বুধবার ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

‘ভাষার প্রতি ভালোবাসা থেকেই বর্ণমেলা’

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   155 বার পঠিত

‘ভাষার প্রতি ভালোবাসা থেকেই বর্ণমেলা’

প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষার প্রতি, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই ‘বর্ণমেলা’-এর আয়োজন করা হয়। বাঙালি যে ইতিহাস ধরে এসেছে, যেখানে সবাইকে নিয়ে চলতে চেয়েছে, সেটা বর্ণমেলায় রয়েছে। অভিভাবকদের জন্য জরুরি কর্তব্য হচ্ছে সন্তানেরা যেন নিজের ভাষা ঠিক করে বলতে পারে।

আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকার ধানমন্ডিতে সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ‘বর্ণমেলা’র উদ্বোধনী বক্তব্যে বক্তারা এসব কথা বলেন। ভাষাশহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে সকাল ৯টা থেকে বর্ণমেলা শুরু হয়েছে। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই বর্ণমেলা চলবে।

প্রথম আলোর আয়োজনে এই বর্ণমেলায় সহযোগিতা করছে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্র্যান্ড মেরিল বেবি। সহযোগিতা করছে সেপনিল, সুপারমম ও প্রচার সহযোগী এটিএন বাংলা।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অভিনেতা ও চিত্রশিল্পী আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞ যে মা-বাবারা সন্তানদের নিয়ে এখানে আসেন। মানে তাঁদের মধ্যে আগ্রহটা রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন জরুরি কর্তব্য হচ্ছে বাচ্চারা ভাষাটা ঠিক করে বলুক। উচ্চারণগুলো শুদ্ধ করে বলুক। সেটা সবার জন্য গর্বের হয়ে উঠতে পারে।’

প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, বর্ণমেলার এটি ১৬তম আসর। যার যাত্রা হয়েছিল ২০১০ সালে। প্রতিটি একুশে ফেব্রুয়ারিতে একটা আয়োজন হবে, যেখানে শিশু–কিশোরেরা আসবে, বাংলা ভাষার সৌন্দর্য নিয়ে আনন্দে মেতে থাকবে, সারা দিন সময় কাটাবে, ভাষা নিয়ে তাদের মধ্যে ভালোবাসা জন্ম নেবে, তারা বাড়ি চলে যাবে—এমন ইচ্ছার জায়গা থেকে বর্ণমেলার আয়োজন।

গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ শব্দটি আলোচনায় উল্লেখ করে সাজ্জাদ শরিফ বলেন, পাকিস্তানিরা বলেছিল উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ১৯৫২ সালে যেসব ভাষাশহীদ রক্ত দিয়েছিলেন, তাঁরা কিন্তু বলেননি যে বাংলা একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে। তাঁরা বলেছিলেন, বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হবে। ফলে অন্তর্ভুক্তি তখন থেকেই শুরু হয়েছে যে ‘আমি নই, আরও অনেকে আছে।’ বাংলাদেশে তারই আরেকটা বড় বিস্ফোরণ হয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার, সবাইকে একই রকম মর্যাদা দেওয়ার আন্দোলন হয়েছে।

এই সময় বর্ণমেলার বড় তাৎপর্য আছে উল্লেখ করে সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘বাঙালি যে ইতিহাস ধরে এসেছে, যেখানে সবাইকে নিয়ে চলতে চেয়েছে, সেটা বর্ণমেলায় সবাই মনের মধ্যে রাখব। প্রথম আলো চায়, বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাক।’

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সৌন্দর্য হলো এই দিবসে সব ভাষাকেই শ্রদ্ধা করতে বলে উল্লেখ করেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক। আগত দর্শনার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সকাল ৯টার মধ্যে শিশু-কিশোরদের নিয়ে এসেছেন। আর সবাই একুশে ফেব্রুয়ারি স্মরণ করে উপযুক্ত পোশাক পরে এসেছেন। এতেই বোঝা যায়, এই ব্যাপারটাকে আপনারা গুরুত্বের সঙ্গে নেন।’

আনিসুল হক আরও বলেন, ‘দেশও আমাদের মা, ভাষাও আমাদের মা। আমাদের মাকে আমরা সবাই ভালোবাসি। আমরা এই ভালোবাসাকে শিশু-কিশোরদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই। ভাষার প্রতি, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই প্রথম আলো বর্ণমেলা করে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর বলেন, বাংলা শব্দের অনেক মজা আছে, ধ্বনির অনেক মজা আছে। যত খোঁজা হবে তত পাওয়া যাবে। ভাষাগত হীনম্মন্যতার বাইরে বাংলা ভাষার যে বড় বড় ব্যাপার আছে, সেগুলো নিয়ে শিশুদের চিন্তার সুযোগ করে দিতে হবে। দেশ যত অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে, ভাষা পরিকল্পনা যত সুন্দর করা যাবে, তত বাংলা ভাষার মর্যাদার সঙ্গে এর অধিকারও বিস্তৃত হবে।

স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং জেসমিন জামান বলেন, বাংলা ভাষাসহ বাংলাদেশের সব ভালো কিছু যেন এগিয়ে যায়, সেই চেষ্টা সবাইকে করতে হবে।

বর্ণমেলার আয়োজনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় শিশুদের ভাষার প্রতি যত্ন দেখে ভালো লাগে বলে উল্লেখ করেন শিল্পী আনিসুজ্জামান সোহেল। প্রথমবারের মতো বর্ণমেলায় আসতে পেরে ভালো লাগছে বলে জানান অভিনেত্রী সাবিলা নূর। উদ্বোধনী আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন সাইদুজ্জামান রওশন।

Facebook Comments Box

Posted ৬:২১ এএম | শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(172 বার পঠিত)
ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।