বৃহস্পতিবার ১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনুন

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   119 বার পঠিত

হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনুন

চট্টগ্রামে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে যে হত্যার ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নাকচ হলে তাঁর অনুসারীরা সেখানকার আইনজীবী ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হন। আদালত ভবনের মূল ফটকের সামনে রঙ্গম সিনেমা হল-সংলগ্ন এলাকায় সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আমরা এই হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই। 

আদালত ভবনে বিক্ষোভের ঘটনায় ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের নাম ফের আলোচনায় এসেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা। এর আগেও চট্টগ্রামে হাজারি গলিতে একটি হামলার ঘটনায় ইসকনের লোকজনের সম্পৃক্ততা ছিল। সে ক্ষেত্রে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তারা সেটি নিতে ব্যর্থ হয়েছে। 

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একজন আইনজীবী এভাবে নৃশংসভাবে খুন হবেন, এটা বরদাশত করা যায় না। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আছে। আদালত তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ করেছেন। এই আদেশে তাঁর অনুসারীরা সংক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারতেন। কিন্তু সেসব না করে বিক্ষোভের নামে পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হয়েছেন। এটি কোনোভাবে কাম্য ছিল না।

সনাতনী জাগরণ জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের কর্মসূচিতে ‘দুর্বৃত্তরা’ ঢুকে এই হত্যাকাণ্ড করেছে। তাদের কর্মসূচিতে কোন কোন দুর্বৃত্ত ঢুকেছিল, তাদের পরিচয় কী, সেটাও জানানো সনাতনী জাগরণ জোটের দায়িত্ব। 

আইনজীবী হত্যার পর চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। ইসকন নিষিদ্ধ করারও দাবি উঠেছে। আমাদের প্রত্যাশা, শান্তিপূর্ণভাবে এসব কর্মসূচি পালিত হবে; হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও রাজনৈতিক দলগুলো আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দেশবাসীকে শান্ত থাকার ও ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত আটজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  

শুরু থেকে আমরা বলে এসেছি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু সরকার সেটা নিতে না পারায় একের পর এক অঘটন ঘটে চলেছে। তৈরি পোশাকশিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসন কিংবা ঢাকায় বিভিন্ন কলেজে থেমে থেমে সংঘাত–সংঘর্ষ মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ যেমন অপ্রতুল, তেমনি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অকার্যকর। 

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, দেশি–বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়টি সামনে আসছে। পতিত সরকারের ক্ষমতাসীনেরা ষড়যন্ত্রতত্ত্ব দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তারা সফল হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর বিপুল জনসমর্থন নিয়ে। তাদের ষড়যন্ত্রতত্ত্বের প্রয়োজন নেই। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এতে সরকারের প্রতি জনগণের সমর্থনও বাড়বে। 

এ কথা অনস্বীকার্য যে আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ এখন পর্যন্ত যথেষ্ট ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা আশা করব, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে না। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদাসতর্ক থাকবে এবং সর্বস্তরের মানুষও এ ব্যাপারে সচেতন থাকবে। যেন কোনো অসাধু গোষ্ঠী পরিস্থিতির সুযোগ না নিতে পারে। আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হোক।

Facebook Comments Box

Posted ২:২৫ পিএম | বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।