| শুক্রবার, ১৯ অগাস্ট ২০২২ | প্রিন্ট | 117 বার পঠিত
চলতি বছরের শুরুতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে থাকে পশ্চিমারা। সামরিক ব্যয়সংস্থান করতে চাপ বাড়ে অর্থনীতিতে। মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ পড়ে চরম সংকটে। চিন্তার ভাঁজ পড়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কপালেও। তবে রাশিয়ার কালো সোনাখ্যাত জ্বালানি তেলের ওপর ভর করে সে সংকট কাটিয়ে ওঠার আশা দেখছেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথির বরাতে বলেছে, এ যুদ্ধের মধ্যেও চলতি বছর তার আগের বছরের তুলনায় দেশটির তেল রপ্তানি আয় ৩৮ শতাংশ বাড়তে পারে। মুনাফায় উল্লম্ফনের এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর জ্বালানি রপ্তানি থেকে রাশিয়ার আয় বেড়ে ৩৩ হাজার ৭৫০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। সম্ভাব্য হিসাব ধরে মন্ত্রণালয়ের নথিতে বলা হয়েছে, আগামী বছর জ্বালানি রপ্তানি আয় ২৫ হাজার ৫৮০ কোটি ডলারে নেমে আসতে পারে। তবে এ আয়ের পরিমাণও গত বছর ২৪ হাজার ৪২০ কোটি ডলারের চেয়ে বেশি। নথিতে ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত তেল উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এ বছর গ্যাসের রপ্তানি মূল্য দ্বিগুণ বেড়ে প্রতি ১ হাজার ঘনমিটার ৭৩০ ডলারে গিয়ে ঠেকবে বলেও পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে। এরপর দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং পণ্য আমদানি বন্ধ করে দেয় অনেক দেশ। এ পরিস্থিতিতে ধীরে ধীরে রাশিয়া তেল উৎপাদন বাড়াতে শুরু করেছে। এশিয়ার ক্রেতারা তেল কেনা বাড়িয়েছে। রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রম চীনে গ্যাস রপ্তানি বাড়ানোর কথা জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেনি। রাশিয়ার গ্যাসের বড় বাজার ইউরোপ। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে নিষেধাজ্ঞা ও রুবলে মূল্য পরিশোধ বিতর্কে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানি কমেছে। দেশটি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের তেল রপ্তানি করেছে।
রয়টার্স অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে নথি হাতে পেয়েছে, তাতে বোঝা যায়, মস্কো শুরুর দিকে যে আশঙ্কা করেছিল, তার চেয়ে বরং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছে রাশিয়া। এছাড়া ধারণার চেয়ে দেশটির অর্থনীতি কম সংকুচিত হয়েছে। একটা পর্যায়ে মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছিল, দেশটির অর্থনীতি ১২ শতাংশের বেশি সংকুচিত হতে পারে, যা হতে পারত সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সবচেয়ে মারাত্মক। তবে তারা এখন মনে করছে, চলতি বছর মোট দেশজ উৎপাদন ৪ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।
রয়টার্স বলছে, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ভালোভাবে চাপ সামলাতে পারায় রাশিয়া যুদ্ধের ব্যয়সংস্থানের পাশাপাশি মন্দায় পড়া অর্থনীতি এবং মূল্যস্ফীতির কারণে যখন জীবনযাত্রার মান কমছে, তখন বেতন ও পেনশন বাড়াতে এ অর্থ সহায়তা করবে পুতিন সরকারকে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে সার্বিক অর্থনীতির যে ক্ষতি হচ্ছে, জ্বালানি রপ্তানি আয়ের উল্লম্ফনে কেবল তার আংশিকটাই কাটিয়ে ওঠা যাবে। জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট জেনিস ক্লুগা বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতিতে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব খুবই গভীর। গাড়িশিল্পের মতো কিছু খাতে এর প্রভাব বিপর্যয়কর। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি ও আর্থিক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো সমন্বয় করতে আরও সময় লাগবে রাশিয়ার।
Posted ৪:৪৯ পিএম | শুক্রবার, ১৯ অগাস্ট ২০২২
| admin
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।