহজ হবে না। গত এপ্রিলেও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সৌদি আরব গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে সম্পূর্ণ খালি হাতে ফিরে আসতে হয়। একই অবস্থা সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্ষেত্রে হলেও, তারা পাকিস্তানকে ভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাব অনুসারে, আমিরাত পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনে নিতে ইচ্ছুক। গত শুক্রবার আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে ফোন দিয়েছিলেন। ওই ফোনালাপে ঋণ সংক্রান্ত কোনো বার্তা আমিরাত দিয়েছে কি না, তা জানা যায়নি। এদিকে আইএমএফ যাতে তাদের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক কিছুটা আগে করে, এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শেরম্যানকে দিয়ে লবি করছেন বাজওয়া। শেরম্যান হোয়াইট হাউজ ও যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগকে চাপ দিচ্ছেন বিষয়টি নিয়ে।
Posted ১:৩১ পিএম | রবিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২২
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।