| বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট | 39 বার পঠিত
সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে ফুঁসে উঠেছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এরই অংশ হিসেবে ক্ষমতাসীন দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী নৌকার প্রার্থীকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে নাগরিক কমিটির ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার নাগরিক কমিটির পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সন্দ্বীপ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম। গত এক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম ও সন্দ্বীপে দফায় দফায় বৈঠক করে নাগরিক কমিটির শীর্ষ নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রফিকুল ইসলামের নাম ঘোষণা করেন।
এদিকে নাগরিক কমিটির পক্ষে রফিকুল ইসলামের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পর থেকে গোটা সন্দ্বীপে নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
তারা বলছেন, এবার সন্দ্বীপ থানা আওয়ামী লীগের হাইব্রিড, অনুপ্রবেশকারী ও জামায়াত-শিবিরের আড়ালে আওয়ামী লীগ বনে যাওয়া নেতাদের উচিত শিক্ষা হবে। ইতোমধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অন্তরালে থাকা নির্যাতিত ও ত্যাগী নেতারা সন্দ্বীপে পাড়ি জমাতে শুরু করেছেন। বাড়িতে বাড়িতে উঠান বৈঠক শুরু হয়ে গেছে নাগরিক কমিটির ব্যানারে।
নাগরিক কমিটির পক্ষে মাঠে নেমেছেন বেশিরভাগ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান প্রভাবশালীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৃহস্পতিবার অন্তত চারজন নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান যুগান্তরকে বলেছেন, দলীয় প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। নৌকার প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার আগে যদি প্রধানমন্ত্রীকে সত্যিকার তথ্য-উপাত্ত দেওয়া হতো এবং মাঠের চিত্র তুলে ধরা হতো তাহলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
তাদের অভিযোগ, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সন্দ্বীপ থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে যাতে চরম কোন্দল তৈরি হয় সেজন্য বিএনপি-জামায়াতপন্থি একটি আওয়ামী সিন্ডিকেট কেন্দ্রে ভুল তথ্য পাঠিয়েছে। সন্দ্বীপ থানা আওয়ামী লীগের মূল প্রার্থীর নাম প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছাতে দেয়নি এই সিন্ডিকেট।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেক প্রভাবশালী নেতা বলেন, উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে নৌকার পক্ষে যে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তিনি সারাজীবন বাকশালের রাজনীতি করেছেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
এর পর তারই সমর্থনপুষ্ট সাবেক বাকশাল নেতাদের ছত্রছায়ায় সন্দ্বীপে আওয়ামীবিরোধী একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠন করা হয়। ওই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন বিএমপি-জামায়াত ও শিবিরের একাধিক নেতাকর্মী। মূলত তার পর থেকেই সন্দ্বীপে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা দ্বীপ ছাড়া হতে শুরু করেন। শত শত সংখ্যালুঘু পরিবার ভয়ে সন্দ্বীপ যেতে পারছেন না। তাদের বসতভিটা, জমি দখল করে আছে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় প্রভাবশালী নেতাকর্মী। সন্দ্বীপের ১০টি মাছ ঘাট থেকে জেলেদের প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয় এই সিন্ডিকেটকে।
অপরদিকে নাগরিক কমিটির পক্ষে যিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি সন্দ্বীপ থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ছিলেন সন্দ্বীপের কমান্ডার। তার নেতৃত্বে সন্দ্বীপ থেকে শত শত মুক্তিযোদ্ধা ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তিনি সন্দ্বীপের হরিশপুর ইউনিয়নের একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সন্দ্বীপ থানা আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সন্দ্বীপ পৌর প্রশাসকও ছিলেন রফিকুল ইসলাম।
Posted ১১:৫৬ পিএম | বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।