| বুধবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 27 বার পঠিত
আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ সংস্থাটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে আরো টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সরকারকে তার উচ্চাভিলাষী সংস্কার কার্যক্রমের গতি বাড়াতে হবে। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হতে গেলে মানবসম্পদ ও অবকাঠামো খাতে আরো বিপুল বিনিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনেও তা জরুরি। তবে বাংলাদেশ সরকার এসব চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেও বাংলাদেশ অবগত। অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ বলেন, রাজস্ব খাতে সংস্কার হলে সরকারি অর্থায়ন, বিনিয়োগ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা উন্নত হবে। এতে সরকারের ব্যয় সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা বাড়বে।
আইএমএফের ঋণ ও সংস্কারের সুপারিশের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, আইএমএফের ঋণ পেতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এই সংস্কারে কী প্রভাব পড়বে তার মূল্যায়ন হওয়া প্রয়োজন। রাজস্ব আদায় বাড়ানো, আর্থিক খাতে সুশাসন ইত্যাদির সঙ্গে জ্বালানির ভর্তুকি কমানোর বিষয়গুলো উঠে এসেছে। সাধারণ মানুষের উপর সব সংস্কার সরাসরি প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু ভর্তুকি কমাতে গেলে এর প্রভাব অবশ্যই পড়বে। এজন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোও সেভাবে সাজাতে হবে। যাতে মানুষের ওপর বাড়তি ব্যয়ের বোঝা তৈরি না হয়। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক এই মুখ্য অর্থনীতিবিদ বলেন, মূলত শর্তের মধ্যে আইএমএফের একটা ম্যাট্রিক্স থাকবে যে কোনো খাতে কী সংস্কার করতে হবে। মোটাদাগে তারা যে সংস্কারগুলোর কথা বলেছে তা হচ্ছে সরকারের ব্যয় কমাতে হবে, আর্থিক খাত সংস্কার করতে হবে, জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে, ঋণখেলাপি কমাতে হবে প্রভৃতি। এখানে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপগুলো কী সেটা এখনো আমরা জানি না। প্রথম কিস্তির অর্থ এখনই ছাড় হবে। কিন্তু পরবর্তী কিস্তির অর্থ পেতে সেসব শর্ত পালন করতে হবে। শর্ত পালন না হলে সে সময় কিস্তির অর্থছাড়ও বিলম্বিত হয়ে যাবে। তবে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারের একটি কৌশলপত্র থাকতে হবে।
আইএমএফের ডিএমডি আরো বলেন, আর্থিক খাতের দুর্বলতা কমলে, নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা উন্নত করা হলে ও পুঁজিবাজারের উন্নতি করা গেলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। সে জন্য দরকার, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির সহায়ক পরিবেশ তৈরি, মানবসম্পদ উন্নয়ন।
৪৭০ কোটি ডলার ঋণ পেতে ও চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার কয়েক মাস ধরেই সংস্কার কর্মসূচি পরিচালনা করছে। চলতি জানুয়ারিতে যখন আইএমএফের ডিএমডি বাংলাদেশ সফরে আসেন, তখন এসব সংস্কারে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। মৌলিক এসব সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রতিও আইএমএফের ডিএমডি গুরুত্বারোপ করেন তখন। ইতিমধ্যে এই ঋণ অনুমোদনে আইএমএফের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত নভেম্বরে আইএমএফের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক শেষে বিভিন্ন চলমান সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে সে সময় কথা বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী। সে সময় চলমান সংস্কার কার্যক্রমের বিষয় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, সরকারের বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রাখা হবে, যা গত প্রায় ১৪ বছর যাবৎ আমরা করে আসছি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তার মতো সামাজিক খাতে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি করা, যা আমরা প্রতি অর্থবছরে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করছি। আর্থিক খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নতুন কয়েকটি আইন প্রণয়ন এবং পুরোনো কয়েকটি আইনের সংশোধনের চলমান রয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার জোরদার এবং কর প্রশাসনের দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করা হবে। টাকার বিনিময় হার নির্ধারণের কাজটি ধীরে ধীরে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে। সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, আইএমএফের অনুমোদন পাওয়া ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে বর্ধিত ঋণ সুবিধার দুটি তহবিল হতে পাওয়া যাবে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া রেলিজিয়েন্স সাসটেনেবল ফ্যাসিলিটি তহবিল হতে মিলবে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।অনুমোদিত ঋণের প্রথম কিস্তি ৪ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের সমপরিমাণ এসডিআর অবিলম্বে ছাড় করা হবে। সংস্থাটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে,
Posted ১:৪০ এএম | বুধবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।