শুক্রবার ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

ডিম, ভোজ্যতেল ও চিনি আমদানিতে কর অব্যাহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   118 বার পঠিত

ডিম, ভোজ্যতেল ও চিনি আমদানিতে কর অব্যাহতি

নিত্যপণ্যের বাজারে ডিম, ভোজ্যতেল ও চিনির সরবরাহ বৃদ্ধি ও দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সে জন্য চিনি ও ডিমের ওপর আমদানি শুল্ক এবং ভোজ্যতেলের ওপর আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ের মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এ কর ছাড় দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শুল্ক কমানোর কারণে বাজারে পণ্যগুলোর দর কমতে পারে বলে জানান খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, শুল্ক কমলে আমদানি মূল্য কমে যাবে। খুচরা বাজারে এর একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে কতটুকু কমবে, তা নির্ভর করবে আমদানিকারকদের ইচ্ছার ওপর।
বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনার শীর্ষে ছিল ডিম। এখন দাম কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। গতকাল এনবিআর জানিয়েছে, ডিম আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে আমদানি পর্যায়ে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৩ টাকা ৮০ পয়সা কমবে। তাতে বাজারে ডিমের সরবরাহ বাড়বে। ভোক্তা পর্যায়ে দাম কমবে। পাশাপাশি ডিম ব্যবহারকারী বিভিন্ন শিল্প যেমন– কনফেকশনারি, বেকারি, ডিমনির্ভর খাদ্য উৎপাদক শিল্পের খরচ কমবে। বাজারে স্বস্তি ও ভারসাম্য ফিরবে। ডিম আমদানিতে এ অব্যাহতি সুবিধা আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
পরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পরিশোধিত পাম অয়েল সরবরাহের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, অপরিশোধিত পাম তেল, পরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট কমানো এবং প্রত্যাহারের ফলে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়লেও দেশের বাজারে দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। ভোজ্যতেলের কর অব্যাহতির এ সুবিধাও বলবৎ থাকবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

গত ৮ অক্টোবর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনির ওপর বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এবার নতুন করে বাজারে পরিশোধিত চিনির সরবরাহ বাড়াতে পরিশোধিত চিনির ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক প্রতি টন ৬ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৪ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিশোধিত চিনিতে আমদানি শুল্ক এবং নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমানোর ফলে পরিশোধিত চিনি আমদানি বাড়বে। তাতে বাজারে দাম কমে আসবে।
কর ছাড়ের প্রভাবে পণ্যগুলোর দর কমার আভাস দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে কোনো কোনো পণ্যের দরে নিম্নগতি দেখা গেছে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও নিউমার্কেটসহ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। যদিও পাড়া-মহল্লায় ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বিক্রি করছেন ১৬০ টাকায়। সেই হিসাবে চার দিনের ব্যবধানে ডজনে কমেছে ৩০ টাকার বেশি। ডিম ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সরকারে বিভিন্ন সংস্থার নিয়মিত অভিযান এবং খামারি ও করপোরেটদের ডিম সরবরাহ বাড়ানোর কারণে দম কমে আসছে। তাছাড়া সরকার নতুন করে আরও সাড়ে ৪ কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি দিচ্ছে। এটিও দাম কমার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে।

কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, শুল্ক কমানোর খবরে পাইকাররা তেলের দরে কিছুটা ছাড় দিচ্ছেন। তবে ভোক্তারা শুল্ক ছাড়ের সুফল পেতে কিছু দিন সময় লাগবে। চিনির দর নতুন করে বাড়েনি। বরং এক সপ্তাহে পাইকারিতে বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০-২০০ টাকার মতো কমেছে।
কারওয়ান বাজারের ইয়াসিন জেনারেল স্টোরের বিক্রয়কর্মী মনোয়ার হোসেন বলেন, সরকার শুল্ক কমানোর কারণে আমদানি মূল্য কমবে। বাজারে দামও কমার কথা। তবে আমদানিকারকরা কতটুকু কমাবে, সেটি দেখার বিষয়। কারণ পাইকারিতে না কমলে খুচরায় কমবে না।  
এদিকে মাসখানেক ধরে উত্তাপ ছড়ানো সবজির বাজারও রয়েছে কমতির দিকে। গত সপ্তাহের তুলনায় বেশ কয়েকটি সবজির দর কেজিতে কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। গতকাল প্রতি কেজি কাঁকরোল ৮০-১০০, পেঁপে ৩০-৪০, মুলা ও পটোল ৬০-৭০, ঢ্যাঁড়শ ৬০-৭০, বরবটি ১০০-১২০, গোল বেগুন ১৩০-১৪০, লম্বা বেগুন ১০০-১২০, টমেটো ১৮০-১৯০, করলা ৮০-৯০, ধুন্দল ও ঝিঙে ৬০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে বেশির ভাগ সবজির দর ১০০ টাকার বেশি ছিল। তবে শীতের আগাম সবজি শিমের দাম অনেক বেশি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। শাকের দামও নাগালের বাইরে। লাল শাকের আঁটি ২৫-৩০, লাইশাক ও পুঁইশাক ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
‘তীব্র ঝাল’ ছড়ানো কাঁচামরিচের বাজারও নামতে শুরু করেছে। গতকাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। গত বছর এ সময়ে আলুর বাজারে অস্থিরতা ছিল। এবার সেই পরিস্থিতি দেখা যায়নি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৫ টাকা দরে।
মুরগির বাজার অপরিবর্তিত। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৭০-২৮০ টাকা। গরুর মাংসের কেজি কোথাও ৬২০, কোথাও ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া চাল, ডালসহ অন্য নিত্যপণ্যের দর আগের মতোই উচ্চমূল্যে রয়েছে।

Facebook Comments Box

Posted ৫:১৯ এএম | শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।