বুধবার ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা প্রলম্বিত করা যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   140 বার পঠিত

শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা প্রলম্বিত করা যাবে না

জানুয়ারির ৭ তারিখে এসেও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ পাঠ্যবই সম্পর্কে আশার বাণী শোনাতে পারেননি। তা ছাড়া বিগত বছরগুলোতে সরকার মার্চের আগে বই পুরোপুরি দিতে পারেনি—শিক্ষা উপদেষ্টার এমন মন্তব্য বর্তমানের অব্যবস্থাপনাকে কোনোভাবেই জায়েজ করে না।

ওই দিন সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘বইয়ের সিলেবাস, কারিকুলাম নতুন করে করতে হয়েছে। বইয়ের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। বিদেশে কোনো বই ছাপানো হচ্ছে না। দেশের সক্ষমতা কত, সেটি এবারই প্রথম দেখা যাচ্ছে। এতে করে তো দেরি হবেই।’

এবারে বই ছাপার কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে কিংবা পরিমার্জন করতেও সময় লেগেছে, এ কথা কেউ অস্বীকার করবেন না। পাঠ্যক্রম সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। আর এখন শিক্ষা উপদেষ্টা আর্ট পেপার ঘাটতির দোহাই দিচ্ছেন। পাঠ্যবইয়ে কী পরিমাণ আর্ট পেপার বা অন্য কাগজ লাগবে, সেটা কর্তৃপক্ষের অজানা নয়। তারা আগেভাগে তার ব্যবস্থা করতে পারলেন না কেন? এখানে যদি কারও গাফিলতি থেকে থাকে, তবে তঁাদের অবশ্যই জবাবদিহির ব্যবস্থা করতে হবে। তবে উপদেষ্টার যে কথাটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন করে সেটি হলো, ‘কবে নাগাদ সবাই সব বই পাবে, এটা আমি জানি না।’ প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি না জানলে কে জানবেন? আশার কথা, বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে ৯ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাকে বলা যায় মন্দের ভালো। জানুয়ারিতে না পেয়ে শিক্ষার্থীরা ফেব্রুয়ারির মধ্যে বই পাবে।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, নতুন শিক্ষাবর্ষে চার কোটির মতো শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৪১ কোটি বই ছাপানো হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের মোট পাঠ্যবই ৯ কোটি ৬৪ লাখের মতো। ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ছাড়পত্র (প্রাক্-সরবরাহ পরিদর্শন বা পিডিআই) হয়েছে ৪ কোটি ২৪ লাখের মতো বই। অবশ্য ছাপা হয়েছে আরেকটু বেশি, ৪ কোটি ৮১ লাখের মতো। এর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার অগ্রগতি অনেক ভালো; কিন্তু চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ৪ কোটির বেশি বইয়ের মধ্যে ১৬ শতাংশের মতো ছাড়পত্র হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা কিছু বই পেলেও ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থীরা এখনো নতুন বই পায়নি। প্রাথমিকে ইংরেজি ভার্সনের মোট পাঠ্যবই ৫ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি। আর মাধ্যমিকে তা ২১ লাখ ৬৭ হাজারের মতো; কিন্তু গতকাল পর্যন্ত ইংরেজি ভার্সনের বইগুলো ছাপার কাজ শেষ হয়নি।

মুদ্রণকারীদের অভিযোগ, এনসিটিবির হিসাবে প্রায় ৩৪ কোটি বইয়ের ছাড়পত্র বাকি। প্রতিদিন যদি গড়ে ৫০ লাখ করে বইয়ের ছাড়পত্র দেওয়া হয়, তাতেও আরও প্রায় ৬৮ দিন লাগতে পারে। এবার ছাপার কাজ যেমন দেরিতে শুরু হয়েছে, তেমনি এখন আবার কাগজের সংকটও দেখা দিয়েছে।

পাঠ্যবই সংশোধিত হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অনেক বিষয় পাঠ্যবইয়ে সংযোজিত হয়েছে, অনেক বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সময়মতো বই না পেলে শিক্ষার্থীরা পড়বে কীভাবে? শিক্ষকেরাই বা কী পড়াবেন? ওয়েবসাইটে পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন দেওয়া হলেও এটি সারা দেশের সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কতটা কাজে লাগাতে পারবেন, সেই প্রশ্নও আছে। স্বীকার করতে হবে, বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর সুযোগ নেই।

অতএব, যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের হাতে সব পাঠ্যবই পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হোক।

Facebook Comments Box

Posted ১০:৩২ এএম | শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।