নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট | 108 বার পঠিত
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সাত দফা দাবিতে টানা চার দিন ধরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে চলছে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের কর্মসূচি। গতকাল শনিবার মহাখালীতে কলেজের সামনে ও পরে সন্ধ্যায় গুলশান-১ নম্বর গোলচত্বরে তারা সড়ক অবরোধ করেন। এ অবরোধে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গত ২৯ জানুয়ারি থেকে তিতুমীর কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে অনশন শুরু করেন। এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় গতকাল দু’জনসহ এখন পর্যন্ত সাতজনকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি দুই শিক্ষার্থী হলেন– উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মফিজুল ইসলাম ও বাংলা বিভাগের আবু নাঈম। এ ছাড়া অনশনরত ৯ শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছে। তাদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। একজন চিকিৎসক ও দু’জন নার্সকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সাত দফা দাবিতে টানা চার দিন ধরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে চলছে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের কর্মসূচি। গতকাল শনিবার মহাখালীতে কলেজের সামনে ও পরে সন্ধ্যায় গুলশান-১ নম্বর গোলচত্বরে তারা সড়ক অবরোধ করেন। এ অবরোধে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গত ২৯ জানুয়ারি থেকে তিতুমীর কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে অনশন শুরু করেন। এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় গতকাল দু’জনসহ এখন পর্যন্ত সাতজনকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি দুই শিক্ষার্থী হলেন– উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মফিজুল ইসলাম ও বাংলা বিভাগের আবু নাঈম। এ ছাড়া অনশনরত ৯ শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছে। তাদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। একজন চিকিৎসক ও দু’জন নার্সকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া অনশনে রয়েছেন ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, গণিত বিভাগের আমিনুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের মো. বেলাল হাসান, দুর্বার মামুন, এহতেসাম, হুমায়ুন কবির, মাফিজুল ইসলাম, রাব্বি ইসলাম ও মাইনউদ্দিন।
দুপুর দেড়টার দিকে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের চিকিৎসক রাসেল আহম্মেদ তাদের সবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তিনি জানান, আটজন যারা এখনও অনশনে রয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের শরীর দুর্বল। দীর্ঘ সময় ধরে কিছু না খাওয়ায় তারা পানিশূন্যতায় চলে গেছেন। তাদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের রক্তচাপ কম, বমি ভাব আসছে, কেউ উঠে দাঁড়াতে পারছেন না। এ রকম আরও চলতে থাকলে বিপদ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
মহাখালী ও গুলশানে সড়ক অবরোধ
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিসহ সাত দফা দাবি আদায়ে গতকাল সন্ধ্যায় গুলশান-১ নম্বর গোলচত্বর অবরোধ করেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। এতে গোলচত্বরের চারদিকে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আন্দোলনকারীদের একজন তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী জাহিদ রানা বলেন, আমরা ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়াসহ সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। আমার ভাইয়েরা এ নিয়ে অনশন করে যাচ্ছে, অথচ প্রশাসন বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই আমরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এখানে সড়ক অবরোধ করেছি।
টানা তৃতীয় দিনের মতো শনিবার সড়ক অবরোধের কারণে রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা, মহাখালী ও তেজগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে এই সড়কে চলাচলকারী মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশেষ করে অফিসফেরত মানুষকে দীর্ঘ সময় যানজটে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অনেক যাত্রীকে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
এর আগে ঘোষিত অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে মহাখালীতে সড়ক অবরোধ করেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর আবার কলেজের সামনে ফিরে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তারা গুলশান-১ নম্বর চত্বরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।
এ সময় যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় মহাখালী আমতলী এলাকায় জলকামানসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, তারা সতর্ক রয়েছেন।
এর আগে গত শুক্রবারও তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কটি অবরোধ করেন। সেদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে গতকাল বিকেল ৪টার মধ্যে দাবি মানা না হলে আবার সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববারও আমরণ অনশনের পাশাপাশি ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা। এই কর্মসূচির আওতায় ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হবে। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বিশ্ব ইজতেমা ও আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি শিথিল থাকবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকার সাতটি কলেজের সমন্বয়ে একটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি তিতুমীর কলেজের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা আদায়ে সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা নেই।
এতে বলা হয়, ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞ কমিটি তিতুমীর কলেজসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এই কলেজগুলোর শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা ও মানোন্নয়নই বর্তমানে সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এ ক্ষেত্রে করণীয় সব বিকল্পই বিবেচনায় থাকবে। এ জন্য আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করা হয়েছে। জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়, এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সর্বস্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সরকার সব সময় সচেতন ও সহানুভূতিশীল রয়েছে।
Posted ৪:১৯ এএম | রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।