রবিবার ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

২৯-৩০ জানুয়ারি বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা অধিকাংশ এলাকায় জাঁকিয়ে শীত থাকবে

  |   শনিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   15 বার পঠিত

২৯-৩০ জানুয়ারি বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা অধিকাংশ এলাকায় জাঁকিয়ে শীত থাকবে

মাঘ মাসে কনকনে ঠাণ্ডার প্রকোপ বাড়ছে দেশের অধিকাংশ এলাকায়। টানা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর এবার চলছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। কোথাও কোথাও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে বেশি। প্রতিদিন নামছে তাপমাত্রার পারদ। গতকাল শুক্রবার চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেলগুলো বিশ্লেষণ করে আবহাওয়াবিদগণ বলছেন, শৈত্যপ্রবাহ বাড়বে। রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত চলমান শৈত্যপ্রবাহ ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আজ শনিবার ও রবিবারও দেশের একাধিক জেলার তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকতে পারে। বিশ্বের সর্বাপেক্ষা নির্ভরযোগ্য আমেরিকার ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুযায়ী ২০২২ সালের ৪ এবং ৫ ফেব্রুয়ারির মতো আগামী ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, শীতের এই প্রবণতা আরও তিন দিন থাকতে পারে। এর পর থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়বে।

দেশের তিনটি এলাকাকে শীতের হটস্পট বলা হয়। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও চুয়াডাঙ্গা। এর বাইরে এবার নওগাঁর বদলগাছিতে তীব্র শীত পড়েছে। চলতি মাসে দুই দিন বদলগাছিতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও বদলগাছিতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। তবে এর এক দিন পরই গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হলো শ্রীমঙ্গলে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত চলমান শৈত্যপ্রবাহ সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। অতঃপর রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ২৪ জানুয়ারি শুধুমাত্র রংপুর বিভাগের সকল জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর, নেত্রকোনা, সিলেট বিভাগের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় সকাল বেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। উন্নতি হতে থাকবে। ঢাকার তাপমাত্রাও আগামী ১০ দিন ক্রমাগত বাড়তে পারে। আজ শনিবার ও রবিবারও রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে সকালে হালকা থেকে মাঝারি ঘনত্বের কুয়াশা পড়তে পারে। তিনি বলেন, ২৩ থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত একটি পশ্চিমা লঘুচাপ উত্তর ভারতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর ভারতীয় রাজ্য বিহার, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি ও পশ্চিম নেপালে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে এ সময় বাংলাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। লঘুচাপের প্রভাবে ২২ থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত তাপমাত্রা বেড়ে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠতে পারে। বৃষ্টির পর তাপমাত্রা কমবে। বর্তমানে উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।

আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান বলেন, রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে শীতের তীব্রতা কম হলেও গ্রামীণ জনপদে বিকাল থেকে জেঁকে বসা শীতের প্রকোপে কাহিল দশা। দেশের ১৬টি জেলা এবং রংপুর বিভাগে শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা বাড়ছে। দিনে রোদ আর রাতে হাড় কাঁপানো শীত চলছে গ্রামে। তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ বড় শহরে শৈত্যপ্রবাহ হ্রাস পেয়েছে। অতিরিক্ত ঘনবসতি, কংক্রিটের উঁচু ভবন আর শহরে জলাশয় ও সবুজ কম থাকায় শহরের তাপমাত্রা গ্রামের চেয়ে কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকছে।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল আলিম বলেন, শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাই এ বছরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল নওগাঁর বদলগাছিতে। শ্রীমঙ্গলের পর গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রার দ্বিতীয় স্থানে ছিল তেঁতুলিয়া, সেখানের তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ঈশ্বরদী।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১৯৬৬ সালের ২৯ জানুয়ারি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৯৫ সালের ৪ জানুয়ারি, ২০০৭ সালের ১৭ জানুয়ারি এবং ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অধিকাংশ এলাকায় এবং খুলনা বিভাগের উত্তরাংশে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এটা বরিশাল বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তরাংশে বিস্তৃত হয়েছে। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। সকালে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। শীতে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। তীব্র ঠাণ্ডায় দেখা দিচ্ছে নানা রোগ। শিশু এবং বৃদ্ধরা রোগাক্রান্ত হচ্ছে বেশি। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে আয় কমেছে শ্রমজীবী মানুষের। কষ্ট ও দুর্ভোগ বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়, দেশের ১৬ জেলাসহ এক বিভাগের ওপর দিয়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এছাড়া মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, বরিশাল ও ভোলা জেলা এবং রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

Facebook Comments Box

Posted ১:৩৯ এএম | শনিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৩

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।