| মঙ্গলবার, ০৪ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট | 20 বার পঠিত
তিনটি কারণে রাজধানীর বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। কারণগুলো হচ্ছে- পানি সংকট, উৎসুক জনতা ও বাতাস। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হয়েছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে বঙ্গবাজারে ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের চেষ্টায় ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এছাড়া সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও ওয়াসাসহ অনেক বাহিনী ও সংস্থা আমাদের সঙ্গে কাজ করেছে।
নিজের মোবাইলে ধারণ করা একটি ভিডিও দেখিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, এখানকার উৎসুক জনতার ভিড়ে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। এখানে এত বেশি ভিড় ছিল যে কোনো জায়গায় গিয়ে আমাদের সদস্যরা কাজ করবেন সেই জায়গাটিও ছিল না। দ্বিতীয় সমস্যাটি ছিল পানির স্বল্পতা, আর তৃতীয় সমস্যাটি হলো বাতাস। বাতাসের কারণে এক জায়গার আগুন আরেক জায়গায় চলে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন সদস্য আহত ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, আজকে আগুনে ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন সদস্য আহত রয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন ক্রিটিক্যাল অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনিস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. মাইন উদ্দিন বলেন, আগুন লাগা মার্কেটটি ও ফায়ার সার্ভিসের অফিস রাস্তার এপাশ-ওপাশ। আমি ফায়ার সার্ভিসের ডিজি হিসেবে বলতে চাই, আমাদের ওপর কেন হামলা হলো? কারা করেছে? এ ঘটনায় তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অফিসার ও সব পদবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানুষের জন্য জীবন দেন। গত এক বছরে ১৩ জন ফায়ার ফাইটার শহীদ হয়েছেন উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, নিহত ১৩ ফায়ার ফাইটার অগ্নিবীর খেতাব পেয়েছেন। এছাড়া ২৯ জন আহত হয়েছেন। আজকে আমাদের আটজন সদস্য আহত হয়েছেন। কেন বা কারা ফায়ার সার্ভিসের ওপর আঘাত আনলো তা আমার বোধগম্য নয়।
‘ফায়ার সার্ভিস সব দুর্যোগে সবার আগে মানুষের পাশে থাকে জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, কেন আমাদের সদস্যদের ওপর আক্রমণ? কেন আঘাত? এ আগুনের সুষ্ঠু তদন্ত আমরা করবো এবং আপনাদের জানাবো।’ যোগ করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক।
এর আগে এদিন ভোর ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক জাগো নিউজকে আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ভোর ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। সংবাদ পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৬টা ১২ মিনিটে। পর্যায়ক্রমে একের পর এক ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়।
এদিকে বঙ্গবাজারের আগুন ছড়িয়ে পড়ে মহানগর শপিং কমপ্লেক্সে। সেই আগুনে পুড়েছে হেড কোয়ার্টারের ভেতরের চারতলা পুলিশ ব্যারাক ভবন। সেসময় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার জানান, পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ভেতর পুলিশ ব্যারাকের চারতলা ভবনে আগুন লেগেছে। এতে ওই ভবনের সবকটি কক্ষ পুড়ে গেছে। ১১টা ১৫ মিনিটে জলকামান এসেছে। ফায়ার সার্ভিস পানি দিচ্ছে। ভবনটি মহানগর শপিং কমপ্লেক্স লাগোয়া। পরে প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা জ্বলে, কয়েকটি মার্কেটের কয়েকশ দোকান পুড়িয়ে অবশেষে নিয়ন্ত্রণে আসে বঙ্গবাজার মার্কেটের আগুন।
Posted ৯:৩৭ এএম | মঙ্গলবার, ০৪ এপ্রিল ২০২৩
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।