শনিবার ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

হাসিনার পতনের পর ৬০ শতাংশ বাজার হারিয়েছে কলকাতা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   132 বার পঠিত

হাসিনার পতনের পর ৬০ শতাংশ বাজার হারিয়েছে কলকাতা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৫ আগস্ট এই স্বৈরাচার সরকারের পতন পর থেকে ভারতে কমে গেছে বাংলাদেশি পর্যটক। গত একমাসে যারা কলকাতায় গেছেন তার অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। শেখ হাসিনার মতো তারাও নিজেদের রক্ষা করতে দেশটিতে অবস্থান করছেন। সাধারণ পর্যটকরা না যাওয়ার কারণে প্রায় ৬০ শতাংশ কমেছে পোশাকের বাজারের বেঁচাকেনা। ৭০ শতাংশ কমেছ হোটেল বুকিং। এক তৃতীয়াংশে নেমেছে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা। সব মিলিয়ে বড় ধরনের আর্থিক সংকটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়াতে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের অভিজ্ঞতাও ভালো না হওয়াতে ধারণা করা যাচ্ছে খুব সহজেই কাটবে না এ সংকট।

বাংলাদেশের জনগণ মনে করেন বাংলাদেশে ভারতের অতিরিক্ত প্রভাব, পানি বণ্টন ও সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হলে দীর্ঘ ক্ষতির মুখে পড়তে পারে কলকাতা।

এসএস হগ মার্কেট, যা নিউ মার্কেট বলে পরিচিত, অথবা তার আশপাশের বিপণী বিতানগুলিতে সারা বছরই বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। বেড়াতে এসে হোক অথবা চিকিৎসা করানো জন্য, বেশিরভাগ বাংলাদেশি পর্যটকই কলকাতায় এলে নিউ মার্কেটে কেনা কাটা করতে গিয়ে থাকেন। খবর বিবিসি বাংলার।

নিউ মার্কেটের দোকান মালিকদের সংগঠনের প্রধান অশোক গুপ্তা বলেন, পোশাকের দোকানগুলিতে বাংলাদেশি ক্রেতাদেরই ভিড় দেখা যেত। এক মাস হয়ে গেল, তারা এখন আর ভারতে আসছেন না প্রায় কেউই। আমাদের দোকানগুলোর ৬০ শতাংশ বিক্রি কমে গেছে এই এক মাসে।

পোষাক, সাজগোজের জিনিস অথবা জুতো সহ সব ব্যবসায়ীই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

নিউ মার্কেটের কাছাকাছি আরও যে কয়টি বড় শপিং মল বা বড় বড় দোকান আছে, সেখানেও একই পরিস্থিতি বলে জানা যাচ্ছে।

হোটেলের ঘর প্রায় ফাঁকা

মার্কুইস স্ট্রিট এলাকাটি বহু বাংলাদেশি মানুষের কাছে অতি পরিচিত এলাকা। কলকাতার কেন্দ্রস্থলের এই এলাকায় বহু হোটেল রেস্তোরাঁ আছে, যারা মূলত বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপরে নির্ভর করেই ব্যবসা করে থাকে।

এছাড়াও ওই অঞ্চলে মানিএক্সচেঞ্জ, বাসের কাউন্টারসহ বাংলাদেশি পর্যটকদের প্রায় সব ধরনের পরিসেবাই পাওয়া যায়।

ওই এলাকায় গেলে মনেই হবে না যে এটা ঢাকার বাইরে অন্য কোনও শহরের রাস্তা।

তবে জুলাই মাস থেকে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতে বাংলাদেশিদের আসা কমে গিয়েছিল। আর আগস্ট থেকে তা একরকম বন্ধই হয়ে গেছে।

মার্কুইস স্ট্রিটের হোটেল মালিকদের সংগঠনের নেতা মনোতোষ সরকার বলেন, এখন শুধু মাত্র মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে মানুষ আসতে পারছেন, অথবা আগে থেকে যাদের ভিসা নেওয়া ছিল, তারা আসছেন।

তিনি বলেন, কয়েক মাস আগেও আমাদের হোটেলগুলোর ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ অকুপেন্সি রেট ছিল। এখন সেটা নেমে এসেছে মাত্র ৩০ শতাংশে।

রুম অকুপেন্সি রেট হল হোটেল ব্যবসার একটি শব্দ, যা হোটেলের মোট ঘরের সংখ্যার কত শতাংশে মানুষ থাকছেন, তার হিসাব।

অর্থাৎ হোটেলগুলিতে ১০০টি ঘর থাকলে এখন মাত্র ৩০টি ঘরে পর্যটক থাকছেন।

সরকার আরও বলেন, মার্কুইস স্ট্রিটে তো শুধু হোটেল নয়, বাংলাদেশি পর্যটকদের আরও বহু পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থা আছে। তাদেরও মূল ক্রেতা ওদেশের পর্যটকরাই। তারা এখন এতটাই কম সংখ্যায় আসছেন, যে সব ব্যবসায়ীরাই মার খাচ্ছে। বাস আসছে বাংলাদেশি পর্যটক নিয়ে, কিন্তু সেখানেও দেখা যাচ্ছে ওই ৩০ শতাংশ মতোই আসন ভর্তি হচ্ছে, বাকিটা ফাঁকা থাকছে।

কতদিন এই অবস্থা চলবে, তা অনিশ্চিত। তাই অন্য কোনও অঞ্চলের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা যায় কী না, সে ব্যাপারে ভাবনা চিন্তা শুরু করছেন মার্কুইস স্ট্রিটের হোটেল ব্যবসায়ীরা।

হাসপাতালেও রোগী কমেছে

বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে আসেন, তাদের একটা বড় অংশ স্বাস্থ্য পরিসেবার জন্য আসেন। কলকাতা হোক বা ভেলোর, চেন্নাই,বেঙ্গালুরু অথবা দিল্লি-মুম্বাই – বহু বেসরকারি হাসপাতালে বাংলাদেশের মানুষের ভিড় লেগে থাকে।

এই সব হাসপাতালগুলিতে বাংলা কথা বলা কর্মকর্তারা যেমন থাকেন, তেমনই বাংলাদেশিদের জন্য থাকে পৃথক পরিসেবা-ডেস্কও।

কলকাতার যেসব বেসরকারি হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীরা বেশী সংখ্যায় আসেন, ওই হাসপাতালগুলি বলছে গত একমাসে খুব কম রোগী সেদেশ থেকে এসেছেন।

যদিও ভারতের হাইকমিশনগুলি মেডিক্যাল ভিসা দিচ্ছে, তা সত্ত্বেও আগের তুলনায় কম সংখ্যক রোগীর দেখা পাওয়া যাচ্ছে কলকাতার হাসপাতালগুলিতে।

মনিপাল হসপিটালস্ গোষ্ঠী কলকাতার বেশ কয়েকটি হাসপাতাল অধিগ্রহণ করেছে কয়েক মাস আগে। তাদের অধীন হাসপাতালগুলিতে গড়ে ২১০০ জন বাংলাদেশি রোগী আসেন প্রতি মাসে। সেই সংখ্যাটা প্রায় এক তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে।

Facebook Comments Box

Posted ৫:২৬ এএম | রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।