নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট | 132 বার পঠিত
মাহে রমজানের দ্বিতীয় দশক শেষ হলো। কাল শুরু হবে নাজাতের দশক। গত ২০ দিন ধরে যারা খোদার রহমত আর মাগফিরাত কামনায় দিন পার করেছেন কাল থেকে তারা নাজাতের জন্য আল্লাহর দরবারে মাথা নোয়াবেন। জাহান্নামের ভয়াবহ আজাব থেকে মুক্তির জন্য মহামহিম আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাবেন। আসুন! মাগফিরাতের শেষ দিনে কায়মনে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। আল্লাহ যেন আমাদের রহমাত, মাগফিরাত ও নাজাতের পুরস্কার থেকে বঞ্চিত না করেন।
রাসূল (সা.) বলেছেন, ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তি যে রমজান মাস পেল অথচ সে মাগফিরাত পেল না বা পাপ মোচন করাতে পারল না। মুহাদ্দিসরা এ হাদিসের ব্যখ্যায় লিখেছেন, রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের বৃষ্টি বর্ষিত হতে থাকে, আল্লাহতায়ালা অসংখ্য অগণিত মানুষকে এ মাসে ক্ষমা করেন। তবে যারা রমজানের এ কল্যাণময় সময়গুলোকেও অবহেলা ও উদাসীনতায় পার করে দেন তারাই বঞ্চিত থাকেন আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ থেকে। রাসূল (সা.) বলেছেন-এমনও অনেক রোজাদার আছে, যারা ক্ষুৎপিপাসার কষ্ট ছাড়া কিছুই পায় না।
অন্য হাদিসে এসেছে, রমজানের প্রতি রাতে একজন ফেরেশতা ঘোষণা করতে থাকেন, হে পুণ্যের অন্বেষণকারী অগ্রসর হও! হে পাপাচারী! থাম, চোখ খোল! ফেরেশতা আবার বলেন, ক্ষমাপ্রার্থীকেই ক্ষমা করা হবে। অনুতাপকারীর অনুতাপ গ্রহণ করা হবে। প্রার্থনাকারীদের দোয়া কবুল করা হবে। (আহমদ) মাগফিরাতের এ দশকের সবচেয়ে বড় আমল হলো আল্লাহর দরবারে মিনতির সঙ্গে ক্ষমা চাওয়া। জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া। তাওবা, ইস্তিগফার, আর দরুদ শরিফ পাঠ করে করে ভয় আর আশা নিয়ে চোখের জ্বলে বুক ভাসানো।
হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলে কারিম (সা.) বলেছেন, রমজান মাসে চারটি কাজ বেশি বেশি করে করবে-দুটি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আর দুটি কাজ যা না করলে তোমাদের কোনো উপায় নেই। প্রথম দুকাজ যা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করবে তা হলো কালেমায়ে তাইয়্যিবা ও ইসতিগফার বেশি বেশি করে পড়বে। দ্বিতীয় দুই কাজ যা নিজের জন্য করবে তা হলো আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করবে ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনা করবে। (বায়হাকি) নবি কারিম (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিনের ব্যাপারে খুবই গুরুত্ব দিতেন।
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবিজি রমজানের তৃতীয় দশকে এমন কঠোর পরিশ্রম করতেন, যা অন্য সময়ে করতেন না, (মুসলিম)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। কিন্তু যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেছেন, সে বছর ২০ দিন ইতিকাফ করেন (বুখারি)। জয়নব বিনতে উম্মে সালমা (রা.) বলেন, রমজানের যখন ১০ দিন বাকি থাকত তখন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পরিবারের যে কেউ নামাজে দাঁড়াতে সক্ষম হলে তাকে তিনি নামাজে দাঁড় না করিয়ে ছাড়তেন না (তিরমিজি)। নবিজি রমজানের শেষ দশকে সারা বছরের তুলনায় অনেক বেশি ইবাদত করতেন এবং পরিবারবর্গকেও ইবাদতের প্রতি উৎসাহ দিতেন। তাই আমাদের উচিত রমজানের শেষ দশকে যথাসম্ভব বেশি বেশি ইবাদত করা।
Posted ৫:৪২ পিএম | শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।