শনিবার ২৫শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা বাংলাদেশে থেকে জঙ্গিদের সক্রিয় করতেন

  |   মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   19 বার পঠিত

আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা বাংলাদেশে থেকে জঙ্গিদের সক্রিয় করতেন

আল-কায়েদার অন্যতম শীর্ষ নেতা এজাজ আহমেদ কারগিল বাংলাদেশে থেকে জঙ্গিদের সক্রিয় করতেন। তিনি একসময় আল-কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনের সহযোগী ছিলেন। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের জঙ্গি কার্যক্রম মনিটরিং করতেন কারগিল।

বাংলাদেশে জঙ্গিদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বান্দারবানের থানচি উপজেলার গহিন অরণ্যে। ২০১০ সালে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর এজাজ আহমেদ কারগিল বাংলাদেশ থেকে চলে যান আফগানিস্তানে। তার আল-কায়েদার প্রধান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে আল-কায়েদার প্রধান করা হয়। পরবর্তী সময়ে এজাজ আহমেদ কারগিল আর বাংলাদেশে ফিরে আসেননি, আফগানিস্তানে থেকে যান। বাংলাদেশে থাকাকালে বিয়ে করেন নাজনিন সুলতানাকে। তাদের কোনো সন্তান নেই। পরে আফগানিস্তানে এক মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন কারগিল।

এজাজ আহমেদ কারগিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার অনুসারীরা নতুন জঙ্গি সংগঠন গড়ে তোলেন। নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের নাম জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়া। বাংলাদেশে এর অপর নাম আল-কায়েদা বাংলাদেশ। জঙ্গিদের কাছে দুই নামেই পরিচিত সংগঠনটি। বাংলাদেশে এর আমির আনিসুর রহমান মাহমুদ। আর এই জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতা হলেন শামীন মাহফুজ। তিনি পলাতক। একসময় তিনি নিহত কারগিলের স্ত্রী নাজনিন সুলতানাকে বিয়ে করেন।

স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ ইতিমধ্যে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের অর্ধশতাধিক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জঙ্গিরা প্রথম ধরা পড়ে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের হাতে। পরে র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় আরো জঙ্গি। গ্রেফতারকৃত জঙ্গিরা দেশে জঙ্গি উত্থানের সব তথ্য প্রকাশ করেছে। দেশে অধিকাংশ জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ। জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আত্মপ্রকাশ ২০১৭ সালে। তখন থেকেই তরুণদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে এই নতুন মঞ্চে টানার চেষ্টা শুরু হয়। তাদের পরিকল্পনায় কত জন তরুণ উদ্বুদ্ধ হয়ে এ প্ল্যাটফরমে ভিড়েছে সেই সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য উদ্ঘাটন করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জঙ্গি শামীন মাহফুজের বাড়ি গাইবান্ধায়। ক্যাডেট কলেজের ছাত্র শামীন শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সরাসারি সম্পৃক্ত ছিলেন। এ কারণেই ক্যাডেট কলেজ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ নেই। পরে বাইরের কলেজ থেকে এইচএসসিতে সাতটি লেটার মার্ক নিয়ে উত্তীর্ণ হন শামীন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এজাজ আহমেদ কারগিলের সঙ্গে শামীনের পরিচয় ছিল। তার কাছ থেকেই জঙ্গি কার্যক্রমের সব কিছু শেখেন। আনিসুর রহমান মাহমুদের নেতৃত্বাধীন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ জঙ্গি সংগঠনের সামরিক সেক্টরের প্রধান শামীন।

তবে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রধান হলেন শামীন। র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রধান হলেন আনিসুর রহমান মাহমুদ।

জঙ্গিদের অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য পাহাড়ের কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্যন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন শামীন মাহফুজ। ২০১৭ সাল থেকেই তারা প্রশিক্ষণের কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৯ সালে কক্সবাজারের একটি হোটেলে কেএনএফের সঙ্গে চুক্তি করেন শামীন। কেএনএফের পক্ষে এর প্রধান নাথান বম স্বাক্ষর করেন। আর জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার পক্ষে স্বাক্ষর করেন শামীন মাহফুজ। গহিন অরণ্যে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের সময় শামীন উপস্থিত থাকতেন।

ওসামা বিন লাদেনের যেমন সশস্ত্র বডিগার্ড ছিল, তেমনি শামীনের নিরাপত্তা দিত তার সশস্ত্র দেহরক্ষীরা। প্রশিক্ষণ চলাকালে মাঝেমধ্যে নাথান বম এসে শুধুমাত্র শামীনের সঙ্গে বৈঠক করে চলে যেতেন। গত ২৫ নভেম্বর জঙ্গিদের কোন্দলে আল আমিন খুন হন। পরে তাকে কবর দেওয়া হয়।  গত রবিবার র্যাব ঐ কবর খুঁড়ে কোনো মরদেহ পায়নি। তবে কবরে কাপড়-চোপড় আছে। অর্থাৎ লাশ সরিয়ে নিয়েছে জঙ্গিরা।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, জঙ্গি আল আমিনের মরদেহ ঐ কবরে পাওয়া যায়নি। র‍্যাব সম্প্রতি ৪০ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে বলে তিনি জানান।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান (সিটি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, শামীন মাহফুজকে গ্রেফতার করতে পারলে নতুন জঙ্গি সংগঠনের বিস্তারিত তথ্য বের হয়ে আসবে এবং এই জঙ্গি সংগঠনের সমাপ্তি ঘটবে।

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, নতুন জঙ্গি সংগঠনের ব্যাপারে আগে থেকে তথ্য ছিল। এ দেশে কোনো জঙ্গি সংগঠন মাথাচাড়া দিলে র‍্যাব-পুলিশের নেটওয়ার্কে তা ধরা পড়ে। এবারও ধরা পড়েছে। নতুন জঙ্গি সংগঠনের নেটওয়ার্ক বিস্তারের কোনো সুযোগ নেই।

Facebook Comments Box

Posted ২:২৮ এএম | মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(160 বার পঠিত)
ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।