নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট | 107 বার পঠিত
রংপুর বিভাগে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ ‘শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫’ পালিত হয়েছে।
দিবসটি উদযাপনের জন্য রংপুর বিভাগের আটটি জেলা এবং সকল উপজেলায় জেলা প্রশাসন এবং অন্যান্য সংগঠন কর্তৃক গৃহীত দিনব্যাপী কর্মসূচিতে শত শত মানুষ গভীর আবেগ, দেশাত্মবোধক ও উৎসাহের সাথে অংশগ্রহণ করেন।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়, বাংলা বর্ণমালা খচিত ছোট জাতীয়ও রঙিন পতাকা দিয়ে শহরের রাস্তা সাজানো, ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি এবং রচনা লেখার প্রতিযোগিতার আয়োজন।
এছাড়াও, ভাষা আন্দোলনের শহিদদের এবং দেশের সকল আন্দোলনের সকল শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
বিভাগীয় নগরী রংপুরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে মধ্যরাত এক মিনিটে পাবালিক লাইব্রেরী চত্বরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটি পালনের কর্মসূচী শুরু হয়।
রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, বাংলাদেশ পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এবং রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার প্রথমে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার (এসপি), বিএনপি এবং এর সহযোগী সংগঠন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জাতীয় পার্টি, সিপিবি, বাসদ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ও সহযোগী সংগঠনের জেলা ও শহর ইউনিটের নেতারা, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও বিভাগ এবং পেশাদার সংগঠনের প্রধানরা এবং সাধারণ মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বিভাগীয় কমিশনার মো. শহীদুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন।
পাকিস্তানি শাসনামলে এ দেশের মানুষ সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকসহ সকল দিক থেকেই নিপীড়ন ও সীমাহীন বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন।
১৯৫২ সালের এই দিনে, সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ আরও অনেকে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার জন্য রক্ত দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘তাদের আত্মত্যাগ ছিল বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সূচনা।’
তিনি ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে আলিঙ্গন করে সকল স্তরে বাংলা ভাষা সঠিকভাবে ব্যবহার করার আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মূল আলোচনা, ভাষা আন্দোলনের বীর সৈনিকদের সংবর্ধনা, পুরস্কার বিতরণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে, বিভাগীয় কমিশনার এবং রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনায় বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী, পুলিশ সুপার আবু মো. সাইম এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, তিস্তা বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর মেডিকেল কলেজ, কারমাইকেল কলেজ, বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজ এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করেছে।
রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা এবং কুড়িগ্রাম জেলা ও সকল উপজেলা থেকেও অনুরূপ কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে যথাযথ মর্যাদায় ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫’ পালনের খবর পাওয়া গেছে।
Posted ১:৩৭ পিএম | শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।