শনিবার ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মিলল ম্যাগমার প্রাচীন মহাসাগর

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   114 বার পঠিত

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মিলল ম্যাগমার প্রাচীন মহাসাগর

এবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ম্যাগমার প্রাচীন মহাসাগর খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, চাঁদের দক্ষিণ মেরু একসময় তরল গলিত শিলার সমুদ্রে ঢাকা ছিল।

এ গবেষণার বিভিন্ন অনুসন্ধান এমন এক তত্ত্বকে সমর্থন করে, যেখানে প্রায় সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে চাঁদের পৃষ্ঠে ম্যাগমা গঠিত হয়েছিল বলে দাবি করা হয়।

২০২৩ সালের অগাস্টে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করা ভারতের ঐতিহাসিক ‘চন্দ্রযান-৩’ মিশনেও এই ম্যাগমা সমুদ্রের অবশিষ্টাংশের দেখা মিলেছিল

এ মিশনের লক্ষ্য ছিল, চাঁদের এ বিচ্ছিন্ন ও রহস্যময় অঞ্চলটি খুঁজে দেখা, যেখানে এর আগে কোনও মহাকাশযান অবতরণ করেনি।

এ অনুসন্ধানটি ‘লুনার ম্যাগমা ওশান’ নামের এক তত্ত্বকে সমর্থন করে থাকে, যার মূল বিষয় হচ্ছে চাঁদ কীভাবে গঠিত হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা।

বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুসারে, সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে যখন চাঁদ গঠিত হয়, তখন এটি ঠাণ্ডা হতে শুরু করে ও ‘ফেরোয়ান অ্যানথোসাইট’ নামে পরিচিত একটি হালকা ধাঁচের খনিজ চন্দ্র পৃষ্ঠে ভেসে ওঠে। আর এই ‘ফেরোয়ান অ্যানথোসাইট’ বা গলিত শিলাই চাঁদের পৃষ্ঠ গঠন করেছিল।

নতুন এ অনুসন্ধান নিয়ে কাজ করা গবেষণা দলটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ফেরোয়ান অ্যানথোসাইটের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।

“চাঁদে প্রাথমিক বিবর্তনের তত্ত্বটি আমাদের পর্যবেক্ষণের আলোকে আরও জোরালো হয়ে উঠেছে,” বলেছেন বুধবার বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার’-এ প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রের সহ-লেখক ড. সন্তোষ ভাদাওয়ালে।

ভারতের ‘চন্দ্রযান-৩’ মিশনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র অ্যাপোলো প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে চাঁদের মধ্য-অক্ষাংশে ম্যাগমা মহাসাগরের অস্তিত্ব থাকার বড় প্রমাণ মিলেছিল।

এদিকে, ‘চন্দ্রযান-৩’ মিশনের সময়ও মিশন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক ভাদাওয়ালে ও তার গবেষণা দলটি।

সেটা সত্যিই রোমাঞ্চকর সময় ছিল। কন্ট্রোল রুমে বসে চন্দ্রপৃষ্ঠে রোভারটির চলাফেরা করানো— এটা সত্যিই ওয়ান্স-ইন-এ-লাইফটাইম অভিজ্ঞতা ছিল,” বলেন অধ্যাপক ভাদাওয়ালে।

গত বছরের অগাস্টে ভারতের ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার পর এর থেকে বেরিয়ে এসেছিল ‘প্রজ্ঞান’ নামের রোভারটি, যা ১০ দিন ধরে চাঁদের পৃষ্ঠের আশপাশ ঘুরে দেখেছে। সে সময় চাঁদের ৭০ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য রোভারটিকে সার্বক্ষণিক নির্দেশ দিয়ে যেতেন অধ্যাপক ভাদাওয়ালে ও তার সহকর্মীরা।

রোবটটি এমনভাবে তৈরি যাতে এটি -১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। পাশাপাশি, চাঁদের অসম ও ধুলাযুক্ত পৃষ্ঠে চলাচলের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতাও ছিল এতে।

‘আলফা পার্টিকল এক্স-রে স্পেক্ট্রোমিটার’ নামের এক যন্ত্র দিয়ে এটি সর্বমোট ২৩টি পরিমাপ নিয়েছে, যা মূলত বিভিন্ন পরমাণুকে সক্রিয় করে ও চাঁদের মাটিতে থাকা বিভিন্ন খনিজ থেকে শক্তি উৎপাদন সম্ভব কি না, সে বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছে।

এ ছাড়া, গবেষণা দলটি চাঁদের এ অঞ্চলে চারশ কোটি বছর আগে আছড়ে পড়া এক বিশাল উল্কাপিণ্ডের অস্তিত্বও খুঁজে পেয়েছে।

অনুমান বলছে, এ দুর্ঘটনার কারণে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ‘আইটকেন’ নামের অববাহিকা বা বেসিন তৈরি হয়েছে, যা সৌরজগতের অন্যতম বৃহৎ গর্ত। আর এর আয়তন আনুমানিক আড়াই হাজার কিলোমিটার, যা প্রজ্ঞান রোভারের খোঁজ চালানো এলাকাটি থেকে প্রায় সাড়ে তিনশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

বিজ্ঞানীরা সেখানে ম্যাগনেশিয়াম শনাক্ত করেছেন, যা চাঁদের গভীর থেকে এসেছে বলে দাবি তাদের। আর এটি সম্ভবত প্রাকৃতিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে চাঁদের পৃষ্ঠে উঠে এসেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

২০২৫ বা ২০২৬ সালে চাঁদে আরেকটি মিশনের পরিকল্পনা করছে ভারত, যেখানে তারা চাঁদের মাটির বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে তা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছে।

Facebook Comments Box

Posted ১২:৪৪ পিএম | বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইমেইল শিডিউল
(89 বার পঠিত)
ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।