| শনিবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট | 21 বার পঠিত
পৃথিবীর খুব কাছেই সন্ধান মিলেছে বিশাল আকারের একজোড়া ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের। আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতেই অবস্থান করছে এ দুই দৈত্যাকার কৃষ্ণগহ্বর। এর মধ্যে একটি পৃথিবী থেকে মাত্র ১৫৬০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে, মহাজাগতিক হিসেবে যে দূরত্ব কিছুই নয়। তাই বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই মহাকাশ বিজ্ঞানীদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। —ইন্ডিয়া টাইমস
রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক গবেষণাপত্রে এই আবিষ্কারের কথা উঠে এসেছে। বিশেষ শক্তিশালী লেন্স ব্যবহার করে প্রায় দুই দশক ধরে গবেষণা চালিয়ে এ দুটি কৃষ্ণগহ্বর খুঁজে পাওয়া গেছে। ২০০৪ সালে ডারহাম ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যালিস্টার এজ প্রথম এই কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতি সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন। তারপর থেকে কৃষ্ণগহ্বরটি নিয়ে লাগাতার গবেষণা চলছিল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দুটি কৃষ্ণগহ্বরই সূর্যের তুলনায় ৯ থেকে ১০ গুণ বড়। অর্থাৎ সূর্য-পৃথিবীসহ গোটা সৌরজগৎ গিলে খাওয়ার ক্ষমতা রাখে তারা। কৃষ্ণগহ্বর দুটির নাম দেওয়া হয়েছে গায়া বিএইচ-১ ও গায়া বিএইচ-২।
গায়া বিএইচ-১ থেকে পৃথিবীর দূরত্ব মাত্র ১৫ আলোকবর্ষ। শুধু তাই নয়, এর আগেও বিজ্ঞানীরা একটি দৈত্যাকার কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, সেটিই এখন পর্যন্ত পৃথিবীর কাছাকাছি খুঁজে পাওয়া বৃহত্তম কৃষ্ণগহ্বর। কিন্তু গায়া বিএইচ-১ এর থেকেও তিন গুণ বড়। বিজ্ঞানীরা আরো বলেন, গায়া বিএইচ-১ কৃষ্ণগহ্বরটির ভর সূর্যের ভরের ৩ হাজার কোটি গুণ বেশি। অর্থাৎ, এই কৃষ্ণগহ্বরে এঁটে যেতে পারে প্রায় ৩ হাজার কোটি সূর্য। অন্যদিকে, গায়া বিএইচ-২ পৃথিবী থেকে অনেকটাই দূরে অবস্থান করছে। প্রায় ৩ হাজার ৮০০ আলোকবর্ষ দূরে সেন্টোরাস নক্ষত্রমণ্ডলের পাশে অবস্থান করছে এই কৃষ্ণগহ্বর। তবে যে বিষয়টি বিজ্ঞানীদের সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে তা হলো, কৃষ্ণগহ্বর দুটিকে তারা এত দিন পর শনাক্ত করতে পারলেন। গায়া বিএইচ কৃষ্ণগহ্বর দুটি খুঁজে পেতে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির গায়া মিশনের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বলছে, যখন একটি নক্ষত্র কৃষ্ণগহ্বরের গ্রাসে পড়ে তখন এটি তার পেছনে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন ছড়িয়ে দেয়, যা দেখে সহজেই একটি কৃষ্ণগহ্বরকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। এছাড়া আর কোনোভাবেই কৃষ্ণগহ্বরকে শনাক্ত করা যায় না।
বিজ্ঞানীদের আশা, ভবিষ্যতে বড় আকারের ও অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন টেলিস্কোপ দিয়ে আরো দূরের কৃষ্ণগহ্বর খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। একটি নক্ষত্রের মৃত্যুতে কৃষ্ণগহ্বরের জন্ম হয়। কৃষ্ণগহ্বরের ক্ষমতা এতটাই বেশি যে তার মধ্য থেকে আলোও বেরোতে পারে না। একটি কৃষ্ণগহ্বর ছোট-বড় অসংখ্য গ্রহ-নক্ষত্র গিলে নিতে পারে।
Posted ১০:৩৬ পিএম | শনিবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৩
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।