শুক্রবার ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

আইএমএফের সতর্কতা: বাড়ছে ঋণের আবেদন

  |   রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২   |   প্রিন্ট   |   149 বার পঠিত

ডলারের শক্তিবৃদ্ধিতে কিস্তি পরিশোধ যখন কঠিনতর হয়ে উঠেছে, তখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ঋণ সহায়তার জন্য আবেদন করছে একের পর এক দেশ। এ অবস্থায় নিম্ন আয়ের পাশাপাশি মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য দ্রুত ও আরও বিস্তৃত পরিসরে অর্থ সহায়তার ব্যবস্থা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির উপ-প্রধান। গত শুক্রবার ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইএমএফের ফার্স্ট ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর গীতা গোপীনাথ বলেন, প্রায় ৬০ শতাংশ নিম্ন আয়ের দেশ উচ্চঝুঁকিতে অথবা এরই মধ্যে ঋণ সংকটে রয়েছে। আর সংকটের পর্যায়ে রয়েছে অন্তত ২০টি উদীয়মান বাজার। আমরা সম্ভবত আরও দেশের জন্য ঋণের ছাড়ের প্রয়োজনীয়তা দেখতে পাব।

বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো কয়েক ধাপে সুদের হার বাড়িয়েছে, যার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের আগ্রাসী পদক্ষেপের। এতে বিভিন্ন মুদ্রার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের দর বাড়ে ব্যাপক হারে। এর মধ্যেই উন্নয়নশীল দেশগুলো দুর্দশা সংক্রান্ত ঋণের পাহাড় তৈরি করে, যা খেলাপি ঋণের রেকর্ড গড়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে গীতা গোপীনাথ বলেন, ডলারের তুলনায় উদীয়মান বাজারগুলোর মুদ্রার অবমূল্যায়নে মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এই মুহূর্তে এটি তাদের আর্থিক নীতিকে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং করে তুলছে। এমন অনেক দেশ রয়েছে যারা ডলারে ঋণ নিয়েছে। এটি তাদের দেনা শোধ করাকে আরও কঠিন করে দিয়েছে। এছাড়া সুদের হার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো থেকে তাদের বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছে। এতে দেশগুলোকে যেমন নতুন করে ঋণ আবেদন করতে হচ্ছে, আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এই সংকটময় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে।

কভিড-১৯ মহামারী চলাকালে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর ঋণ পরিশোধ স্থগিত অথবা পুনর্গঠনের জন্য ‘কমন ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করে গ্রুপ অব ২০ বা জি২০। এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল বেশিরভাগ ধনী ঋণদাতা দেশ। কিন্তু সেই কর্মসূচির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। এরপরে বৈশ্বিক ঋণের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই সংকট কাটানোর বিষয়ে আইএমএফ উপ-প্রধান বলেন, খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন এবং ফ্রেমওয়ার্কের পরিধি মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেও প্রসারিত করতে হবে।

অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এখনো মুখ খোলেনি ধনী ঋণদাতা দেশগুলো। ১৯৭৯ সালেও প্রায় একই রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল বিশ্বে। তখন সুদের হার বাড়ানোর ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে একের পর এক দেশ ঋণের আবেদন করতে থাকে। তখনো যেমন অর্থনৈতিক সংকট থেকে ব্যাপক বেকারত্ব দেখা দিয়েছিল, এবারও একই পথে হাঁটছে দেশগুলো। এমন পরিস্থিতিকে অর্থনীতিবিদরা মুদ্রাস্ফীতির চড়া অবস্থা হিসেবে উল্লেখ করেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মুদ্রাস্ফীতিতে লাগাম টানতে ব্যাংকের সুদের হার আরও ছয় থেকে সাত শতাংশ বাড়ানো যেতে পারে।

গীতা গোপীনাথের মতে, মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে ভূমিকা পালন করতে হবে। ব্যাংকগুলো যদি তাদের অর্থনৈতিক নীতি-নির্ধারণে চটজলদি ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে মুদ্রাস্ফীতি আরও বেড়ে যেতে পারে। অবশ্য পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশ ইতিমধ্যেই ব্যাংকের সূদের হার বাড়িয়েছে। কিন্তু তাতে দেশীয় অর্থনীতির খুব একটা সুবিধা হয়নি। উল্টো শ্রীলঙ্কার মত দেশে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তন ও বিক্ষোভের মত ঘটনার জন্ম হয়েছে। শ্রীলঙ্কার বাইরে এশিয়ায় পাকিস্তানের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।

Facebook Comments Box

Posted ৬:৩৩ পিএম | রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২

|

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

ইউএসএ থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ এবং তথ্যে আপনার প্রয়োজন মেটাতে

NSM Moyeenul Hasan Sajal

Editor & Publisher
Phone: +1(347)6598410
Email: protidinkar@gmail.com, editor@protidinkar.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।