বুধবার ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

শেখ হাসিনার জন্য ভারত ঠিক কতদূর যেতে রাজি?

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   146 বার পঠিত

শেখ হাসিনার জন্য ভারত ঠিক কতদূর যেতে রাজি?

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ভারতের ধারণা ছিল এটা একটি ‘স্টপওভার’ আর তার মেয়াদ বড় জোর ছয়-সাত ঘণ্টার জন্যই। সেই ভুল ভাঙতে অবশ্য দিল্লির সময় লাগেনি। ছয় মাস পেরিয়ে আজ সাত মাসে ঠেকলেও তাকে এখনো পাঠানো সম্ভব হয়নি তৃতীয় কোনো দেশে এবং রাষ্ট্রের অতিথি হিসেবে তিনি আজও ভারতেই অবস্থান করছেন।

এতদিন কেটে গেলেও হাসিনাকে নিয়ে ভারত কী করতে চাইছে আনুষ্ঠানিকভাবে তার কোনো আভাস দিল্লি দেয়নি। অতিথি হিসেবে থাকলেও তিনি এখনো ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয় পাননি।

তাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে এটা যেমন ঠিক, তেমনই গত মাসেই ভারত শেখ হাসিনার বক্তব্য থেকে নিজেদের দূরত্বও বাড়িয়েছে। রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে ভারত জানিয়েছে, শেখ হাসিনা যা বলছেন তা পুরোপুরি ইন্ডিভিজুয়াল ক্যাপাসিটিতে বা তার ব্যক্তিগত পরিসর থেকে বলছেন। এর সঙ্গে ভারতের অবস্থানের কোনো সম্পর্ক নেই।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয় শঙ্কর কিংবা তার মন্ত্রণালয়ও একাধিকবার বলছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতও সুসম্পর্ক চায়। তবে তাতে কিছু যদি আর কিন্তু আছে।

এদিকে শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য প্রত্যর্পণ করার অনুরোধ আসার আড়াই মাস পরও কোনো জবাব বাংলাদেশ সরকারকে দেয়নি ভারত। শেখ হাসিনা নিজে যদিও তার সমর্থকদের উদ্দেশে বাংলাদেশে ফেরার কথাও বলছেন। তবে ভারত বাংলাদেশে তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক পুনর্বাসনে সহায়তা করবে এমন কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।

তাহলে শেখ হাসিনাকে নিয়ে এই মুহূর্তে ভারতের ভাবনা বা পরিকল্পনা কী? বা অন্যভাবে বললে, শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানোর জন্য ভারত ঠিক কতটা যেতে প্রস্তুত?

জোর করে কোথাও পাঠানো হবে না

ঢাকায় ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু শেখ হাসিনাকে ভারত কিছুতেই কোনো বিপদের মুখে ঠেলে দেবে না। সাবেক এই শীর্ষস্থানীয় কূটরীতিবিদ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘যদি বলেন, এখন ফিউচার কী? হাসিনার ফিউচার… শি অবভিয়াসলি ইজ নট গোয়িং এনিহোয়্যার (তিনি স্পষ্টতই অন্য কোথাও যাচ্ছেন না), আমার ধারণা।

তিনি বলেন, ‘কারণ অন্য জায়গায় হয়তো (পাঠানোর বিষয়ে) অতটা সুবিধা করতে পারছে না বা ওরকম কিছু। আর ভারতে আছে, ঠিক আছে থাকবে। সে আগেও থেকেছে। ৭৫ থেকে ৮১ সাল পর্যন্ত তো এখানেই ছিল।’

বিদেশের রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা যদি কোনো কারণে ভারতে চলে আসেন, তাদের জোর করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোটা যে কখনোই ভারতের নীতি নয়, সেটাও তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন। চক্রবর্তীর কথায়, আমাদের কোনোদিন এরকম পলিসি নেই যে একজন পলিটিক্যাল পারসনকে জোর করে ফেরত দেওয়া। দালাই লামাও তো যেমন এখনো ইন্ডিয়াতেই আছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমরা মনে করি আমাদের এখানে যারা আশ্রয় নিয়ে আসেন, তাদের প্রতি আমাদের একটা…বলতে পারেন সাংস্কৃতিক ব্যাপার বা একটা নীতিগত ব্যাপারও আছে… যে তাদের আমরা জোরজবরদস্তি করে কোথাও পাঠাব না। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও এটাই আমার মনে হয়।’

শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে যে অনুরোধ জানিয়েছে, সেটারও কোনো ভবিষ্যৎ দেখছেন না তিনি। পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তীর মতে, যে মামলায় বিচারের জন্য তাকে ফেরত চাওয়া হচ্ছে সেটা যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়, তাহলে সেই অনুরোধ খারিজ করার বিধান প্রত্যর্পণ চুক্তিতেই আছে এবং সেই যুক্তি প্রয়োগ করেই ভারত এই অনুরোধ নাকচ করে দিতে পারে।

দেখা হচ্ছে শুধু মোদি, দোভালের সঙ্গেই

দিল্লি শহরেই আবার শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের কার্যালয়; যেখানে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত। তবে মা-মেয়ের ইচ্ছে যা-ই হোক, দুজনের নিয়মিত দেখা হলেও একই সঙ্গে বা একই ছাদের নিচে থাকা সম্ভব হচ্ছে না।

এর কারণটাও সহজ। সায়মা ওয়াজেদ রয়েছেন জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে, আর শেখ হাসিনা এদেশের অতিথি ভারতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। ভারত তার রাজনৈতিক অতিথিকে দেশে জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে একসঙ্গে রাখতে পারে না সহজবোধ্য কারণেই।

তবে দিল্লিতে সিনিয়র কূটনৈতিক সাংবাদিক নয়নিমা বসু বলেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হলেও শেখ হাসিনার সঙ্গে কিন্তু ভারতের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাঝেসাঝে দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছে। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, এই সাত মাসে আমরা দেখেছি যে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেকবার সোশ্যাল মিডিয়াতে স্পিচ দেওয়ার একটা অ্যালাওয়েন্স (অনুমতি) দেওয়া হয়েছে। এমন নয় যে উনি এখানে চুপ করে বসে আছেন।

Logo
ই-পেপার
সর্বশেষ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি আন্তর্জাতিক সারাদেশ খেলা বিনোদন চাকরি
Advertisement

জাতীয়

শেখ হাসিনার জন্য ভারত ঠিক কতদূর যেতে রাজি?
Icon যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:২৮ এএম

217
Shares
facebook sharing buttonmessenger sharing buttontwitter sharing buttonwhatsapp sharing buttonprint sharing buttoncopy sharing button
শেখ হাসিনার জন্য ভারত ঠিক কতদূর যেতে রাজি?
Advertisement

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ভারতের ধারণা ছিল এটা একটি ‘স্টপওভার’ আর তার মেয়াদ বড় জোর ছয়-সাত ঘণ্টার জন্যই। সেই ভুল ভাঙতে অবশ্য দিল্লির সময় লাগেনি। ছয় মাস পেরিয়ে আজ সাত মাসে ঠেকলেও তাকে এখনো পাঠানো সম্ভব হয়নি তৃতীয় কোনো দেশে এবং রাষ্ট্রের অতিথি হিসেবে তিনি আজও ভারতেই অবস্থান করছেন।

এতদিন কেটে গেলেও হাসিনাকে নিয়ে ভারত কী করতে চাইছে আনুষ্ঠানিকভাবে তার কোনো আভাস দিল্লি দেয়নি। অতিথি হিসেবে থাকলেও তিনি এখনো ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয় পাননি।

Advertisement

তাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে এটা যেমন ঠিক, তেমনই গত মাসেই ভারত শেখ হাসিনার বক্তব্য থেকে নিজেদের দূরত্বও বাড়িয়েছে। রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে ভারত জানিয়েছে, শেখ হাসিনা যা বলছেন তা পুরোপুরি ইন্ডিভিজুয়াল ক্যাপাসিটিতে বা তার ব্যক্তিগত পরিসর থেকে বলছেন। এর সঙ্গে ভারতের অবস্থানের কোনো সম্পর্ক নেই।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয় শঙ্কর কিংবা তার মন্ত্রণালয়ও একাধিকবার বলছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতও সুসম্পর্ক চায়। তবে তাতে কিছু যদি আর কিন্তু আছে।

এদিকে শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য প্রত্যর্পণ করার অনুরোধ আসার আড়াই মাস পরও কোনো জবাব বাংলাদেশ সরকারকে দেয়নি ভারত। শেখ হাসিনা নিজে যদিও তার সমর্থকদের উদ্দেশে বাংলাদেশে ফেরার কথাও বলছেন। তবে ভারত বাংলাদেশে তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক পুনর্বাসনে সহায়তা করবে এমন কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।

তাহলে শেখ হাসিনাকে নিয়ে এই মুহূর্তে ভারতের ভাবনা বা পরিকল্পনা কী? বা অন্যভাবে বললে, শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানোর জন্য ভারত ঠিক কতটা যেতে প্রস্তুত?

জোর করে কোথাও পাঠানো হবে না

ঢাকায় ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু শেখ হাসিনাকে ভারত কিছুতেই কোনো বিপদের মুখে ঠেলে দেবে না। সাবেক এই শীর্ষস্থানীয় কূটরীতিবিদ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘যদি বলেন, এখন ফিউচার কী? হাসিনার ফিউচার… শি অবভিয়াসলি ইজ নট গোয়িং এনিহোয়্যার (তিনি স্পষ্টতই অন্য কোথাও যাচ্ছেন না), আমার ধারণা।

তিনি বলেন, ‘কারণ অন্য জায়গায় হয়তো (পাঠানোর বিষয়ে) অতটা সুবিধা করতে পারছে না বা ওরকম কিছু। আর ভারতে আছে, ঠিক আছে থাকবে। সে আগেও থেকেছে। ৭৫ থেকে ৮১ সাল পর্যন্ত তো এখানেই ছিল।’

বিদেশের রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা যদি কোনো কারণে ভারতে চলে আসেন, তাদের জোর করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোটা যে কখনোই ভারতের নীতি নয়, সেটাও তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন। চক্রবর্তীর কথায়, আমাদের কোনোদিন এরকম পলিসি নেই যে একজন পলিটিক্যাল পারসনকে জোর করে ফেরত দেওয়া। দালাই লামাও তো যেমন এখনো ইন্ডিয়াতেই আছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমরা মনে করি আমাদের এখানে যারা আশ্রয় নিয়ে আসেন, তাদের প্রতি আমাদের একটা…বলতে পারেন সাংস্কৃতিক ব্যাপার বা একটা নীতিগত ব্যাপারও আছে… যে তাদের আমরা জোরজবরদস্তি করে কোথাও পাঠাব না। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও এটাই আমার মনে হয়।’

শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে যে অনুরোধ জানিয়েছে, সেটারও কোনো ভবিষ্যৎ দেখছেন না তিনি। পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তীর মতে, যে মামলায় বিচারের জন্য তাকে ফেরত চাওয়া হচ্ছে সেটা যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়, তাহলে সেই অনুরোধ খারিজ করার বিধান প্রত্যর্পণ চুক্তিতেই আছে এবং সেই যুক্তি প্রয়োগ করেই ভারত এই অনুরোধ নাকচ করে দিতে পারে।

দেখা হচ্ছে শুধু মোদি, দোভালের সঙ্গেই

দিল্লি শহরেই আবার শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের কার্যালয়; যেখানে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত। তবে মা-মেয়ের ইচ্ছে যা-ই হোক, দুজনের নিয়মিত দেখা হলেও একই সঙ্গে বা একই ছাদের নিচে থাকা সম্ভব হচ্ছে না।

এর কারণটাও সহজ। সায়মা ওয়াজেদ রয়েছেন জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে, আর শেখ হাসিনা এদেশের অতিথি ভারতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। ভারত তার রাজনৈতিক অতিথিকে দেশে জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে একসঙ্গে রাখতে পারে না সহজবোধ্য কারণেই।

তবে দিল্লিতে সিনিয়র কূটনৈতিক সাংবাদিক নয়নিমা বসু বলেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হলেও শেখ হাসিনার সঙ্গে কিন্তু ভারতের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাঝেসাঝে দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছে। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, এই সাত মাসে আমরা দেখেছি যে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেকবার সোশ্যাল মিডিয়াতে স্পিচ দেওয়ার একটা অ্যালাওয়েন্স (অনুমতি) দেওয়া হয়েছে। এমন নয় যে উনি এখানে চুপ করে বসে আছেন।

তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। কিন্তু আমরা এটাও দেখেছি যে তারা শেখ হাসিনাকে অ্যালাও করেছে যাতে উনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মস ব্যবহার করতে পারেন… সেটা এক্স হোক, বা ফেসবুক হোক… ওনার নিজের যা বলার আছে তা বাংলাদেশিদের বা বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সাপোর্টারদের উদ্দেশে বলতে!’

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারলেও শেখ হাসিনা কিন্তু পরিচিতজনদের সঙ্গে স্বাভাবিক যে সামাজিক মেলামেশা; সেটা একেবারেই করতে পারছেন না। নয়নিমা বসুর কথায়, আমরা এটাও জানি যে তাকে এখানে একটা সাংঘাতিক প্রোটেকশনের মধ্যে রাখা হয়েছে এবং খুবই কম সংখ্যক মানুষ তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন।

‘এটাও শোনা গেছে এবং আমরা সোর্সেসের মাধ্যমে জানি যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল; তারা দুজনই শুধু দেখা করেন তার সঙ্গে। তাও সেটা খুব কমই ঘটে, যখন খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনো পার্টিকুলার ইস্যু থাকে।’

আনলকিং শুরু হলে অবাক হব না

এর মাঝে দেশে-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে না কি রাখা হয়েছে ল্যুটিয়েন্স দিল্লির কোনো বাংলোতেই। এমনকি তিনি মাঝেমাঝে হাঁটাহাঁটিও করছেন দিল্লিতে মর্নিং ওয়াকারদের স্বর্গ লোদি গার্ডেনে!

যদিও লোদি গার্ডেনে রোজকার ভিড় দেখলে যে কেউ বুঝতে পারবেন, যাকে ঘিরে প্রতিটি পদক্ষেপ কঠোর গোপনীয়তায় মোড়া; তার পক্ষে সেখানে হাঁটাহাঁটি করতে যাওয়া কোনোমতে সম্ভবই নয়!

লন্ডনভিত্তিক লেখক ও বাংলাদেশ গবেষক প্রিয়জিৎ দেব সরকার আবার মনে করেন, শেখ হাসিনাকে ঘিরে এই গোপনীয়তা আগামী দিনে ধীরে ধীরে উন্মোচন বা আনলকিং করা হতে পারে। যদি ভারত সেটার প্রয়োজন অনুভব করে।

তার কথায়, ‘দেখুন, ভারত শেখ হাসিনার সবরকম দায়িত্বই; মানে তার সুরক্ষা থেকে শুরু করে যাবতীয় আর যা যা দরকার, তার সবই নিয়েছে। আর ভারতের গণতন্ত্রের যে পীঠস্থান সংসদ, সেখানে যারা ক্ষমতায় আছেন ও যারা বিপক্ষে, দুটি দলই এক কণ্ঠে স্বীকার করেছে, শেখ হাসিনা আমাদের অতিথি, তিনি যতদিন ইচ্ছে ততদিন ভারতে থাকতে পারেন।’

‘কিন্তু একটা জিনিস আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে জঙ্গিবাদীদের কাছে শেখ হাসিনা একজন চরম টার্গেট। তো তার সুরক্ষার দায়িত্ব যখন ভারত নিয়েছে তখন ভারতকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে এটা দেখতে হবে যাতে কোনোরকম কোনো আঁচ তার ওপর না আসে।’

ঠিক এই কারণেই শেখ হাসিনাকে ঘিরে এই নজিরবিহীন সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন প্রিয়জিৎ দেব সরকার। যদিও পরে এটা পর্যালোচনা করা হতেও পারে বলে তার ধারণা।

আমি এখানে আর একটা উদাহরণ দিতে চাই। যেমন কোভিড মহামারির সময় আমরা লকডাউনের পরে দেখেছিলাম ‘আনলক’– মানে বিধিনিষেধগুলো আস্তে আস্তে ও পর্যায়ক্রমিকভাবে শিথিল করা হয়েছিল।’

‘তো শেখ হাসিনা এখন যেমন তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অডিও ভাষণ দিচ্ছেন দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে, ভবিষ্যতে এটা হয়তো আর একটু ‘আনলক’ হয়ে তাকে আমরা অন্য অন্য রূপে বা ভিডিও মাধ্যমেও দেখতে পারি, কে বলতে পারে? বলেন প্রিয়জিৎ দেব সরকার।

এটাও ঘটনা, আজ দীর্ঘ সাত মাস পরেও এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর আমাদের জানা নেই, শেখ হাসিনা তাহলে আছেন কোথায়? হয়তো মীরাট সেনানিবাসের ভেতরে কোনো সেফ হাউসে, হয়তো নয়। হয়তো মানেসরে কোনো আধাসামরিক বাহিনীর গেস্ট হাউসে, কিংবা সেটাও নয়!

বস্তুত শেখ হাসিনার সঠিক লোকেশন যে এত লম্বা সময় ধরে গোপন রাখা সম্ভব হয়েছে, এটাও কিন্তু ভারতের জন্য কম সাফল্য নয়!

Facebook Comments Box

Posted ৪:০২ এএম | বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(172 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।