| বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 113 বার পঠিত
পাকিস্তান ভাসছে বন্যায়। দেশটির ভয়াবহ বন্যা ভেঙে দিয়েছে অতীতের সব রেকর্ড-সীমা। দেশটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এখনো পানির নিচে। মানুষের পাশাপাশি ভেসে গেছে হাজার হাজার গৃহপালিত পশুপাখি। বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়ে গৃহহীন হয়েছে লাখো মানুষ। সিন্ধু প্রদেশে মানুষজন বাধ্য হয়েছে কবরস্থানে আশ্রয় নিতে। হঠাৎ করে কী কারণে দেশটি ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ল তার বিশ্লেষণ করে জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকিস্তানের বন্যার পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। তবে তা যদি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই হয় তবে সেটি বিশ্বের অন্য অঞ্চলের জন্যও উদ্বেগজনক। কারণ জলবায়ু মডেলগুলোর মধ্যে লা নিনা দ্বারা প্রভাবিত অঞ্চলগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রসারিত হচ্ছে।
ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের উইলফ্রান মাউফুমা ওকিয়ার বরাতে ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লা নিনার সীমানা এরই মধ্যে প্রসারিত হতে শুরু করেছে। এভাবে বাড়লে পাকিস্তানের মতো পরিণতি আরও অনেক দেশেরই হতে পারে।
বছরের প্রথম দিকে, অস্ট্রেলিয়ায় নজিরবিহীন বৃষ্টি হয়েছে এবং গরমেও হাঁসফাঁস অবস্থা হয় সেখানকার মানুষের। গত মে মাসে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের ফলে ব্রাজিলে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এতে ১০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। গ্রীষ্মের মধ্যে পূর্ব আফ্রিকা চতুর্থ বছরের মতো খরার কবলে পড়ে। এরই মধ্যে ইউরোপ জুড়ে শহরগুলোতে তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে গেছে এবং পুরো মহাদেশে নদীগুলো ৫০০ বছরের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি শুকিয়ে গেছে। চীনের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে ৭০ দিনের মতো তাপমাত্রা নিয়মিতভাবে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। দেশটির বৃহত্তম দুটি লেকের পানি সর্বনিম্ন স্তরে নেমেছে।
লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজের জলবায়ু বিজ্ঞানী ক্যারোলিন ওয়েনরাইট বলেছেন, প্রতিটি ঘটনাই জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার সংমিশ্রণ। তবে যুক্তরাজ্যের এক্সেটার ইউনিভার্সিটির ম্যাট কলিন্স বলেছেন, এ বছর তিন ধরনের প্রভাব কেবল ব্যাখ্যাতীত নয়, তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যা ঘটবে তা জলবায়ু মডেলের পরামর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ইকোনমিস্ট বলছে, পাকিস্তানে যা ঘটছে তা একাধিক কারণের বিপর্যয়মূলক সংমিশ্রণ হতে পারে। বাতাসে বেশি আর্দ্রতা, যা আরও বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং বন্যার ঝুঁকি বাড়ায়। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিষয়টি আরও পরোক্ষভাবে শনাক্ত করা যেতে পারে, কারণ এ বছরের শুরুতে হিমালয়ে উচ্চ তাপমাত্রার ফলে হিমবাহের গলে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করছে যাতে নদীগুলোর প্রবাহ বেড়ে যেতে পারে।
জলবায়ু মডেল তৈরি করার একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন প্রজেক্ট পাকিস্তানে বন্যার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কারণ জানতে গত সপ্তাহে কাজ শুরু করেছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাদের কাছ থেকে একটি মূল্যায়ন আশা করা যায়। তখন পাকিস্তানের বন্যা বিশ্বের জন্য কী আগাম বার্তা দেয় জানা যাবে।
Posted ৫:৩০ পিএম | বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।