মঙ্গলবার ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

বেকারদের জন্য একটি কথাও বাজেটে বলা হয়নি: মমতা

  |   শুক্রবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   8 বার পঠিত

বেকারদের জন্য একটি কথাও বাজেটে বলা হয়নি: মমতা

পূর্ব বর্ধমানের গোদা স্বাস্থ্য উপনগরীর মঞ্চ থেকে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে কার্যত গর্জে উঠলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি হওয়া বাজেটের তিনি তীব্র সমালোচনা করেন । বলেন, কেন্দ্রীয় বাজেটে বলা হয়েছে, ইনকাম ট্যাক্স এ আমরা ৫ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা স্লাব বাড়ালাম। ভালো করে শুনুন, চালাকিটা। মাছের তেলে মাছ ভেজেছে। কথার কারসাজি আর মিথ্যে স্বপ্ন দেখিয়েছি। আসলে কিছু নয়। তিনি আরো বলেন, বাজেটে বেকারদের জন্য একটি কথাও বলা হয়নি। ইলেকশন এলে বলে দু কোটি লোককে চাকরি দেবো। আর ইলেকশন চলে গেলে চার কোটি লোকের চাকরি খেয়ে নেয়। তিনি অভিযোগের সুরে জানান, কেন্দ্র এই বাজেটে ৬০ হাজার কোটি টাকা কেটে নিয়েছে। যাতে আগামী দিনে মানুষ ১০০ দিনের কাজ না করতে পারে। রাজ্যের টাকা সব কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমাদের প্রাপ্য টাকাও দিচ্ছে না। ফুড সাবসিডিও কেটে দিয়েছে। তিনি সাধারন মানুষ কে সতর্ক করে বলেন, এই সরকার বেশিদিন থাকলে সব ব্যাংক বন্ধ করে দেবে। এলআইসি উঠিয়ে দেবে। এলআইসি আর ব্যাংকের শেয়ার দিয়ে, জনগণের টাকা দিয়ে যেভাবে পার্টি এবং পার্টির কয়েকজন বিখ্যাত লোককে বাড়ানো হচ্ছে, মনে রাখবেন আপনার ব্যাংকে টাকা পাবেন কিনা। আপনারা ইন্সুরেন্স করে রাখেন ভবিষ্যতের জন্য। আগামী দিন পাবেন কিনা আপনারা জানেন না। নিত্য প্রয়োজনীয় গ্যাসের দামের প্রসঙ্গে বলেন, বাড়ালো ৫০০ টাকা আর কমালো ৪ টাকা। এই চারেই হবে হার। হাজারো জনতার ভিড়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ১৫ লাখ টাকা কেউ পেয়েছেন ? দু কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতিও মিথ্যা। ভার্চুয়ালি উনি (মোদী!) নাকি ৭২ হাজার লোকের চাকরি করে দিলেন। জানিনা উনি কিভাবে করলেন! যারা মিথ্যা বলবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন,কিছুদিনের জন্য বোকা করে রাখা যায় সবাইকে। সব সময় বোকা বানানো যায় না।


তিনি জানান,ওবিসি স্কলারশিপ বন্ধ করে দিয়েছে ,আমি চালু করে দিয়েছি “মেধাশ্রী”। সংখ্যালঘু “ঐক্যশ্রী”র টাকাও বন্ধ করে দিয়েছে অনেক। মনে রাখবেন, ঐক্যশ্রী এক লক্ষ কুড়ি হাজার ছাত্রছাত্রীকে আমরা রাজ্য সরকার থেকে দিচ্ছি। তার কারণ, আমরা চাই সংখ্যালঘু ছেলেমেয়েরা মানুষ হোক, শিক্ষিত হোক, তারা নিজের পায়ে দাঁড়াক। আমার গ্রামগঞ্জের মেয়েরা আজ পাল্লা দিচ্ছে।আমি বিশ্বাস করি, কন্যাশ্রী বিশ্বজয় করবে।
আগত ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন ,তোমরা পড়াশোনা করে এগিয়ে যাও। স্কুলে স্কলারশিপ পাবে, কলেজে পাবে এবং ইউনিভার্সিটিতেও পাবে।তোমরা ছাত্রছাত্রীরা আমাদের ভবিষ্যৎ । ১০ লাখ টাকার স্মার্ট কার্ড করে দেওয়া হচ্ছে উচ্চ শিক্ষার জন্য। কারো কাছে হাত পাততে হবে না। আমরা সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রান্টার। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের একমাত্র বাংলাই পড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। চাকরির জন্য বাইরে যাবেন না। ফালতু ফালতু জীবন নষ্ট করবেন না। খুব শীঘ্রই ডেউচা-পাঁচামি হবে। ওখানে কয়েক লক্ষ ছেলে মেয়ের চাকরি হবে। বীরভূমের পাশেই বর্ধমান। ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোর হবে।


জেলা সফর প্রসঙ্গে বলেন, আমি সব জেলায় যাচ্ছি, পরিষেবা পৌঁছে দিতে। সেন্ট্রাল এজেন্সির বিরূদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ছারপোকা কামড়ালেও সেন্ট্রাল টিম !কে ডিম খাবে খাবে, আলু ভাজা খাবে তাতেও সেন্ট্রাল টিম! ১০০ দিনের টাকা দাও, নইলে বাংলায় দুর্বার আন্দোলন হবে। যারা কাজ করেছে তাদের টাকাও দেয়নি । ২৯ হাজার বাড়ি তৈরীর পরিকল্পনা নিয়েছি । কিন্তু কেন্দ্র সরকার প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না । ১১ লক্ষ লোকের বাড়ির টাকা আটকে দিয়েছে। বাংলার বাড়ি দিচ্ছে না । আবাস যোজনার ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, একটা গরিব লোককে বাড়ি দেবে বলছে, তোমার বাড়িতে স্কুটি থাকলে তুমি নাকি বাড়ি পাবে না। তোমার ছেলেমেয়েরা যদি স্কলারশিপ পায়, পরিবারে কেউ চাকরি করলে তুমি বাড়ি পাবে না । তাহলে কে বাড়ি পাবে বলুন তো? এক লক্ষ কোটি টাকার উপর আমরা কেন্দ্র সরকারের কাছে টাকা পায়।
পূর্ব বর্ধমানকে তিনি কৃষি বিপ্লবের জেলা বলে আখ্যায়িত করেন এবং এই শস্যগোলার কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কৃষকবন্ধুরা , আপনারা ভালো করে কৃষজ দ্রব্য উৎপন্ন করুন। আপনাদের পাশে সরকার আছে। সব রকম সুবিধা দেবো। বাংলায় আমরা লড়ে যাব। বাংলায় গরিব মানুষ যদি এক মুঠো না খেতে পায়, মনে রাখবেন সেদিন আমিও খাই না।


তিনি বাক স্বাধীনতা হরণ প্রসঙ্গে বলেন, মিথ্যা কথা শুনে প্ররোচিত হবেন না । মিথ্যা কথা ভাইরাল করা হচ্ছে টাকা দিয়ে। মিডিয়ার কোনো স্বাধীনতা নেই। সত্যি কথা জানতে পারবেন না । পাশাপাশি এও বলেন,আমার মুখ বন্ধ করা যাবে না আমি গরিবের জন্য কথা বলি।আমি হিন্দু, মুসলমান ,শিখ, ক্রিশ্চান, তপশিলি বন্ধু, জয় জোহার সবার জন্য কথা বলি, বলব। বাংলা যে তাঁর আবেগ, তা স্মরণ করিয়ে তিনি তিনি বলেন, বাংলা কখনো হারে না। হারতে জানে না। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কত লড়াই করেছিলেন! বাংলার অ্যাসেম্বলি থেকে প্রথম বাবাসাহেব আম্বেদকর নির্বাচিত হয়ে দিল্লির পার্লামেন্টে গিয়েছিলেন, অনেকেই এ তথ্য জানেন না। আমি গর্বিত বর্ধমানকে দেখে ,বাংলাকে দেখে। বাংলার রূপ আমার কাছে সবুজ রূপ, মায়ের রূপ, মনের রূপ,আম্মার রূপ,মাদারের রূপ! অন্যদিকে,বিজেপির রাজ্যগুলিতে অত্যাচার করা ছাড়া, সন্ত্রাস করা ছাড়া আর কোন কাজ নেই।
তিনি জেলাবাসীদের আশ্বস্থ করে বলেন, মনে রাখবেন, বাংলা একমাত্র রাজ্য যেখানে শান্তি আছে, যেখানে সম্প্রীতি আছে ,যেখানে উন্নয়ন আছে।
এদিনের সভা মঞ্চ থেকে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস ও শুভ সূচনাও করা হয়।

Facebook Comments Box

Posted ৪:২৭ এএম | শুক্রবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।