নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট | 132 বার পঠিত
দখলদার ইসরাইলের অবরোধের ফলে চরম ক্ষুধা যন্ত্রণায় ধুঁকছে গাজার ১০ লাখ শিশু। কারণ সেখানে বর্তমানে খাদ্য ও পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
সোমবার এক সতর্কবার্তায় এমনই তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে গাজার হাজার হাজার মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও ন্যূনতম স্যানিটেশনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এমন সংকটাপন্ন অবস্থায় গাজায় ‘শিশুদের জীবন বাঁচাতে অবিলম্বে কিছু পানি ও বিদ্যুৎ প্রবেশ করতে দিতে হবে’ বলে আহ্বান জানান দেইর আল-বালাহ থেকে ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক এদুয়ার্দ বাইগবেদার।
তিনি বলেন, ‘পানি একটি মৌলিক মানবাধিকার, যা অস্বীকার করা উচিত নয়। ইউনিসেফ ও তার সহযোগী সংস্থাগুলো সাহায্যের চেষ্টা করলেও অবরোধ পুরোপুরি না তোলা হলে বা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হলে এই সংকট কাটানো সম্ভব নয়’।
তীব্র খাদ্য সংকটে চরম অচলাবস্থা
এই সংকটের ফলে যেসব দাতব্য সংস্থা আগে হাজারো মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করত, সেগুলোও এখন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কারণ উপ্ত্যকাজুড়ে রান্নার গ্যাস ও বিশুদ্ধ পানির অভাব তীব্রতর হচ্ছে।
আল-জাজিরার তারেক আবু আজযুম দেইর আল-বালাহ থেকে জানিয়েছেন, ‘বাজারগুলোতে পণ্য ফুরিয়ে যাচ্ছে। আর যেটুকুও আছে, সেগুলোর দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে’।
গাজার এক কমিউনিটি কিচেন চালানো মোহাম্মদ আবু হামজা বলেন, ‘অসংখ্য বাস্তুচ্যুত পরিবারকে সাহায্য করা কমিউনিটি কিচেনগুলোই ছিল তাদের বেঁচে থাকার শেষ ভরসা। কিন্তু সীমান্ত বন্ধ থাকায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এখন আর খাবার নেই, গ্যাস নেই, কাঠ নেই—কিচেনগুলো চালানোর মতো কিছুই নেই। অথচ তীব্র ক্ষুধা গোটা গাজাকে গ্রাস করছে’।
পানি পরিশোধন প্লান্ট বন্ধ, ১৬ দিন ধরে কোনো সাহায্য প্রবেশ করেনি
ইসরাইলি অবরোধের মধ্যে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ফলে গাজার প্রধান পানি পরিশোধন কেন্দ্রটি দৈনিক ১৭,০০০ ঘনমিটার থেকে মাত্র ২,০০০ ঘনমিটার পানি উৎপাদন করতে পারছে।
এর পাশাপাশি গত ১৬ দিন ধরে উপত্যকায় কোনো মানবিক সাহায্য প্রবেশ করতে পারেনি। যার ফলে সেখানে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ, জ্বালানি ও রান্নার গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
মানুষ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার ও পানির জন্য অপেক্ষা করছে। অথচ বাজারের আকাশচুম্বী দামে সাধারণ মানুষের পক্ষে কোনো কিছুই কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বারবার সতর্ক করে বলেছেন, যদি দ্রুত সাহায্য প্রবেশের অনুমতি না দেওয়া হয়, তাহলে হাসপাতালগুলো ধসে পড়বে এবং পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।
তারপরও এই অমানবিক কাজ থেকে সরে আসছে না ইসরাইল। উলটো গাজায় ও পশ্চিম তীরে সামরিক অভিযান ও বিমান হামলা চালিয়ে নিরীহ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের হত্যা করে চলেছে।
Posted ৩:৩৩ পিএম | সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।