নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট | 144 বার পঠিত
কুমিল্লার দেবিদ্বারে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় খুন করা হয় গৃহবধূ শাহনাজ বেগমকে। আর এমনটা করেছে তারই প্রেমিক। সোমবার বিকালে ঘাতক মহিউদ্দিন কুমিল্লার আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রাতে দেবিদ্বার থানার ওসি শামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা ইউসুফপুর এলাকার একটি কালভার্টের নিচ থেকে শাহনাজের লাশ উদ্ধার হয়। প্রথমে পরিচয় পাওয়া না গেলেও পরে জানা যায়, ওই নারী মুরাদনগর উপজেলার বাখরনগর এলাকার শাহ আলমের স্ত্রী। এরমধ্যেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, শাহনাজের স্বামী দীর্ঘদিন ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী। এ সুযোগে মহিউদ্দিন (৩৫) নামের এক বাসচালকের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এ গৃহবধূর। এর জেরে প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দেন ওই নারী। এতে দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে শাহনাজকে মাথায় রড দিয়ে আঘাতের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন মহিউদ্দিন।
পুলিশ সূত্র বলছে, দ্রুত বিয়ে না করলে মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন শাহনাজ। গত ৫ মার্চ রাতে প্রেমিকাকে মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারে ডেকে আনেন মহিউদ্দিন। পরে তাকে নিজের চালানো বাসে তুলেন তিনি। বাসের ভেতরেই বিয়ে নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। ওই রাতেই শাহনাজকে কুমিল্লা–সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের গোপালনগর গ্যাস ফিল্ড সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যায় মহিউদ্দিন। সেখানে নিয়ে ওই নারীর মাথায় আঘাত করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে পরনের শাড়ি দিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। সেদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে লাশ ইউছুফপুর সেতুর নিচে লাশ ফেলে চলে যান ওই ঘাতক।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রোববার বিকালে কোম্পানীগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে মহিউদ্দিনকে আটক করে দেবিদ্বার থানা পুলিশ। পরে তার কাছ থেকে নিহত নারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের পরদিন অর্থাৎ ৬ মার্চ রক্তমাখা বাসটি ধুয়ে পরিষ্কার করে হত্যার আলামত নষ্ট করেন ঘাতক। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন হেলপার আবদুস সাত্তার। কোম্পানীগঞ্জ এলাকা থেকে রোববার সন্ধ্যায় র্যাব-১১ হেলপারকে আটক করে। পরে তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দেবিদ্বার থানার ওসি শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘ইউছুফপুর এলাকা থেকে অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করি। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ছবি দেখে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় ৭ মার্চ ওই নারীর বড় ছেলে বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি ছিল ক্লুলেস। পরবর্তী সময়ে তদন্তের মাধ্যমে মূল আসামি ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়।’
ওসি আরও বলেন, ‘দুই আসামির মধ্যে মহিউদ্দিন কুমিল্লার জ্যৈষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৪ নাম্বার আমলি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। সেখানে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।’
Posted ৭:২৬ এএম | মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।