মঙ্গলবার ২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

পুতিন ইউক্রেনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করলে কী ঘটতে পারে ?

  |   শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   130 বার পঠিত

রাশিয়ার ‘আঞ্চলিক অখন্ডতা’ যদি হুমকির মুখে পড়ে ইউক্রেনে রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে, ভ্লাদিমির পুতিনের হুমকির প্রেক্ষিতে কীভাবে পশ্চিমারা এর প্রতিক্রিয়া জানাবে সেটি নিয়ে গভীর আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
‘যারা পরমাণু অস্ত্র দিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে তাদের জানা উচিত যে বাতাসও তাদের দিকে ঘুরতে পারে।’ এ কথা উল্লেখ করে পুতিন বলেছেন, ‘এটি কোন ধাপ্পাবাজি নয়।’
তবে বিশ্লেষকরা নিশ্চিত নন যে ১৯৪৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানে বোমা হামলার পর রাশিয়ান প্রেসিডেন্টই প্রথম পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে আগ্রহী হবেন।
রাশিয়া পরমাণু অস্ত্রের হামলা চালালে যে সম্ভাব্য পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে সে বিষয়ে এএফপি বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে।
রাশিয়ান পরমাণু আক্রমণ দেখতে কেমন হবে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, মস্কো সম্ভবত এক বা একাধিক ‘কৌশলগত’ বা যুদ্ধক্ষেত্রে পরমাণু বোমা ব্যবহার করবে।
এগুলো হল ছোট অস্ত্র, সবচেয়ে বড় মার্কিন কৌশলগত ওয়ারহেডের ১.২ মেগাটন অথবা ১৯৬১ সালে রাশিয়া যে ৫৮ মেগাটন বোমা পরীক্ষা করেছিল তার তুলনায় এই পরমাণু বোমাগুলো ০.৩ কিলোটন থেকে ১০০ কিলোটন বিস্ফোরক শক্তির হবে।
কৌশলগত বোমাগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে সীমিত প্রভাব ফেলতে ডিজাইন করা হয়েছে। কৌশলগত আরো শক্তিশালী পরমাণু অস্ত্র সর্বাত্মক যুদ্ধ জয়ের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
কিন্তু ‘ছোট’ এবং ‘সীমিত’ আপেক্ষিক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হিরোশিমায় ১৯৪৫ সালে যে পরমাণু বোমা ফেলেছিল তা ধ্বংসাত্মক প্রভাব ছিল মাত্র ১৫ কিলোটন।
মস্কো কি লক্ষ্যবস্তু করবে?
বিশ্লেষকরা বলছেন যে, ইউক্রেনে কৌশলগত পরমাণু বোমা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে রাশিয়ার লক্ষ্য হবে আত্মসমর্পণ বা আলোচনায় বশ্যতা স্বীকার করা এবং দেশটির পশ্চিমা সমর্থকদের বিভক্ত করা।
ওয়াশিংটনে সিএসআইএস আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সামরিক বিশেষজ্ঞ মার্ক ক্যানসিয়ান বলেছেন, রাশিয়া সম্ভবত সামনের সারিতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না।
২০ মাইল (৩২ কিলোমিটার) অঞ্চল দখল করতে ২০টি ছোট পরমাণু বোমার প্রয়োজন হতে পারে, এটি বিশাল পরমাণু ঝুঁকির মধ্যে ছোট লাভ।
ক্যানসিয়ান বলেন, ‘শুধু একটি ব্যবহার করাই যথেষ্ট হবে না।’
মস্কো এর পরিবর্তে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠাতে পারে এবং পানির উপর একটি পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উল্লেখযোগ্য হতাহতের ঘটনা এড়াতে পারে, অথবা একটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালস তৈরি করতে ইউক্রেনের আকাশের অনেক উচ্চতায় একটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি অচল করে দিতে পারে।
অথবা পুতিন বৃহত্তর ধ্বংস এবং মৃত্যু বেছে নিতে পারেন: ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করা, বা কিয়েভের মতো একটি নগরীর কেন্দ্রস্থলে আঘাত করা, ব্যাপক হতাহতের সৃষ্টি করা এবং সম্ভবত দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে হত্যা করা।
হোয়াইট হাউসের সাবেক পরমাণু নীতি বিশেষজ্ঞ জন উলফস্টাল শুক্রবার সাবস্ট্যাকে লিখেছেন,এই ধরনের পরিস্থিতি ‘সম্ভবত পুতিনের বিরুদ্ধে ন্যাটো জোট এবং বিশ্বব্যাপী ঐকমত্যকে বিভক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হবে’। তবে ‘এটি সফল হবে কি-না তা অস্পষ্ট, এবং সহজেই সংকল্প হতাশা হিসাবে দেখা যেতে পারে।’
পশ্চিমাদের কি পরমাণু অস্ত্র দিয়ে জবাব দেওয়া উচিত?
পশ্চিমারা কৌশলগত পরমাণু হামলার প্রতিক্রিয়া কীভাবে দেবে তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে এবং পছন্দগুলো জটিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো একটি অন্তর্নিহিত পরমাণু হুমকির সামনে দুর্বলতা দেখাতে চায় না।
কিন্তু ইউক্রেন ন্যাটো সদস্য না হলেও তারা ইউক্রেনের যুদ্ধ এড়াতে চাইবে না, এতে যুদ্ধ আরও বিস্তৃত হবে এবং বিধ্বংসী বৈশ্বিক পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশ্চিমের কাছে প্রতিক্রিয়া জানানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না এবং ন্যাটোর কাছ থেকে এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে একটি গোষ্ঠী হিসেবে প্রতিক্রিয়া আসা উচিত।
উলফস্টাল বলেন যে কোন প্রতিক্রিয়ায়, ‘পুতিনের সামরিক পরিস্থিতি এই ধরনের একটি স্ট্রাইকের মতো উন্নত হয়েছে কি-না এবং তার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং ব্যক্তিগত অবস্থানের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি-না উভয় নিশ্চিত হওয়া উচিত।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো দেশগুলোতে তার নিজস্ব কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রগুলোর প্রায় ১০০টি অবস্থান করেছে এবং রাশিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
আটলান্টিক কাউন্সিলের ম্যাথিউ ক্রোয়েনিগের মতে, এটি সংকল্প প্রদর্শন করবে এবং মস্কোকে তার কর্মের বিপদের কথা মনে করিয়ে দেবে।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি রাশিয়ান পরমাণু প্রতিশোধকেও উস্কে দিতে পারে, বৃহত্তর পরমাণু বিনিময় এবং আরও মানবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।’
আরেকটি ঝুঁকি হল যে কিছু ন্যাটো সদস্যরা পরমাণু প্রতিক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করতে পারে, যাতে জোটকে দুর্বল করার পুতিনের লক্ষ্য পূরণ হতে পারে।

সূত্র-বাসস

Facebook Comments Box

Posted ৪:৪৯ পিএম | শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।