শনিবার ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

ছাত্রলীগ নেতার প্রক্সি দেন ভুয়া পরীক্ষার্থী, অবশেষে ধরা

ডেস্ক রিপোর্ট   |   মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   117 বার পঠিত

ছাত্রলীগ নেতার প্রক্সি দেন ভুয়া পরীক্ষার্থী, অবশেষে ধরা

চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়ার অপরাধে এক ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটকের পর এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সোমবার (১ জুলাই) চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। টানা আটদিন প্রক্সি দেওয়ার পর নবমতম দিনে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শনাক্ত হন ওই ভুয়া পরীক্ষার্থী।

দণ্ডপ্রাপ্ত শামীম আহম্মেদ তুষার জীবননগর পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. খোকনের ছেলে এবং যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। মো. শহীদুজ্জামান বিল্পবের বাবা আবুল কাশেম জীবননগর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। শহীদুজ্জামান কলেজ জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা গ্রহণের কেন্দ্র চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজ। এই কেন্দ্রে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। পরীক্ষায় অংশ নেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুজ্জামান। কিন্তু তার পরিবর্তে আগের টানা আটটি পরীক্ষাসহ সোমবারে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষাটিও দিচ্ছিলেন ভুয়া পরীক্ষার্থী শামীম আহম্মেদ তুষার।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে হলে উপস্থিত হন জেলা কালেক্টরেটের সহকারী কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমাইয়া জাহান নাঈমা। সেখানে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন, ১৯৮০-এর ৩ ধারা অনুযায়ী ভুয়া পরীক্ষার্থীকে এক বছরের জেল প্রদান করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সহকারী কমিশনার সুমাইয়া জাহান নাঈমা বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় ভুয়া পরীক্ষার্থীকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। আর যিনি প্রকৃত পরীক্ষার্থী তাকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তার ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ কলেজ কৃতর্পক্ষ নেবে।

তিনি আরও জানান, গোপন খবর পেয়ে আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন। তার কথাও প্রথম দিকে দৃড় কণ্ঠে ছিল। পরীক্ষার্থীর বাবার ফোন নম্বর চাওয়া হলে ভুয়া পরীক্ষার্থী আসল পরীক্ষার্থীর নম্বর প্রদান করেন। তার সঙ্গে কথা বলে আরও বেশি সন্দেহ হয়। তিনি যে ওই পরীক্ষার্থীর বাবা নন, সেটি কথা শুনেই স্পষ্ট মনে হচ্ছিল। তারপর ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করায় দু’জনের কথার মিল পাওয়া যায় না। পরবর্তীতে ভুয়া পরীক্ষার্থী স্বীকার করেন। এছাড়াও তার কাছে একটি মুঠোফোন পাওয়া যায়।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক মামুন অর রশিদ বলেন, অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় ২১৫ নম্বর কক্ষে ইতিহাস বিভাগের শহীদুজ্জামান নামের এক পরীক্ষার্থীর পক্ষে শামীম আহম্মেদ তুষার নামে একজন প্রক্সি দিচ্ছিলেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরীক্ষা চলাকালে তাকে শনাক্ত করেন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে এক বছরের সাজা প্রদান করেন। এরইমধ্যে আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষ মূল পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছি।

পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থী কীভাবে মুঠোফোন নিয়ে প্রবেশ করলো, এমন প্রশ্নের উত্তরে এই শিক্ষক বলেন, এসব কথা লেখার প্রয়োজন নেই।

তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে আটটি পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়ার ব্যাপারটি ছড়িয়ে পড়লে সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের পরীক্ষা সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে একজন চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীর টানা আটদিন প্রক্সি দেওয়া এবং নবম দিনে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে শনাক্ত সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলেছে।

তবে চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, কলেজের সিনিয়র শিক্ষক এটি জানতেন। তাছাড়া ছাত্রলীগ নেতা সেটাও কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানতেন। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সময় এটি কেউ বলেননি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক (কমিটি নেই) সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ বলেন, শহীদুজ্জামান বিল্পব জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। প্রায় সাত বছর আগে কমিটি হয়েছে। সে পরবর্তীতে মনে হয় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছে।

জীবননগর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মো. শহীদুজ্জামান বিপ্লবের বাবা আবুল কাশেম বলেন, আমি অতো শিক্ষিত না। আমার ছেলে কী করেছে সেটা আমি জানতাম না। জানলেতো তাকে এই কাজ করতে দিতাম না।

 

Facebook Comments Box

Posted ৬:১৮ এএম | মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।