রবিবার ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

রমজান মাস রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস

  |   শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   38 বার পঠিত

রমজান মাস রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস

মুমিনের ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনে মাহে রমজানের বিরাট প্রভাব আছে। কারণ তা ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত ইবাদত-বন্দেগী, তাকওয়া-পরহেজগারির অনুশীলন, তাওহীদ ও সুন্নাহর পাঠ নতুন করে স্মরণ করা, আদব-আখলাকের পরিশুদ্ধি, সন্তান-সন্ততি ও পরিবার-পরিজনের দ্বীন শিক্ষায় সচেতনতা, দরিদ্র-অসহায়ের প্রতি সহমর্মিতা, দ্বীনি দাওয়াতের বিষয়ে অগ্রসরতা ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে নতুন প্রেরণা ও নবজাগরণের পয়গাম নিয়ে আসে। মুসলিমসমাজেও ইবাদত-বন্দেগী, মসজিদমুখিতা, কুরআনমুখিতা সর্বোপরি আল্লাহমুখিতার আমেজ ও আবহ তৈরি হয়। এটা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক ব্যাপার।

চিন্তা করলে বোঝা যাবে, ব্যক্তি ও সমাজের জন্য এই ব্যাপক পুণ্যমুখিতা অনেক বড় একটি বিষয়। বর্তমান প্রচার-প্রপাগান্ডার যুগেও সকল প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করেও এরকম পুণ্যময় চেতনার পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব নয়, যা শুধু কুরআন-সুন্নাহর শিক্ষা ও নির্দেশনার প্রভাবে মুসলিমসমাজে পরিলক্ষিত হয়। এই ইতিবাচক চেতনা ও পরিবেশের লালন ও সংরক্ষণ এবং জীবন ও সমাজ গঠনে তার যথার্থ প্রয়োগের ব্যাপারে সচেতন ও তৎপর হওয়া প্রয়োজন।

ব্যক্তি ও পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ, রাষ্ট্র সবক্ষেত্রেই মাহে রমজানের পুণ্যশীলতার আবহ ও আহ্বানকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা উচিত। এই চেষ্টার পথে সর্বপ্রথম বিষয় হচ্ছে নিয়ত ও সংকল্প। মুমিন যদি এ মাসের বিধিবিধান পালনের মধ্য দিয়ে এর ভাবমর্যাদা রক্ষার সংকল্প গ্রহণ করেন তাহলে সামনের কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।

কাজেই আমাদের প্রথম কাজ, পাকা নিয়ত করে ফেলা যে, মাহে রমজানের ফরজ ইবাদত,সওম যত্নের সাথে আদায়ে সচেষ্ট হব। সওমের যে শিক্ষা ও কাঠামো হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে তা ভালোভাবে জানার ও মেনে চলার চেষ্টা করব। সওমের ফরজ কর্তব্যটুকু পালনের সাথে সাথে হাদিস শরীফে যেসকল চারিত্রিক ও আচরণগত নির্দেশনা সওমের পূর্ণতার জন্য দেয়া হয়েছে তা অনুসরণে সচেষ্ট হব।

আমরা যদি এ বিষয়ে পড়াশোনা করি তাহলে পরিষ্কার বুঝতে পারব যে, পূর্ণাঙ্গ সওমের জন্য কত প্রয়োজনীয় চারিত্রিক ও আচরণগত নির্দেশনা হাদিস শরীফে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পড়াশোনা ও জানাশোনা বাড়লে আমরা নিজেরাই বুঝতে পারব যে, সওমের বিধানে আমাদের ব্যক্তি ও সমাজের সভ্যতা, ভদ্রতা, শালীনতা ও পরিশুদ্ধির কত বড় উপাদান আছে।

মাহে রমাজানে সাহরি-ইফতার ও তারাবিকে কেন্দ্র করে পরিবারের সদস্যদের মাঝে যে আলাদা মেলবন্ধন রচিত হয়, একটি পুণ্যশীলতার আবহে একসাথে কিছু সময় কাটানোর সুযোগ হয় একেও পরস্পর সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও দ্বীনের পথে আরেকটু এগিয়ে যাওয়ার উপলক্ষ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।

আমাদের পরিবারগুলোতে সাহরির আগে-পরে যদি কিছু সালাত, দুয়া, তিলাওয়াতের অভ্যাস গড়ে ওঠে, ইফতারের সময় রিয়াযুস সালেহীন বা আলআদাবুল মুফরাদের মতো কোনো একটি হাদিসের কিতাব থেকে একটি-দু’টি হাদিস পাঠের আয়োজন করা হয়, একটি-দু’টি মাসনূন দুয়া বা প্রাত্যহিক কাজকর্মের আদব সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা হয় তাহলে আমাদের ঘরগুলোতেও দ্বীন-ঈমানের আলো জ্বলে উঠতে পারে।

শত কোটি সদস্যের এই মুসলিম-উম্মাহ তো ব্যক্তি ও পরিবারেরই সমষ্টির নাম। তাই উম্মাহর শুদ্ধি ও সংশোধনের জন্য ব্যক্তি ও পরিবারের শুদ্ধি ও সংশোধনপ্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ চিন্তা কিছুতেই ক্ষুদ্র চিন্তা নয়। র্হ্যা, ব্যক্তি বা পরিবার নিয়ে শুধু দুনিয়ামুখী চিন্তা, অর্থ-বিত্ত, পদ-পদবী, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের চিন্তা নিঃসন্দেহে ক্ষুদ্র ও সংকীর্ণ চিন্তা, কিন্তু পরিবার-পরিজনের দ্বীন-ঈমান গঠন, দ্বীনি শিক্ষা-দীক্ষায় অগ্রসর হওয়ার ও অগ্রসর করার চিন্তা ও প্রয়াস অত্যন্ত প্রয়োজনীয় চিন্তা। এক্ষেত্রে সব ধরনের সুযোগ ও উপলক্ষকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা উচিত।

পরিবার-পরিজনের দ্বীনি উন্নতির পাশাপাশি সাধ্যানুযায়ী ইসলামী সমাজগঠন, সমাজের সর্বস্তরে দ্বীনমুখিতা, কুরআনমুখিতা, ইসলামমুখিতা বিস্তারেও চেষ্টা-প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকা উচিত। এক্ষেত্রে দাওয়াতী ও তালীমী বিভিন্ন আয়োজনের পাশাপাশি অন্যায়-অনাচার রোধ করার, অশ্লীলতা-বেহায়াপনার রাশ টেনে ধরার চেষ্টাও সামর্থ্যবানদের কর্তব্য।

আমরা যদি ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ সবক্ষেত্রে মাহে রমজানের পয়গাম ও পবিত্রতা রক্ষায় সচেষ্ট হই তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর অপার রহমত ও মাগফিরাতে সৌভাগ্যবান করবেন। আল্লাহ তায়ালা কবুল করুন, তাওফীক দান করুন, আমীন ইয়া রাব্বুল আলামীন!

Facebook Comments Box

Posted ৩:৩৫ এএম | শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।