ডেস্ক রিপোর্ট | শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪ | প্রিন্ট | 108 বার পঠিত
ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে বৃষ্টি কম হয়েছে। ফলে উজানের পাহাড়ি ঢল নেমেছে কম। তাই সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এতে স্বস্তি ফিরেছে ভাটির জেলার মানুষের মনে। তবে দুর্ভোগ কমেনি বন্যায় আক্রান্তদের।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুরসহ সাত উপজেলার ৭৮ ইউনিয়নের ১০১৮ গ্রাম ঢলের পানিতে তলিয়ে যায়। এমনকি পানিবন্দি হয়ে এখনও চরম কষ্টে জীবনযাপন করছেন জেলার সাড়ে ছয় লাখ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার কারণে ভেসে যায় ঘরে থাকা ধান-চাল, গৃহপালিত পশু ও আসবাবপত্র। সেই সঙ্গে তলিয়ে গেছে পুকুরের মাছ ও ফসলি জমি। সেই সঙ্গে জেলা সদরের সঙ্গে এখনও সড়ক পথে যোগাযোগ বিছিন্ন রযেছে তাহিরপুর উপজেলার। এছাড়া ছাতক, দোয়ারা বাজার, জগন্নাথপুরসহ কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে দুর্গম এলাকার ৪০টিরও বেশি গ্রামের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ এখনও বিছিন্ন রয়েছে।
তবে পাহাড়ি ঢল কম নামায় ইতিমধ্যে পৌর শহরের তেঘরিয়া, আরপিন নগর, বড়পাড়া, ওয়েজখালি, মল্লিকপুর, ষোলঘর, নতুন পাড়া, মধ্য বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার হাটুসম পানি থাকলেও বর্তমানে এক থেকে দুই ইঞ্চি রয়েছে। অর্থাৎ ধীরে ধীরে পৌর শহর থেকেও পানি কমে যাওয়ায় স্বাভাবিক হচ্ছে যানবাহন চলাচল।
এদিকে ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেতে পানিবন্দি মানুষরা আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেও সেখানে পড়তে হয়েছে নতুন ঝামেলায়। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বন্যা আক্রান্তরা।
তারা জানান, সরকারিভাবে পর্যাপ্ত শুকনা খাবার পাওয়া যায়নি। সেই সঙ্গে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেও প্রতিনিয়ত ভোগান্তি বাড়ছে।
ভোগান্তিতে পড়া বেতগঞ্জের মশিউর রহমান বলেন, পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এখন ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বছর বছর বন্যার এমন ভোগান্তি কষ্টকর।
হাসন নগরের পানিবন্দি সালেহ উদ্দিন বলেন, অনেক কষ্ট আছি। চারদিকে পানি। সন্তানসহ সবাই না খেয়ে আছি।
আশ্রয়কেন্দ্র আসা তানজিলা বলেন, ভেবেছিলাম হয়ত কষ্ট কিছু কম হবে। কিন্তু এখানে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
পৌর শহরের বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, শহর থেকে পানি কমায় ও রোদ উঠায় মনে কিছুটা স্বস্তি এসেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি কম হওয়ায় সুনামগঞ্জের নদীর পানি কমেছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। ইতিমধ্যে সুনামগঞ্জ সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও তিন থেকে চারদিন লাগবে।
Posted ৬:১১ এএম | শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।