শনিবার ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

পাকিস্তানে তীব্র তাপপ্রবাহ, ছয় দিনে পাঁচ শতাধিক মৃত্যু

ডেস্ক রিপোর্ট   |   বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   95 বার পঠিত

পাকিস্তানে তীব্র তাপপ্রবাহ, ছয় দিনে পাঁচ শতাধিক মৃত্যু

দক্ষিণ পাকিস্তানে তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। দেশটির ইধি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা জানিয়েছে, তারা সাধারণত প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টি মরদেহ করাচি শহরের মর্গে নিয়ে যায়। তবে গত ছয় দিনে তারা প্রায় ৫৬৮টি মরদেহ সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র মঙ্গলবারই ১৪১টি মরদেহ সংগ্রহ করা হয়েছে। খবর বিবিসির।

প্রতিটি ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ ঠিক কী তা এখনই বলা সহজ নয়। তবে করাচির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ওপরে রেকর্ড হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহে মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। আদ্রতা বেশি থাকায় আরও বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে।

লোকজন সাহায্যের জন্য হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছেন। করাচির সিভিল হাসপাতালে রোববার থেকে বুধবারের মধ্যে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ২৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের প্রধান ডাঃ ইমরান সারওয়ার শেখ। এদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

ডাঃ ইমরান সারওয়ার শেখ বিবিসিকে বলেন, আমরা যাদেরকে হাসপাতালে আসতে দেখছি তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ৬০ থেকে ৭০ এর মধ্যে। তবে এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিল যাদের বয়স প্রায় ৪৫ বছর এবং এক দম্পতিও ছিল যাদের বয়স ৩০ বছরের মধ্যে।

তিনি বলেন, যারা ঘরের বাইরে কাজ করছেন তাদের অনেকেই ডায়রিয়া বা তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন, আবার কারও কারও বমি হচ্ছে। লোকজনকে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি যে এই তীব্র তাপমাত্রায় প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে এবং হালকা কাপড় পরতে হবে।

জনসাধারণকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টায় বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ কেন্দ্র এবং ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বেশ কিছু ছবিতে দেখা গেছে, শিশুরা ঝর্ণায় খেলা করছে। অনেকেই গরম থেকে বাঁচার জন্য বার বার পানি গায়ে দিয়ে ঠাণ্ডা থাকার চেষ্টা করছেন।

মোহাম্মদ ইমরান নামের একজন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমার দিকে দেখো। আমার জামাকাপড় পুরোপুরি ঘামে ভিজে গেছে। ঠাণ্ডা থাকার জন্য তিনি বেশ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সাহায্যের প্রয়োজন আছে এমন সবাই হাসপাতালে পৌঁছাতেও পারেননি। অনেকে বাড়িতেই অসুস্থ হয়েই মারা গেছেন।

ওয়াসিম আহমেদ জানতেন না যে, তিনি বাড়িতে এসে অসুস্থ বোধ করবেন। ৫৬ বছর বয়সী এই নিরাপত্তা প্রহরী সবেমাত্র ১২ ঘন্টার ডিউটি শেষে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি অনুভব করছিলেন যে, তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

ওয়াসিমের চাচাতো ভাই আদনান জাফর বিবিসিকে বলেন, তিনি দরজা দিয়ে এসে আমাকে বললেন, আমি এই গরম সহ্য করতে পারবো না। তারপর তিনি এক গ্লাস পানি চাইলেন। পানি খাওয়ার পরপরই তিনি লুটিয়ে পড়েন।

সে সময় ওয়াশিমের পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, তিনি ইতোমধ্যেই সম্ভবত হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। আদনান জানিয়েছেন, ওয়াসিমের হার্টের অবস্থা ভালো ছিল না। তবে এর আগে তিনি কখনো গরমে এভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েননি।

এদিকে করাচি শহরের রাস্তায় জরুরি পরিষেবার লোকজন প্রায় ৩০ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, এদের মধ্যে অনেকেই সন্দেহ ভাজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি। তাদের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

শুধুমাত্র করাচিই নয় বরং পাকিস্তানের অনেক শহরেই এখন তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত মাসে সিন্ধু প্রদেশের রাজধানী করাচিতে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৫২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

 

Facebook Comments Box

Posted ৫:৩৫ এএম | বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।