বৃহস্পতিবার ১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   113 বার পঠিত

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে

চলতি বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার সর্বগ্রাসী থাবা যেন থামছেই না। একের পর এক বন্যায় ভাসিয়ে নিচ্ছে, ডুবিয়ে দিচ্ছে, নিঃস্ব করছে সংশ্লিষ্ট জনপদ। আগস্টের শেষের দিকে দেশের ইতিহাসে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা। সর্বশেষ তিস্তা অঞ্চলে বন্যার পর এবার ভয়াল রূপ ধারণ করেছে শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতি।

কালবেলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি শেরপুর জেলা ও তৎসংলগ্ন ভারতের মেঘালয় রাজ্যে অতিভারি বৃষ্টিপাত হয়। এতে রাতারাতি নদনদীর পানি দ্রুত বেড়ে যায়। পরে উজানের পানি ভাটিতে নেমে আসে এবং আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। রোববার দুপুর থেকে শেরপুরের উজানে পানি কমা শুরু হয়। ভাটিতে পানি এখনো বাড়ছে। নেত্রকোনা জেলার কিছু কিছু এলাকায় এখনো পানি বিপৎসীমার ওপর আছে। শেরপুর ও ময়মনসিংহে বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল। জামালপুরেও পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি বিপৎসীমার ওপর রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় ডুবছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তিন জেলার কয়েক লাখ মানুষ। বাড়ছে প্রাণহানি। এরই মধ্যে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাতজনে।

সম্প্রতি দেশে একাধিক ভয়াবহ বন্যায় একটি বিষয় বারবার আলোচনায় এসেছে। তা হচ্ছে, দেশে বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোর উজানে ভারি বৃষ্টিপাত ও পানির অস্বাভাবিক প্রবাহ বন্যার স্বাভাবিক কারণ হলেও বন্যা বিষয়ে সঠিক সময়ে সতর্কীকরণের অভাব এবং উজানে পানি ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে আগে থেকে অবহিত না করা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিভারি বৃষ্টি ও সতর্ক না করেই উজান থেকে পানি ছেড়ে দেওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে অনেক। ঠিকঠাক পূর্বাভাস পাওয়া গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব হতো। আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণের ভাষা সাধারণ মানুষের কাছে যেন সহজবোধ্য হয়, এ বিষয়েও তাগিদের পাশাপাশি জলবায়ুগত পরিবর্তন অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ও বন্যার জন্য দায়ী বলে উল্লেখ করেন তারা।

আমরা জানি, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনার চলমান বন্যার আগে চলতি বছর সিলেটে তিন দফা; ফেনী, কুমিল্লায় তিন দফা; নোয়াখালীতে একদফা ও চট্টগ্রামে একদফা বন্যার কবলে পড়ে। এসব বন্যায় অন্তত ২০ জেলা সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার দুর্গত অঞ্চলগুলোয় সৃষ্টি হয় মানবিক বিপর্যয়। অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। পানিবন্দি হয় অর্ধকোটির বেশি মানুষ। প্রাণহানি ঘটে প্রায় বিশজনের অধিক। তবে আশাব্যঞ্জক দিক ছিল, মানুষের বিপর্যয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অভাবনীয় চিত্র। দেশের মানুষ দুর্গতদের জন্য যে ত্রাণ ও তহবিল গঠনে সহযোগিতা করছেন, সেটাও অভূতপূর্ব। আবার দুঃখজনক বিষয়ও ছিল। সে সময় নানাবিধ কারণে সব সহযোগিতা বন্যার্তদের অনেকের কাছেই পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এমনকি সেসব অঞ্চলে মানুষের যথাযথ পুনর্বাসনে ঘাটতির অভিযোগ রয়েছে।

আমরা মনে করি, এই মুহূর্তে চলমান বন্যা মোকাবিলায় সবার আগে দরকার সরকারের পাশাপাশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানো। সহযোগিতার হাত বাড়ানো। সদ্য অতীতের মতোই খাবার, বিশুদ্ধ পানি, শুকনা কাপড়, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র শতভাগ বন্যার্তদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। পাশাপাশি পরিস্থিতি উন্নতির দিকে গেলেই দরকার হবে পুনর্বাসনের—যার জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। এ ছাড়া উজান থেকে পানি ছেড়ে দেওয়া এবং আগাম সতর্কতার বিষয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ জরুরি।

Facebook Comments Box

Posted ২:৫১ পিএম | বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।