মঙ্গলবার ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

ঢাকায় জমির কাঠা সর্বোচ্চ ৭ কোটি ৭৫, নিচে ৬০ লাখ!

  |   শনিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   22 বার পঠিত

ঢাকায় জমির কাঠা সর্বোচ্চ ৭ কোটি ৭৫, নিচে ৬০ লাখ!

‘কূটনৈতিক পাড়া’ নামে খ্যাত রাজধানী ঢাকার বারিধারা এলাকাটি । কূটনীতিকদের বসবাসের সুবিধার্থে নির্মিত এ এলাকায় অনেক দেশের দূতাবাসও রয়েছে। শুধু কূটনৈতিকদের জন্য নয়, সাধারণ ও ডিফেন্স অফিসার্স হাউজিং সোসাইটির (ডিওএইচএস) সদস্যদের আবাসিক এলাকাও এখানে। ‘বসবাসের নিরাপদ জায়গা’ হিসেবে খ্যাত এলাকাটির জমির দাম ঢাকার অন্যান্য এলাকাকে টেক্কা দিয়ে এখন আকাশ ছুঁইছুঁই করছে।

আবাসন ব্যবসায়ীদের ২০২১ সালের দাম অনুযায়ী বারিধারা আবাসিক এলাকায় কাঠাপ্রতি জায়গার দাম সবচেয়ে বেশি। এখানে প্রতি কাঠা জায়গার মূল্য গড়ে ধরা হয়েছে সাত কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আর বাণিজ্যিক এলাকায় জায়গার দাম বেশি মতিঝিলের। সাব-রেজিস্ট্রারের সবশেষ ঘোষিত মূল্য অনুযায়ী মতিঝিলের জমি কাঠাপ্রতি দুই কোটি ৭৯ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮৫ টাকা। তবে সাব-রেজিস্ট্রারের মূল্য এবং বর্তমান বাজারমূল্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক।

সরকারিভাবে জমি এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্লটের রেট শিডিউল (মূল্য তালিকা) হালনাগাদের কাজটি করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। ঢাকার জমি ও প্লটের রেট শিডিউল সবশেষ হালনাগাদ করা হয়েছিল ২০১১ সালে। এর এক যুগ পর তা আবার হালনাগাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য এলাকাভেদে গণপূর্ত অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত জমির নতুন বাজারমূল্য নির্ধারণ করার কার্যক্রম চলছে। জমির পাশাপাশি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্লটের দামও ঠিক করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের আওতায় ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য এলাকার জমির বাজারমূল্যও পুনর্নির্ধারণ করা হবে। 

আবাসন ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের সবশেষ তথ্যানুযায়ী, আবাসিক এলাকায় প্লটের দাম সবচেয়ে বেশি বারিধারায়। এ এলাকায় কাঠাপ্রতি গড় জমির দাম সাত কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা ২০২০ সালে ছিল ৬ কোটি টাকা। আর জমির দামের দ্বিতীয় অবস্থানে গুলশান। এ এলাকায় কাঠাপ্রতি জমির দাম ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ধানমন্ডি এলাকায় কাঠাপ্রতি ৫ কোটি ৫০ লাখ, বনানী ৪ কোটি, লালমাটিয়ায় ৩ কোটি ৫০ লাখ, মতিঝিলে ২ কোটি ৫০ লাখ, মহাখালী ও কারওয়ান বাজারে ২ কোটি, মোহাম্মদপুরে ১ কোটি ৫৫ লাখ, আজিমপুর ও শান্তিনগরে ১ কোটি ৫০ লাখ, উত্তরা ও শ্যামলীতে ১ কোটি, মিরপুরে ৮০ লাখ, গেন্ডারিয়া ও বাসাবোয় ৭৫ লাখ, কল্যাণপুরে ৭০ লাখ, বাড্ডায় ৬০ লাখ টাকা।

অন্যদিকে সবশেষ ২০২২ সালের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মৌজাভিত্তিক দর অনুযায়ী মতিঝিলের এক কাঠা জমির দাম (বাড়ি) ২ কোটি ৩১ লাখ ৮ হাজার ৫৮০ টাকা। খালি জায়গা মানে ভিটির কাঠাপ্রতি দাম ৭৩ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা। আর বাণিজ্যিক প্লটের কাঠাপ্রতি বরাদ্দ বা হস্তান্তর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮৫ টাকা। সাধারণ জমির বাজারমূল্যে মতিঝিলের পর সবচেয়ে বেশি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে কারওয়ান বাজারের জমির। কারওয়ান বাজারের প্রতি কাঠা জমির বাজারমূল্য ১ কোটি ৪৯ লাখ ৬১ হাজার ৫৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বাণিজ্যিক প্লটের কাঠাপ্রতি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৪৮ হাজার ৪৭৫ টাকা। 

একইভাবে কাকরাইলের জমির কাঠাপ্রতি (বাড়ি) ১ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ৫৯০ টাকা। আর বাণিজ্যিক প্লটের কাঠাপ্রতি ১ কোটি ৭৬ লাখ ৪৮ হাজার ৭০ টাকা। রমনায় জমির দাম কাঠাপ্রতি ১ কোটি ১০ লাখ ৬ হাজার ৪৯০ টাকা। খিলগাঁও বাণিজ্যিক এলাকায় কাঠাপ্রতি ১ কোটি ৭৯ লাখ ২৮ হাজার ৯০০ টাকা। ওয়ারীতে কাঠাপ্রতি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার ৫৫৫ টাকা, বাণিজ্যিক প্লটের কাঠাপ্রতি ১ কোটি ৮৬ লাখ ১২ হাজার ৪৯৫ টাকা। যাত্রাবাড়ীতে কাঠাপ্রতি ২৫ লাখ ৪৫ হাজার ৮৪২ টাকা, বাণিজ্যিক এলাকার কাঠাপ্রতি ১ কোটি ৫১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ধানমন্ডির জমি কাঠাপ্রতি ৭৬ লাখ ২২ হাজার ৫০৫ টাকা এবং ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার কাঠাপ্রতি মূল্য ৭৪ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ টাকা। একই সঙ্গে ধানমন্ডির বাণিজ্যিক প্লটের কাঠাপ্রতি ১ কোটি ২৩ লাখ ১০ হাজার ৩২০ টাকা এবং আবাসিক এলাকার বাণিজ্যিক প্লটের মূল্য কাঠাপ্রতি ১ কোটি ৭ লাখ ৪২ হাজার ১৬০ টাকা।

গুলশানে প্লট কাঠাপ্রতি (বাড়ি) ২৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৫ টাকা ও বনানীর কাঠাপ্রতি ৪৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫০ টাকা এবং মহাখালীর কাঠাপ্রতি ৯৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৯০ টাকা। একই সঙ্গে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ৫৯ লাখ ৪৪ হাজার ৭৮৫ টাকা আর বাণিজ্যিক কাঠাপ্রতি ৮৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৩০ টাকা। মোহাম্মদপুরে কাঠাপ্রতি ৫৬ লাখ ১৬ হাজার ৪৩৫ টাকা, বাণিজ্যিকে কাঠাপ্রতি ১ কোটি ৮৬ লাখ ১২ হাজার ৪৯৫ টাকা। মেরাদিয়ায় কাঠাপ্রতি ৪৫ লাখ ৯৭ হাজার ৩৯৫ টাকা। আর বাণিজ্যিকে কাঠাপ্রতি ১ কোটি ৭৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। লালবাগে কাঠাপ্রতি ৭৮ লাখ ৭২ হাজার ৮১০ টাকা, বাণিজ্যিকে ৮৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা মূল্য ধরা হয়েছে।

তবে আবাসন খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নির্ধারিত বাজারমূল্য এবং সাব-রেজিস্ট্রারের বাজারমূল্যের চাইতে অনেক বেশি দামে জমি কেনাবেচা হচ্ছে। তাদের ভাষ্যমতে, ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও নিবন্ধন খরচ বেশি হওয়ার কারণে এসব এলাকায় এখন নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দরে জমি কেনাবেচা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)-এর সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল বলেন, সরকারি মূল্য অনুযায়ী জমির দাম বেশি। জমি নিবন্ধন খরচও অনেক বেশি। বর্তমানে জমি নিবন্ধন খরচ ১১ শতাংশের ওপরে। প্রতিবেশী দেশগুলোয় যেখানে নিবন্ধন খরচ ৩ শতাংশের মতো সে তুলনায় আমাদের নিবন্ধন খরচ অনেক বেশি। কেনার সময় জমি নিবন্ধন করতে গিয়েই বড় অঙ্কের টাকা চলে যায়।

জমির রেট শিডিউল হালনাগাদের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব করেছিলাম জমি থেকে রাস্তার দূরত্বভেদে দাম নির্ধারণ করার। আশা করব, রেট শিডিউলটি চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

জমির মূল্য নির্ধারণের বিষয়গুলো এরই মধ্যে রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর বোর্ডসভায় অনুমোদিত হওয়ার কথা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, সর্বশেষ সমন্বয় বৈঠক হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বরে। মূল্য নির্ধারণে খসড়া হয়েছে, এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের কাজ চলমান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রেট শিডিউল হালনাগাদ করে তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সরবরাহ করা হবে।

Facebook Comments Box

Posted ৯:৩৫ এএম | শনিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(165 বার পঠিত)
ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।