রবিবার ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

ইরানের বিরুদ্ধে কি সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্ব ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   22 বার পঠিত

ইরানের বিরুদ্ধে কি সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র

ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ এড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি অবশ্য এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে আশাবাদী।

কয়েক বছর ধরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২৬ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশ শিশু ও নারী। এ অবস্থায় যাতে উত্তেজনা আর না বাড়ে, সে জন্য চেষ্টা চলছিল।

কিন্তু জর্ডানে মার্কিন বাহিনীর ওপর ইরান-সমর্থিত জঙ্গিদের ড্রোন হামলা বাইডেন প্রশাসনের অনির্ধারিত লাল রেখা অতিক্রম করেছে।

সিরিয়ার সীমান্তবর্তী জর্ডানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালানো হয় বলে গত রোববার জানায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড। এই হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত হন, আহত হন ৩৪ জন।

হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছেন জো বাইডেন। হামলার জবাব খুবই কার্যকর উপায়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে হোয়াইট হাউস। এদিকে নিজেদের ‘ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স’ পরিচয় দিয়ে ইরাকের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

ইরান-সমর্থিত আরেকটি গোষ্ঠী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী। হুতিদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দিন আগেই হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

লোহিত সাগরে বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ নিশানা করে হামলা চালিয়ে আসছে হুতিরা। এই হামলা বন্ধের বিষয়ে হুতিদের সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সতর্কতার পরও হুতিদের হামলা চলে। এ অবস্থায় হুতিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র হামলা শুরু করে।

হুতিরা বলে আসছে, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েল গাজায় যে হামলা চালাচ্ছে, তার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে তারা বাণিজ্যিক জাহাজ নিশানা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী বছরের শুরুতে জর্ডানে মার্কিন বাহিনীর ওপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটল। এর জেরে বাইডেন চাপে পড়েছেন।

বাইডেনের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রিপাবলিকানরা এই হামলার ঘটনা নিয়ে আক্রমণাত্মক কথা বলছে। বদলা হিসেবে তারা ইরানের ওপর সরাসরি হামলা চালাতে বাইডেন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। তবে বাইডেন প্রশাসন ইতিমধ্যে বলেছে, তারা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। ইরানও যুদ্ধ চায় না।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের ইরান–বিষয়ক প্রোগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অ্যালেক্স ভাটাঙ্কা উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্ক বলেন, এটি একটি চূড়ান্ত মুহূর্ত।

অ্যালেক্স ভাটাঙ্কা আরও বলেন, ৭ অক্টোবর থেকে ইরানের লক্ষ্য ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ এড়ানো। একই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উভয়কে চেপে ধরতে এই সুযোগটিকে ব্যবহার করা। তেহরান জানে, ইরানের মতো যুক্তরাষ্ট্রও আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াতে আগ্রহী নয়।

তবে ইরানের কর্মকর্তারা এ-ও জানেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ওপর চাপ তত বাড়ছে। বিদেশি প্রতিপক্ষের সামনে দুর্বল হওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে তুলেছে বিরোধীরা। ফলে এখন তাঁকে রাজনৈতিকভাবে কিছু একটা করতে হবে।

ভাটাঙ্কার ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র এখন ইরানের তথাকথিত ‘প্রতিরোধ অক্ষের’ বিরুদ্ধে আরও হামলা চালাবে। এই হামলার মধ্য দিয়ে ইরানকে যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট বার্তা দেবে, উত্তেজনা বেড়ে আরও বড় আকার ধারণ করলে তার পরিণতি সামলাতে পারবে না তেহরান।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা টমাস ওয়ারিক বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনো ভালো বিকল্প নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের এই জ্যেষ্ঠ ফেলো মনে করেন, ‘প্রক্সিদের’ ওপর হামলায় ইরান নিরস্ত্র হবে না। আবার ইরাকে পূর্ণমাত্রার হামলা সে দেশ থেকে মার্কিন সেনা চলে যাওয়ার সমর্থনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে তেহরানকে একটি কৌশলগত বিজয় এনে দিতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বিকল্পের মধ্যে থাকতে পারে, ইরানের অভ্যন্তরে একটি শীর্ষ সামরিক স্থানকে সরাসরি হামলার লক্ষ্যবস্তু করা কিংবা সিরিয়ায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের অবস্থান ধ্বংস করা। সিরিয়ায় ইসরায়েলও তেহরানের কথিত অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে।

টমাস ওয়ারিক বলেন, এই বিকল্প দুটির কোনোটিই ভালো নয়। উভয় বিকল্পের ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের একটি আঞ্চলিক সংঘাতে জড়িয়ে থাকার ঝুঁকি আছে, যা বাইডেন প্রশাসন এড়ানোর আশা করে আসছিল।

Facebook Comments Box

Posted ৩:৪৪ পিএম | মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।