নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫ | প্রিন্ট | 149 বার পঠিত
দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূলহোতা ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট শাসক হয়ে ওঠার পেছনে মুখ্য ভূমিকা ছিল তার। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন। জনরোষ থেকে বাঁচতে পালিয়ে এখন আত্মগোপনে। একটি সূত্র জানায়, গত বছর ১৩ আগস্ট পদত্যাগের পর প্রথমে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত যান। সেখান থেকে পাড়ি দেন যুক্তরাজ্যে। ওঠেন মেয়ের বাসায়। তবে এখন ওই বাসায়ও নেই তিনি। অন্য কোথাও আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। তার এ পালিয়ে যাওয়া নিয়ে জনমনে উঠেছে প্রশ্ন-কীভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশ ছাড়লেন তিনি?
বিচারাঙ্গনে আলোচিত-সমালোচিত এই বিচারপতির আচরণের চেয়েও বেশি বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল তার কয়েকটি রায়, যা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য সুবিধাজনক বা এর সমর্থনসূচক ছিল। এসব রায় নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি তার নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। তিনি নিজে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানাভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ডিঙিয়ে। প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ত্রাণ তহবিলের টাকা গ্রহণ করে নিজের চিকিৎসা করে সমালোচিত হয়েছিলেন। অবসর গ্রহণ করার কয়েকদিন আগে তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেন; যার ফলে দেশে রাজনৈতিক সংঘাতের পথ উন্মুক্ত হয়। নিজেরই দেওয়া সংক্ষিপ্ত আদেশ থেকে বিতর্কিতভাবে সরে এসে রায় দেন, যার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ভোট ডাকাতির চূড়ান্ত সুযোগ তৈরি হয়।
এসব ছাড়াও খায়রুল হক নানা কারণে আলোচিত ছিলেন। রাজনৈতিক একটি বিষয়কে আদালতের আওতাধীন করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন বলে রায় দিয়েছিলেন তিনি। ওই রায় রাজনৈতিক শক্তিগুলোর একটি অংশকে যেমন খুশি করেছিল, অন্য অংশকে তেমনই ক্ষুব্ধ করেছিল। রাজনৈতিক বিষয়ে ওই রায়ের সঙ্গে তার প্রতি সরকারের বিশেষ সুদৃষ্টির সম্পর্ক নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন অস্বস্তিকর সন্দেহ ছিল। সেই সন্দেহ তিনি উসকে দেন অবসর গ্রহণের প্রায় দুই বছর পর আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণ করে। মূলত দেশের বিচার বিভাগের উচ্চাসনে বসে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করাই ছিল তার মূল কাজ।
Posted ৫:৩২ এএম | শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।