শুক্রবার ২০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

মহার্ঘ ভাতা নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন অর্থ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ২৪ মে ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   185 বার পঠিত

মহার্ঘ ভাতা নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন অর্থ উপদেষ্টা

আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) বাজেট দিতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাস্তবমুখী ও জনকল্যাণমূলক একটি বাজেট দেওয়ার স্বপ্নের কথা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা থাকবে। তবে রেশন ও সচিবালয় ভাতার মতো সব ভাতা একসঙ্গে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এ সময় অর্থ উপদেষ্টা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বাজেটের আকার কমিয়ে আনার যৌক্তিকতা, ঘাটতি বাজেট জিডিপির চার শতাংশের মধ্যে রাখা, ব্যাংক খাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিশেষ প্রতিনিধি মিজান চৌধুরী।

সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা, রেশন ভাতা ও সচিবালয় ভাতার বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা চেষ্টা করব। তবে শোনেন সচিবালয় ভাতা, মহার্ঘ ভাতা একসঙ্গে ডাবল হয়ে যাবে। সচিবালয় ভাতা দেওয়া হলে বাইরে যারা সরকারি চাকরি করছে, তারাও বলবে আমাদের ভাতা দেওয়া হলো না কেন। আসলে বাইরেও আমাদের অনেক অফিসার আছে। সচিবালয় ভাতা না দেওয়ার এটি একটি কারণ। আবার রেশন ভাতাও চাচ্ছে চাকরিজীবীরা। তাদের (চাকরিজীবী) যৌক্তিকতা হচ্ছে রেশন সুবিধা পুলিশ ও বিজিবি পায়, আমরা কেন পাব না।

তিনি বলেন, আসল কথা হচ্ছে, এসব বাহিনী যুগ যুগ ধরে রেশন পাচ্ছে। আর তাদের ডিউটি কোনো স্বাভাবিক নয়। পুলিশ যখন ডিউটি করে দুপুর ২টার খাবার বিকাল ৪টায় খায়, রাত ১২টায় ডিউটি শেষ করে এক রুমে ৬ জন ঘুমায়। রাজারবাগ পুলিশ লাইনে গেলে সেটি দেখা যায়। ওদের খাওয়াদাওয়ার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। ফ্যামিলির সঙ্গে যোগাযোগ নেই। এসব মানবিক কারণে তাদের এই বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এটি ঠিক তারা রেশন সস্তায় পাচ্ছে। তবে সচিবালয়ের লোকজনও ভুক্তভোগী। আমরা সব দিতে পারব কি না দেখছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখছি মহার্ঘ ভাতা আছে, সেটির ব্যাপারে কিছু করা যায় কি না। সব সমহারে দিতে গেলে বহু অর্থের প্রয়োজন। এখন কর্মচারীদের রেশন দাবি বিবেচনায় আছে। তবে তারা যেভাবে চাচ্ছে, সেভাবে হবে না। আগামী এক বা দুই সপ্তাহ আছে বাজেট ঘোষণার। সেখানে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হবে।

আইএমএফ-এর ভর্তুকি কমিয়ে আনতে শর্তের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইএমএফ-এর শর্ত থাকলেও কৃষিতে ভর্তুকি কমানো হবে না। ভর্তুকি দেওয়ার কারণে পণ্যের দাম কিছুটা কমছে। আমি বলব, এরপরও কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। এখন সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি দিতে হচ্ছে এলএনজি, পেট্রোল ও ডিজেলে। এ খাতের ভর্তুকির পরিমাণ নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যের ওপর। আগামী দিনগুলোয় ভর্তুকি কমানোর প্রক্রিয়া হিসাবে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে ‘সিস্টেম লস’ কমাতে বলেছি। এছাড়া বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় কমাতে বলা হয়েছে। কারণ, বিদেশ থেকে এলএনজি (লিকুফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) বেশি মূল্যে কিনে কম মূল্যে বিক্রি করছে সরকার। আমার মতে, এসব খাতে সব সময় ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। এলএনজি ভর্তুকি কমাতে বলেছি। আসন্ন বাজেটে বকেয়া ভর্তুকি পরিশোধ করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে তা কমিয়ে আনা হবে।

তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ব্যাপারে আমি বলছি, বর্তমান যে অঙ্কের ভাতা দেওয়া হচ্ছে এর চেয়ে কিছুটা বাড়বে। বিশেষ করে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার ক্ষেত্রে। তবে এ কর্মসূচিতে প্রকৃত সুবিধাভোগী নির্বাচনে ভুল আছে। যিনি সুবিধা পাওয়ার কথা, তিনি পাচ্ছেন না। আবার যাদের না পাওয়ার কথা, তারা পাচ্ছেন। সংশ্লিষ্টদের আত্মীয়স্বজনও এ কর্মসূচিতে ঢুকে পড়ছে। ইতোমধ্যে আমরা ভুয়া সুবিধাভোগীদের শনাক্ত করেছি। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ডেটাবেজ আপডেট করতে পারলে প্রকৃত সুবিধাভোগীর সংখ্যা মিলবে। ডেটাবেজ না থাকার কারণে এ কর্মসূচিতে এক কোটির বেশি উপকারভোগীর সংখ্যা দেখানো হলেও সেখানে ২০ লাখের মতো অস্তিত্ব নেই। সেটি বাদ দিয়ে প্রকৃত উপকারভোগীর সংখ্যা নির্ধারণ করা এবং এরপর সামাজিক নিরাপত্তার বিদ্যমান কাঠামো সংস্কার করা হবে। আর ভুয়া সুবিধাভোগীদের বাদ দিতে পারলে এ খাতে ব্যয় অনেক কমে আসবে। এতে প্রকৃতদের ভাতার অঙ্কও আরও বাড়ানো যাবে। যদিও সেটি আমরা এখনো করতে পারিনি। তবে আপাতত আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমছে না। কারণ, এখন তালিকা থেকে ভুয়াদের নাম বাদ দেওয়া শুরু করলে কে কখন কোন সুবিধাভোগীর নাম কে কেটে দেবে, তখন এর দায় এসে পড়বে আমাদের ওপর। ফলে আমি মনে করছি, আপাতত তারা ভাতা পেতে থাকুক পরে সেটি ঠিক করা হবে।

বাজেটে নির্বাচনি ব্যয়ে বিশেষ বরাদ্দ থাকছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচন ব্যয়ের একটি হিসাব নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া হয়। সেটির ওপর আমরা খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি না। নির্বাচন একটি স্পর্শকাতর বিষয়। নির্বাচন কমিশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বাজেট চাইলে আমরা দিয়ে থাকি। অবশ্য আশা করছি, কমিশন অহেতুক টাকা বরাদ্দ চাইবে না। তবে জাতীয় নির্বাচনের কারণে বাজেটে একটু চাপ পড়বে। নির্বাচনের কারণে অফিসারদের বাইরে যেতে হবে। ভোটকেন্দ্রে শিক্ষকদের পাঠাতে হবে। এসব খাতে ব্যয় হবে, সেটি আমরা দেখব।

Facebook Comments Box

Posted ৫:১১ এএম | শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।