শনিবার ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

শখের বশে ছাগল পালন করেন লাখপতি তানভীর

ডেস্ক রিপোর্ট   |   রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   70 বার পঠিত

শখের বশে ছাগল পালন করেন লাখপতি তানভীর

প্রথমে শখের বশে একটি ছাগল পালন শুরু করেন। পরে গড়ে তোলেন খামার। ছাগলের সংখ্যা এখন শতাধিকের ওপর। কোরবানির ঈদ কেন্দ্র করে এরই মধ্যে খামার থেকে ৬০টি ছাগল বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলোও বিক্রির জন্য প্রস্তুত।

বলছিলাম তরুণ উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক তানভীরের কথা। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার উচিৎপুরা ইউনিয়নের আতাদী গ্রামে তানভীর অ্যাগ্রো ফার্ম গড়ে তুলেছেন তিনি। ১৬ হাজার টাকা দিয়ে ছাগল পালন শুরু করা তানভীর এখন ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকার মালিক। ধীরে ধীরে বড় করে তুলছেন খামার।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৬ সালে উচিৎপুরা ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে সদস্য পদে নির্বাচন করেছিলেন আতাদী গ্রামের ওবায়দুর রহমানের স্ত্রী শায়েস্তা বেগম। সে সময় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় একটি ছাগল দেখে পছন্দ হয় তার। ছাগলটি কিনে শখের বশে লালন-পালন শুরু করেন তিনি। এটা দেখে অনুপ্রাণিত হন তার ছেলে তানভীর। তারও ছাগল লালন-পালনে আগ্রহ জাগে। এরপর মায়ের ছাগল পালনের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন তানভীর। সেই খামারে বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক ছাগল বড় করা হয়েছে।

আব্দুর রাজ্জাক তানভীর বলেন, ‘প্রথমে শখের বশে ছাগল পালন শুরু করেছিলাম। পরে দেখি ভালোই লাভবান হওয়া যায়। এরপর বাণিজ্যিকভাবে ছাগল লালন-পালন শুরু। ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমার এখান থেকে শতাধিকের বেশি ছাগল বিক্রি হয়েছে।

তানভীর বলেন, ‘এবারের কোরবানি ঈদ কেন্দ্র করে প্রায় ১০০টি ছাগল বড় করেছিলাম। এর মধ্যে ৬০টি ছাগল বিক্রি হয়েছে। আরও ৪০টি ছাগল রয়েছে। বর্তমানে আমার এখানে একটি ছাগল রয়েছে, যার দাম ধরা হয়েছে তিন লাখ টাকা। আরেকটি ছাগলের দুই লাখ টাকা দাম ধরেছি। বাকিগুলো ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছি।

ছাগল লালন-পালনে সম্ভাবনার কথা জানিয়ে তানভীর বলেন, ‘গরুর মতো ছাগলের খাবারে তেমন খরচ হয় না। যে কারণে ছাগল লালন-পালন করে লাভজনক হওয়া যায়। গম, ভুট্টা, ছোলা, খেসারি, মাসকালাই ও ঘাস খাইয়েই ছাগল লালন-পালন করা যায়। আমি মনে করি চাকরির পেছনে ছোটাছুটি না করে এভাবে নিজেরাই উদ্যোক্তা হওয়া যায়। নিজেই নিজের কর্মসংস্থান গড়ে তোলা যায়।

তানভীরের মা শায়েস্তা বেগম বলেন, ‘প্রথমে আমিই ছাগল কিনে এনেছিলাম। পরে আমাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ছেলে ছাগল লালন-পালন শুরু করে। সেই সঙ্গে লাভের মুখ দেখতে শুরু করে। এখন সে চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই নিজের কর্মসংস্থান গড়ে তুলেছে। তার আগ্রহ দেখে আমি তাকে সহযোগিতা করি।’

ছাগল লালন-পালনের বিষয়ে তানভীরের বাবা ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে তানভীরই সব দেখাশোনা করে। আমি মাঝে মধ্যে সহযোগিতা করি। সন্তানরা ভালো কিছু করতে পারলে সব বাবা-মাই খুশি হন। আমরাও তার সফলতায় খুশি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ ফারুক আহমেদ বলেন, ‘তানভীরের মতো তরুণরা আমাদের সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা। তাকে দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছে। শুধু চাকরির পেছনে না দৌড়ে নিজেই কর্মসংস্থান গড়ে তুলেছে। এতে নিজেরা বেকারমুক্ত হচ্ছে, অন্যেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।

তানভীরকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, ‘এক সময় বলা হতো গরিবের গাভি হলো ছাগল। ছাগলের মাংস বিশ্বজুড়ে উৎকৃষ্ট মাংস। এটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমরা মনে করি তানভীরের মতো তরুণের দ্বারা শুধু বেকারত্বই দূর হচ্ছে না, পুষ্টি চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। ছাগল লালন-পালন করে নিজেরাও স্বাবলম্বী হচ্ছেন, পাশাপাশি তিনি সুষ্ঠু সবল মেধাবী জাতি গঠনে ভূমিকা রাখছেন। আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই।

 

Facebook Comments Box

Posted ১১:৫৫ এএম | রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।