| শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০২২ | প্রিন্ট | 114 বার পঠিত
প্রায় ৭০ বছর ধরে কল্পিত এক রেখা তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে শান্তি বজায় রেখে চলেছে। ভূখণ্ড দুটিকে আলাদা করেছে তাইওয়ান প্রণালি বরাবর ওই মধ্যবর্তী রেখাটিই। কিন্তু চীনের নৌবাহিনীর সাম্প্রতিক জোরালো ক্ষমতা প্রদর্শনের সামনে সেই রেখার কার্যকারিতা ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে বলেই ধারণা তাইওয়ানি কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকদের।
স্নায়ুযুদ্ধ তুঙ্গে থাকার সময় ১৯৫৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এক জেনারেলের টেনে দেওয়া ওই মধ্যবর্তী সীমারেখা কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে নেয়নি চীন।
তার পরও ওই রেখা শান্তি রক্ষায় নীরব একটি ভূমিকা রেখে এসেছে। গোলমাল বাধে গত মাসে। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে। এর পরপরই বড় ধরনের সামরিক মহড়া করে ক্ষুব্ধ বেইজিং।এর পর থেকে তাইওয়ানের সীমানা ঘেঁষে চীনের রণতরির টহল নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই অঞ্চলের নিরাপত্তাবিধানের দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তাইওয়ানি কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা আমাদের ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে, যাতে শেষ পর্যন্ত আমরা মধ্যবর্তী রেখা ছেড়ে দিই। ’
তাইওয়ান দৃশ্যত সহজে হাল ছাড়ছে না। চলতি মাসেই স্বশাসিত দ্বীপটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ বলেছেন, ‘স্থিতাবস্থার পরিবর্তন সহ্য করা হবে না। সমমনা অংশীদারদের সঙ্গে আমাদের হাত মিলিয়ে মধ্যবর্তী রেখা বহাল রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তাইওয়ান প্রণালির শান্তি ও স্থিরতা সুরক্ষিত রাখা যায়। ’
প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বারবারই বলেছেন, তাইওয়ান কোনো ধরনের দ্বন্দ্বে ইন্ধন জোগাবে না এবং পরিস্থিতি প্রতিকূল করে তুলবে না। তবে অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি না করে ওই রেখা রক্ষা করাটা কঠিনই হবে তাইওয়ানের জন্য।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে চীনের যুদ্ধজাহাজকে তাইওয়ানের পাশ থেকে সরিয়ে দিতে আন্তর্জাতিক সমর্থন যথেষ্ট হবে কি না, বা তাইওয়ানের বন্ধুরা এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসবে কি না।
প্রসঙ্গত, তাইওয়ান প্রণালি প্রায় ১৮০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এই রেখার সংকীর্ণতম স্থানটিও তাইওয়ানের জলসীমা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ইউরোপীয় নৌবাহিনীর জাহাজ তাইওয়ান প্রণালি ধরেই চলাফেরা করে। কিন্তু তা শুধু আন্তর্জাতিক মান রক্ষার্থেই। কঠোরভাবে তাইওয়ানের কল্পিত রেখাকে বৈধতাদানের জন্য নয়।
নিজেদের প্রতিরক্ষা প্রশ্নে তাইওয়ান নতুন করে সাহস পাচ্ছে নতুন মার্কিন অতিথিদের কারণে। অন্তত তা-ই বলছেন স্বশাসিত ভূখণ্ডটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। সম্প্রতি মিত্র দেশগুলোর বেশ কয়েকটি প্রতিনিধিদল তাইওয়ান সফর করেছে। গতকাল শুক্রবারও তাইওয়ান সফরে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন সাই ইং-ওয়েন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাইওয়ান সফরে যাওয়া তৃতীয় প্রতিনিধিদল এটি। সূত্র : রয়টার্স
Posted ৩:৫৭ পিএম | শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০২২
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।